OrdinaryITPostAd

ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ব্যায়াম করার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেল পরের মাধ্যমে আপনি ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ব্যায়াম করার নিয়ম সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়া আপনি আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে সবচেয়ে উপযোগী ব্যায়াম কোনটি সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন। ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে। তাই তাই আমাদের সকলের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।

ভূমিকা

একটি প্রবাদ রয়েছে যে স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্যই হচ্ছে মানুষের মৌলিক সম্পদ। রোগ জীবাণুমুক্ত স্বাস্থ্য মানুষের সফলতা ও সুখের প্রধান উৎস। আমরা সকলেই সুস্থ থাকতে চাই। সুস্থ দেহ ও সুন্দর মনের জন্য প্রয়োজন ব্যায়াম। এটি আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ব্যায়াম ছাড়া একজন মানুষ কখনো সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারেনা। এটি আমাদেরকে শক্তিশালী, ক্ষমতাবান ও কর্মঠ হতে সাহায্য করে। তবে শুধু ব্যায়াম করলেই হবে না। নিয়ম মেনে সঠিক সময়ে ব্যায়াম করতে হবে। সেই সাথে ব্যায়াম করার পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।


অনেকেই ব্যায়াম করেন আবার ইচ্ছামত খাবারও খান। ভাবছেন ব্যায়াম করলে খাবারের সব শক্তি হাওয়াই মিলিয়ে যাবে। কিন্তু ব্যাপারটা আসলে তা নয়। ব্যায়াম করার পাশাপাশি খাবারও খেতে হবে নিয়ম করে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা নাস্তা করার পর ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন খাওয়া বেশি না হয়ে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সকালে ব্যায়াম করলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগের ঝুঁকি কমায়।

ব্যায়াম করার সঠিক বয়স

শরীরকে ফিট রাখার জন্য অনেকেই ব্যায়াম করে থাকেন। কিন্তু সব বয়সের সব ধরনের ব্যায়াম উপযোগী নয়। একজন ৬ থেকে ১০ বছরের বাচ্চাকে কখনই ভার উত্তোলন করতে দেওয়া উচিত নয়। কেননা এতে তার দৈহিক কাঠামোর বিকৃতি করতে পারে। তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে।

তবে তাকে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ ও দৌড়ঝাপ করতে দেওয়া উচিত। এতে করে তার শরীর সুস্থ থাকবে। জিমে ব্যায়াম করার আদর্শ বয়স হল ১৬ থেকে ১৮ বছর। এই বয়সে একটি জিমে থাকা সকল সুযোগ সুবিধা সে ভোগ করতে পারবে।


এই বয়সে শরীরচর্চা পুরুষদের শক্তিশালী, পেশিবহুল ও সুঠাম দেহের অধিকারী করে তোলে এবং মহিলাদের সুঠাম, পাতলা ও স্বাস্থ্যকর কাঠামো দান করতে সাহায্য করে। এই সময় তারা ভার উত্তোলন থেকে শুরু করে সকল ধরনের ব্যায়ামের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারে।

সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম

একজন ব্যক্তিকে ব্যায়াম করতে হলে তাকে সর্বপ্রথম জিমে ভর্তি হতে হয়। আর এর জন্য বেশ কিছু টাকার প্রয়োজন। আবার সেইসব ব্যায়াম করতে অনেক ধরনের জটিলতা সম্মুখীনও হতে হয়। তাই যদি সবচেয়ে উপকারী ব্যায়ামের কথা বলা যায় তবে দুইটি ব্যায়ামের কথা বলা যেতে পারে।

এর একটি হলো দৌড়ানো। এর জন্য শুধুমাত্র এক জোড়া জুতা প্রয়োজন। জুতা পায়ে দিয়ে নিয়ম করে দৌড়ানোর অভ্যাস গড়ে তুললেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। সেইসাথে দৌড়ানোর ফলে হাত পা ও শরীরের ফিটনেস ঠিক থাকবে। দৌড়ানোর ফলে অনেকগুলো উপকার পাওয়া যাবে। যেমন
  • প্রাণশক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
  • প্রতিদিন নিয়মিত দৌড়ালে হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকবে।
  • যাদের সারাদিন অফিসে বসে কাজ করতে হয় তাদের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা দৌড়ানোর কারণে শরীরের প্রতিটি পেশি সচল হয়। সেই সাথে বসে কাজ করার ফলে হাত-পায়ের যেসব সন্ধিস্থলে ব্যথা হয়েছে সেগুলো উপশম করতেও সাহায্য করে।
  • দিনের শুরুতে দৌড়ানোর ফলে সারাদিন উদ্যমের সাথে কাজ করতে পারবে।
  • নিয়মিত দৌড়ানোর ফলে ঘুম ভালো হবে।
অন্য আরেকটি ব্যায়াম হলো সাঁতার। এর জন্য শুধু প্রয়োজন নদী বা পুকুর। আপনি যদি সাঁতার জেনে থাকেন তবে প্রতিদিন যদি ৩০ মিনিট সাঁতার কাটেন তবে শরীরের সকল ধরনের ব্যায়ামের চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে। কেননা সাঁতার কাটার সময় শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সচল থাকে। প্রতিদিন নিয়মিত সাঁতার কাটলে হাত ও পায়ের পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা কি ভালো

সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কেননা খালি পেটে ব্যায়াম করলে শক্তি খরচ হয় এবং এতে চর্বি কেটে যায়। সেই সাথে খালি পেটে ব্যায়াম করা পেশির জন্যও উপকারী। এই সময় ব্যায়ামের ফলে বেশি শক্তিশালী হয়। অনেকে খালি পেটে ব্যায়াম করার জন্য খেলাধুলাকে বেছে নিয়ে থাকেন।


তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘন্টাখানেক খেলাধুলা করেন। এটিও একটি ভাল ব্যায়াম। কেননা এ সময় প্রচুর শক্তি প্রয়োজন হয়। আর সেই শক্তির যোগান দিতে চর্বি ব্যয় হয়। এতে করে শরীরের চর্বি কমে ও শরীর ফিট থাকে। যদি খালি পেটে ব্যায়াম করা না হতো তবে শরীর শেষ শক্তি গ্রহনকৃত খাদ্য থেকে গ্রহণ করতো।

এর ফলে শরীরের চর্বি কমতো না। এতে করে শরীর সম্পূর্ণরূপে ফিট থাকত না। তাই সকালে খালি পেটে ব্যায়াম করা স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক উপকারী। সেই সাথে সকালে ব্যায়াম করার ফলে শরীরকে ফিট রাখা সম্ভব।

সকালে ব্যায়াম করার নিয়ম

আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি সকালে ব্যায়াম করলে আমাদের শরীর ফিট থাকে এবং সেই সাথে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে। তবে সকালে ব্যায়াম করতে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাহলে চলুন সকালে ব্যায়াম করার নিয়মগুলো জেনে নিই।
  • আপনার ব্যায়াম করার মূল উদ্দেশ্য যদি হয় চর্বি কমানো তবে সে ক্ষেত্রে আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠার কিছুক্ষণ পর দৌড়ানো বা খেলাধুলা করতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ/চর্বি ঝরে যাবে। এতে করে আপনার ওজন কমে যাবে এবং সেই সাথে শরীর ফিট থাকবে।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে ভারী কোন ব্যায়াম করা উচিত নয়। কারণ সারারাত শরীর কর্মক্ষম থাকায় এই সময় শরীরে এনার্জির ঘাটতি দেখা দেয়। এই সময় যদি কিছু না খেয়ে ভারী ব্যায়াম করা হয় তবে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা নাস্তা করার পর ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন খাওয়া বেশি না হয়ে যায়।
  • খুব সকালে ব্যায়াম করার ইচ্ছা থাকলে আগের দিন তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যেতে হবে। শরীরের পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া পর্যন্ত ব্যায়াম করা উচিত নয়। কেননা পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কোন কিছুই ঠিক মত হবে না।

সকালের ব্যায়াম এর উপকারিতা

একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে ব্যায়াম কখন করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যাবে?

বিশেষজ্ঞদের মতে সকালে ব্যায়াম করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। কেননা এই সময় শরীরের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সবচেয়ে বেশি সজাগ থাকে। সকালে ব্যায়াম করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা গুলো নিম্নরূপঃ
  • আপনার ব্যায়াম করার মূল উদ্দেশ্য যদি হয় চর্বি কমানো তবে সে ক্ষেত্রে আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠার কিছুক্ষণ পর দৌড়ানো বা খেলাধুলা করতে পারেন। এতে করে আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ/চর্বি ঝরে যাবে।এতে করে আপনার ওজন কমে যাবে এবং সেই সাথে শরীর ফিট থাকবে।
  • সকালবেলা ব্যায়াম করার ফলে দেহ থেকে এন্ডোরফিল নামের এক ধরনের হরমোনের নিঃসরণ ঘটে। আর এই হরমোন মস্তিষ্কে একটি ইতিবাচক অনুভূতি সৃষ্টি করে। যার ফলে মন ভালো থাকে। আর এই কারণে সকালে ব্যায়াম করার ফলে সারাদিন মন ভালো থাকে।
  • যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তারা সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করুন। কেননা সকালে ব্যায়াম করার ফলে রাতে আপনার ঘুম ভালো হবে।
  • বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সকালে ব্যায়াম করলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগের ঝুঁকি কমায়।
  • সকালে ব্যায়াম করার ফলে শরীরের পেশিগুলো শক্তিশালী ও মজবুত হয়।
  • সকালের বাতাসে বিশুদ্ধ অক্সিজেন পাওয়া যায়। এর ফলে সকালে ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • সকালে ব্যায়াম করার ফলে যে ঘাম হয় তার কারণে সারা রাতে জমে থাকা শরীরের দূষিত বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে বাইরে বের হয়ে যায়। এতে করে শরীর সুস্থ থাকে।
  • সকালে ব্যায়াম করার ফলে সকালের বাতাসের বিশুদ্ধ অক্সিজেন হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে। যার কারণে হৃদপিন্ডের বিভিন্ন রোগের আশঙ্কা কমে যায়।
  • সকালে ব্যায়াম করার ফলে শরীর সারাদিন কাজ করার শক্তি পায়।
  • যে কোন কাজের প্রতি ফোকাস করা সহজ হয়। কেননা সকালে ব্যায়াম করার ফলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে।
  • সকালে খালি পেটে/হালকা নাস্তা করে ব্যায়াম করার ফলে ক্ষুধার হরমোন নিয়ন্ত্রণে রেখে ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর কারণে শরীর অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে।

সকালে ব্যায়াম করার আগে কি খাওয়া উচিত

একজন মানুষের শরীরকে ফিট রাখতে ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সহিকে ফিট রাখতে অবশ্যই নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সেই সাথে ব্যায়াম করার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীর সুস্থ থাকে।


অন্যান্য সময়ের তুলনায় সকালে ব্যায়াম করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। আমরা ইতিমধ্যেই সকালে ব্যায়াম করার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানব সকালে ব্যায়াম করার আগে কি খাওয়া উচিত।
  • সকালে ব্যায়াম করার ৩০ মিনিট পূর্বে একটি মাঝারি আকারের কলা খেতে পারেন। কেননা কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও পটাশিয়াম। যা সহজে হজম হয় এবং শরীরে এনার্জি যোগান দেয়। কলাতে থাকা পটাশিয়াম শরীরে বেশিক্ষণ জমা থাকে না। খুব সহজেটি শরীরের সাথে মিশে শরীরকে পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে।
  • এছাড়াও সকালে ব্যায়াম করার পূর্বে আপনি খেতে পারেন ওটস। এটি আপনাকে এনার্জি জগতে দারুন ভাবে সাহায্য করবে। ওটসে থাকা ফাইভার রক্তে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করবে। সেই কারণে সকালে ব্যায়াম করার পূর্বে ওটসের গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম।
  • ব্যায়াম করার আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টা পূর্বে বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে পারেন। এতে করে শরীরে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে আপেল হল সবচেয়ে আদর্শ ফল। আপেল আপনাকে সকল ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রদান করে।
  • ডায়াবেটিকস রোগীরা ভারী খাবারের পর ব্যায়াম শুরু করবেন। তবে আপনি যদি সুস্থ থাকেন তবে ভারী খাবার গ্রহণ করার দুই থেকে তিন ঘন্টা পর ব্যায়াম শুরু করা উচিত। এতে করে শরীরের শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে।
  • সকালে ব্যায়াম করার পূর্বে আপনি এক পিস ব্রাউন ব্রেড, ডিম ও মধু খেতে পারেন। কেননা ব্রেডে থাকা কার্বোহাইড্রেট আপনাকে এনার্জি যোগাবে। সেই সঙ্গে ডিম ও মধু আপনার শরীরের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করবে।
  • এছাড়া আপনি চাইলে সকালে ফলের সাথে টক দই খেতে পারেন। কারণ ফলে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট এবং টক দই রয়েছে প্রোটিন। ঘুম থেকে উঠে ব্যায়াম করার ৩০ মিনিট পূর্বে এই খাবারটা খেলে দারুন উপকার পাবেন।

ঘরে ব্যায়াম করার নিয়ম

শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। অনেকে মনে করেন শুধুমাত্র জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে হয়। তাদের এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কেননা বাড়িতেও ব্যায়াম করা যেতে পারে। বাড়িতে সাধারণত ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা হয়ে থাকে। এতে অনেক সরঞ্জাম বা জায়গার প্রয়োজন হয় না।

ঘরে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় যেখানে মানুষ জনের যাতায়াত কম সেটি হলো ব্যায়াম করার উপযুক্ত জায়গা। কেননা এক্ষেত্রে ব্যায়াম করার সময় মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটবে না। ঘরে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা নিচে দেওয়া হলো।
  • পছন্দমত ব্যায়াম করার স্থান নির্বাচনঃ আপনার বাড়ির যে কোন জায়গা ব্যায়াম করার স্থান হিসেবে নির্বাচন করুন। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেটি যেন আপনি যেখানে টিভি দেখেন বা খাবার খান সেই জায়গা না হয়। কারণ এটি আপনার কাজের প্রতি মনোযোগ নষ্ট করবে।
  • ব্যায়াম করার নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানঃ আপনি যদি প্রতিদিন ব্যায়াম করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে ব্যায়াম করার জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পড়তে হবে। কেননা যদি সাধারণ পোশাকে ব্যায়াম করেন তবে কিছুদিনের মধ্যে ব্যায়াম করার প্রতি আপনার আকর্ষণ কমে যাবে।
  • ব্যায়াম করার সরঞ্জাম নিয়ে চিন্তা না করাঃ বাড়িতে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনাকে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ গুলো করতে হবে। এতে তেমন কোনো সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র একটি মাদুর হলেই চলবে। যেখানে আপনি ব্যায়াম করবেন। তাই ব্যায়াম করার বাড়তি সরঞ্জাম নিয়ে চিন্তা না করে নিয়মিত ব্যায়াম করে যান।
  • আপনি ব্যায়াম করতে প্রস্তুত কিনা সেটি নিশ্চিত করুনঃ আপনি যদি ব্যায়াম করতে প্রস্তুত না থাকেন তাহলে ব্যায়াম করার প্রতি মনোযোগ আসবেনা। সর্বদা ব্যায়াম করার পূর্বে কিছুক্ষণ ওয়ার্ম-আপ করেন। এতে করে আপনার ব্যায়াম করার প্রতি মনোযোগ সৃষ্টি হবে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত এক্সিডেন্ট থেকে বেঁচে থাকবেন।
  • সকালে ব্যায়াম করুনঃ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে হালকা নাস্তা করে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। কেননা এই সময় মনোযোগ ভালো থাকে এবং এই সময় ব্যায়াম করার ফলে শরীরের চর্বি তাড়াতাড়ি ঝরে যায়। এছাড়াও সকালে ব্যায়াম করলে সারাদিন মন ভালো থাকে।
  • বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুনঃ যেখানে ব্যায়াম করবেন খেয়াল রাখবেন সেখানে যেন আলো বাতাস ঠিকমতো চলাচল করতে পারে। কেননা এতে করে আপনার অতিরিক্ত গরম লাগবে না এবং ব্যায়াম করতে বোরিং ফিল হবে না।
  • শরীরের উন্নতি ট্র্যাক করতে একটি ফিটনেস জার্নাল রাখুনঃ ব্যায়াম করার ফলে আপনার শরীর কতটুকু ফিট হচ্ছে সেই হিসাব রাখা বুদ্ধিমানের কাজ। এতে করে আপনার ব্যায়ামের প্রতি মনোযোগ আরো বাড়বে এবং আপনি ব্যায়াম করার ফলে আপনার শরীরের অগ্রগতি বা অবনতি হচ্ছে কিনা তা সহজেই বুঝতে পারবেন।
  • ব্যায়াম কে এড়িয়ে না যাওয়াঃ আপনি কখনোই একটানা দুদিন ব্যায়াম কে এড়িয়ে চলবেন না। কেননা এটি করলে আপনার ব্যায়ামের প্রতি মনোযোগ হারাবে। তৃতীয় দিন ব্যায়াম করতে আর ভালো লাগবে না।

ব্যায়াম করার উপকারিতা

আপনি নিশ্চয়ই হয়তো শুনে থাকবেন "ফেলে রাখলে মরিচা পরে"। মানুষের শরীরের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। কেননা শরীরকে যত ফেলে রাখবেন এটি তত বেশি খারাপ হতে থাকবে। তাই শরীরকে ঠিক রাখার জন্য ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। তাহলে চলুন ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ বর্তমান পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যার কোন রোগ নেই। তাই মানুষের সাথে আমাদের চেষ্টা করতে হবে যত সম্ভব রোগমুক্ত থাকা। আর এই কাজে সাহায্য করতে পারে ব্যায়াম। কেননা ব্যায়াম শরীরকে ফিট ও স্বাস্থ্যবান রাখে। আর ফিট ও স্বাস্থ্যবান শরীরে রোগ বাসা বাঁধতে পারে না। এছাড়াও ব্যায়াম করার ফলে হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানারকম রোগের ঝুঁকি কমায়।
  • মনকে চাঙ্গা করেঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে তা মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। কারণ ব্যায়াম করার ফলে নানারকম রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। যা মানসিক প্রশান্তি দিয়ে থাকে। বিষণ্ণতাকে দূর করে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ ব্যায়াম করার ফলে শরীরে জমে থাকা মেদ ও বাড়তি ওজন খুব সহজেই ঝরানো যায়। কেননা ব্যায়াম করার ফলে ক্যালরি খরচ হয়। এ কারণে বাড়তি মেদ ঝরে গিয়ে শরীর সুন্দর ও আকর্ষণীয় হয়।
  • সহ্য শক্তি বাড়ায়ঃ আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার সহ্য শক্তি বৃদ্ধি পাবে। নিয়মিত ব্যায়াম করার ফলে আপনি আগে যেমন পরিশ্রম করতে পারতেন এখন তার চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে পারবেন।
  • শক্তি বাড়ায়ঃ মানুষের শরীরের শক্তি নির্ভর করে তার পেশির উপর। যার পেশি যত বেশি সুঠাম তার শক্তি তত বেশি। আর পেশিকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজন ব্যায়ামের। ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশিকে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী শক্তিশালী করা যায়।
  • অনিদ্রার সমস্যার সমাধানঃ ব্যায়াম করার ফলে ঘুম ভালো হয়। যার কারণে যদি কারো নিদ্রাজনিত কোন সমস্যা থেকে থাকে তবে ব্যায়াম করার মাধ্যমে সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • বর্জ্য পদার্থ নিঃসরণঃ ব্যায়াম করার ফলে যে ঘাম হয় তার কারণে শরীরের দূষিত বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে বাইরে বের হয়ে যায়। এতে করে শরীর সুস্থ থাকে।
  • কাজের প্রতি ফোকাসঃ যে কোন কাজের প্রতি ফোকাস করা সহজ হয়। কেননা ব্যায়াম করার ফলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। এতে করে কাজ করার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
  • শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধিঃ শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। ব্যায়াম করার ফলে শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়।

খাওয়ার কতক্ষন পর ব্যায়াম করা উচিত

সুস্থ থাকলে মন এমনিতেই ভালো থাকে। আর সুস্থ থাকার জন্য ভালো খাবারের পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রম করাটাও জরুরী। অনেকেই মনে করেন ব্যায়াম করলে খাবারের সব শক্তি হারিয়ে যায়। তাই তারা ব্যায়াম করার পাশাপাশি ইচ্ছামত খাওয়া দাওয়া করেন। এতে করে ব্যায়াম করার পরেও তাদের শরীর সুস্থ থাকে না। তাই ব্যায়াম করার পাশাপাশি খাবারও নিয়ম করে খেতে হবে।

তাহলে ব্যায়াম করার প্রকৃত সুফল মিলবে। বিশেষজ্ঞদের মতে ব্যায়াম করার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে ভারি খাবার গ্রহণ করা উচিত। ভারি খাবার গ্রহণ করার পরপরই কখনো ব্যায়াম করা উচিত নয়। কেননা এতে করে পেট ব্যথা সহ নানা রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে। তবে ব্যায়াম করার ৩০ মিনিট পূর্বে সামান্য ফলমূল খাওয়া যেতে পারে। আবার একদম খালি পেটেও ব্যায়াম করা উচিত নয়।

সপ্তাহে কতদিন ব্যায়াম করা উচিত

শরীরকে সুস্থ রাখতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই। তবে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে কতক্ষণ ব্যায়াম করা শরীরের পক্ষে ভালো? তাদের জন্য বলি আপনাকে সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট করে মাঝারি ব্যায়াম করতে হবে। অর্থাৎ সপ্তাহে মাত্র ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করলেই তা আপনার শরীরের জন্য যথেষ্ট হবে।

তবে সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা ও জগিং করার মত ব্যায়াম আপনার নিয়মিত করা উচিত। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য কিছুদিন পর এই সময়কে বাড়ানো উচিত। সে ক্ষেত্রে তাকে সপ্তাহে ৫ দিন ১ ঘন্টা করে ব্যায়াম করা উচিত।

রাতে ঘুমানোর আগে ব্যায়াম করলে কি হয়

সারাদিনের ব্যস্ততা শুরু হয় সকাল থেকেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে কোনরকম নাস্তা করে কাজের পিছনে ছুটতে হয়। তাই এ সময় ব্যায়াম করার সময় পাওয়া যায় না। তাই অনেকে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যায়াম করার কথা চিন্তা করেন। কেননা শরীরকে ঠিক রাখতে ব্যায়াম করতেই হবে।

তবে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যায়াম করার ফলে আপনি আপনার শরীরকে আরো বেশি খারাপ করে তুলছেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্যায়াম করলে তা আপনার হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে তুলে। এতে করে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়াও ব্যায়াম করার ফলে স্ট্রেস হরমোন নির্গত হয় যা ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন তৈরি হতে বাধা প্রদান করে।

এছাড়াও আপনি যখন ব্যায়াম করেন তখন আপনার পেশি ছিড়ে যায়। পেশিকে সুস্থ করতে প্রয়োজন বিশ্রামের। কিন্তু ব্যায়াম করার ফলে ঠিকমতো ঘুম না হওয়ার কারণে পেশির বৃদ্ধি প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তাই রাতে ঘুমানোর আগে ব্যায়াম পরিহার করুন। ঘুমানোর অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা আগে ব্যায়াম করার কাজ করে ফেলুন।

ব্যায়াম ছেড়ে দিলে কি হয়

শরীরকে সুস্থ সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে করে তুলতে ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যায়াম করার ফলে শরীর যখন সুস্থ সুন্দর হয়ে ওঠে তখন অনেকে মনে করেন আর ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তখনই তারা ভুলটি করে বসেন। হঠাৎ করে ব্যায়াম ছেড়ে দিলে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • শারীরিক গঠন দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়াঃ ব্যায়াম ছাড়ার কিছু দিনের মধ্যেই আপনার শারীরিক গঠন নষ্ট হতে শুরু করবে। তবে এটি নির্ভর করে কে কেমন ব্যায়াম করতেন তার উপর। যারা ভারী ব্যায়াম করতেন তাদের শরীর নষ্ট হতে একটু বেশি সময় লাগবে। কিন্তু একসময় ঠিকই শরীর নষ্ট হয়ে যাবে।
  • রক্তচাপের তারতম্যঃ ব্যায়াম ছেড়ে দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই আপনার এই সমস্যা দেখা দিবে। ব্যায়াম করার সময় আপনার রক্তচাপ ঠিক থাকবে। তবে যেদিন ব্যায়াম করা হবে না সেদিন আপনার রক্তচাপ হঠাৎ করে বেড়ে যাবে।
  • পেশিক্ষয়ঃ ব্যায়াম বন্ধ করার কিছু দিনের মধ্যে আপনার পেশি গুলো শুকিয়ে যেতে শুরু করবে।
  • মস্তিষ্কের উপর প্রভাবঃ ব্যায়াম ছেড়ে দেয়ার পর আপনার মস্তিষ্ক সবসময় ক্লান্ত ও অসুস্থ থাকবে। দুশ্চিন্তা বেড়ে যাবে।
  • দ্রুত হাঁপিয়ে ওঠাঃ ব্যায়াম ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে আপনার কর্মক্ষমতাও কমে যাবে। আপনি অল্প কাজ করতেই হাঁপিয়ে উঠবেন। আর এর প্রধান কারণ হলো ব্যায়াম করার ফলে পেশি অক্সিজেন থেকে আপনাকে শক্তি সরবরাহ করতো। কিন্তু ব্যায়াম না করার কারণে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

ব্যায়াম করার অপকারিতা

অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি ব্যায়াম শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। ব্যায়ামের অপকারিতা গুলো নিচে দেয়া হলো।
  • ঘুম না হওয়াঃ নিয়মিত ব্যায়াম করলে ঘুম ভালো হয়। তবে অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে রাতে অস্বস্তি লাগতে পারে এবং ঘুমের ব্যাঘাত করতে পারে।
  • ব্যথার সৃষ্টিঃ অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে পেশীগুলো ছিড়ে যেতে পারে। যার কারণে পরিপূর্ণ বিশ্রাম না নিলে শরীরের ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।
  • মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতিঃ অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটতে পারে। এ সময় হতাশা কাজ করে। অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে মানসিকভাবে দুর্বল লাগে।
  • রক্তচাপ বেড়ে যাওয়াঃ একটানা অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। এতে করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • হৃদস্পন্দনের মাত্রা বৃদ্ধিঃ অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে হৃদস্পন্দনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অনেকগুণ বেড়ে যেতে পারে। কেননা হৃদপিণ্ড খুব বেশি চাপ থাকলে হৃদস্পন্দনের মাত্রা বেড়ে যায়।
  • আঘাতের সৃষ্টিঃ অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত লাগার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কেননা এ সময় শরীরের অন্যান্য টিসুগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে।
  • কর্মক্ষমতা কমে যাওয়াঃ অতিরিক্ত পরিশ্রম করার ফলে নিজের কর্মক্ষমতা কমে যায়। যদি দেখেন আপনার কর্ম ক্ষমতা কমে যাচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে আপনার অতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে।
  • একঘেয়েমিঃ একটানা অনেকক্ষণ ব্যায়াম করার ফলে একঘেয়েমিতা চলে আসতে পারে। তাই একই ব্যায়াম অনেকক্ষণ যাবৎ না করে ব্যায়ামের ধরন পরিবর্তন করা উচিত।
  • স্বাস্থ্য ঝুঁকিঃ সঠিক বয়সের জন্য সঠিক ব্যায়াম নির্বাচন করা না হলে তা স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাই সর্বদা বয়স ও শারীরিক গঠন অনুসারে ব্যায়াম নির্বাচন করা উচিত।

ব্যায়াম সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নঃ প্রতিদিন কতক্ষণ ব্যায়াম করা উচিত?
উত্তরঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ দিন, ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। অর্থাৎ প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে ব্যায়ামই তার স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে যথেষ্ট।

প্রশ্নঃ ব্যায়াম কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ ব্যায়াম প্রধানত দুই প্রকার। যথা
  • সরঞ্জাম বিহীন ব্যায়াম
  • সরঞ্জামসহ ব্যায়াম
প্রশ্নঃ কোন সময়ে ব্যায়াম করা উচিত?
উত্তরঃ ব্যায়াম করার নির্দিষ্ট কোন সময় না থাকলেও সকালে ব্যায়াম করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তবে ব্যায়াম করার জন্য অনেকে বিকালকেও নির্বাচন করতে পারেন।

প্রশ্নঃ ওজন কমাতে সকালে নাকি রাতে ব্যায়াম করা ভালো?
উত্তরঃ ওজন কমাতে সকালে ব্যায়াম করা সবচেয়ে ভালো। কেননা এ সময় শরীর চর্বি থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে। তাই সকালে ব্যায়াম করলে শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমে যাবে। যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

প্রশ্নঃ ব্যায়াম করলে কি বেশি শক্তি বাড়ে?
উত্তরঃ ব্যায়াম করতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিনিয়ত ব্যায়াম করার ফলে পেশির শক্তি, সহনশীলতা ও আকার বৃদ্ধি পায়।

শেষ কথা

সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপনের জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য। ব্যায়াম করার ফলে একজন ব্যক্তি সুঠাম দেহের অধিকারী হয়। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীর ও মন দুটি ভালো থাকে। আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়ার জন্য ব্যায়াম হতে পারে একটি দুর্দান্ত উপায়। ব্যয়ামের উপকারিতার কথা মাথায় রেখে আমাদের প্রত্যেকেরই নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই তা আপনার আপনজনদের মাঝে শেয়ার করবেন। এই আর্টিকেল সম্পর্কে আপনার মতামতটি কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url