চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আপনি কি চুল পড়া নিয়ে চিন্তিত? অকালেই চুল ঝরে যাচ্ছে? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। এই পোস্টটি পড়ে আপনি চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। চুল পড়ার বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানতে পুরো পোস্ট ধৈর্য সহকারে পড়ুন। এছাড়া চুল পড়া বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ডাক্তারের পরামর্শ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই পুরো আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন।
এছাড়া আপনি এই পোস্ট থেকে জানতে পারবেন ঘরোয়া উপায়ে চুল পড়া বন্ধ করার উপায়। কেননা একজন মানুষের সৌন্দর্য প্রকাশ পায় তার চুলে। নিয়মিত চুল পড়ে গেলে ধীরে ধীরে সে অসুন্দর হয়ে যাবে। এছাড়াও চুল পড়া রোধ করতে কার্যকরী কিছু ঔষধের নাম জানতে পারবেন।
ভূমিকা
চুল হলো ফলিকল থেকে উৎপন্ন চিকন সুতার মত বস্তু। এটি একটি প্রোটিনতন্তু। কেরাটিন হলো চুলের প্রধান উপাদান। চুল একজন মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য প্রকাশ করে। বাজারে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য অনেক ওষুধ পাওয়া গেলেও চুল পড়া বন্ধ করার নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই। চুল পড়া রোধ করতে আমাদের খাদ্যের দিকে নজর দেওয়া দরকার। অনেকেই শরীরকে সুস্থ রাখতে ডায়েট করে থাকে। অতিরিক্ত ডায়েটের ফলে চুল পড়তে পারে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে খাদ্যের দিকে নজর দিতে হবে।
কেন চুল পড়ে
একজন মানুষের চুল বিভিন্ন কারণে পড়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত মানসিক চিন্তা থেকে চুল পড়া বৃদ্ধি পেতে পারে। চুল পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ভিটামিন ডি এর অভাব। ভিটামিন ডি এর অভাবের কারণে চুল অকালে ঝরে যেতে পারে। তাছাড়াও রাতজাগা, দুশ্চিন্তা করা, হতাশাজনক জীবন যাপন করার জন্য চুল পড়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই তাকে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এখনকার দিনের তরুণ তরুণীরা বাইরের খাবার বেশি গ্রহণ করে। যার ফলে অতিরিক্ত চর্বির কারণে তাদের চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও চুলে বিভিন্ন ধরনের রং করা ,জেল ব্যবহার করা, আয়রন করা, কোঁকড়ানো ইত্যাদি কারণে চুল পড়ার হার বেড়ে যায়। এছাড়াও চুলে রয়েছে আমিষ। ঘন ঘন শ্যাম্পু করার ফলে শ্যাম্পুর ক্ষারের সংস্পর্শে আমিষ ভেঙে যায়। এতে চুলের গোড়া ঠিক থাকলেও আগা ফেটে যায়। এছাড়াও ধূমপানের কারণে,মাথায় খুশকি হওয়ার কারণে চুল পড়া বেড়ে যায়।
ক্যান্সার রোগ নিরাময়ের জন্য যে কেমোথেরাপি ব্যবহার করা হয়, টাইফয়েড রোগের চিকিৎসায় যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়, হরমোন ও থাইরয়েডের সমস্যার কারণে, থাইরয়েড রোগের চিকিৎসায় যেসব ঔষধ ব্যবহার করা হয় তার জন্য চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত ডায়েট করার ফলেও চুল পড়া বেড়ে যেতে পারে। অল্প বয়সে চুল পড়া শুরু হলে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
চুল পড়া বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ডাক্তারের পরামর্শ
চুল পড়া রোধ করার জন্য আমাদের প্রথমে খাবারে দিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। সুষম খাবার গ্রহণ করার ফলে চুল পড়া রোধ হয়। তাই চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আমাদের খাবারের তালিকায় পরিণত পরিমাণে সুষম খাবার রাখা প্রয়োজন। হলুদ-সবুজ শাকসবজি খাওয়ার ফলেও চুল পড়া রোধ হয়। হলুদ- সবুজ শাকসবজি ফলমূলের মধ্যে মিষ্টি কুমড়া, গাজর, পেঁপে, আম অন্যতম। তাই সুষম খাদ্য গ্রহণ
করলে চুল পড়া বন্ধ হবে।এছাড়াও পালং শাক চুল পড়া রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাদাম জাতীয় খাবার চুল পড়া রোধে কাজ করে থাকে। বাদামের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চিনা বাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তা বাদাম। চুল পড়া রোধের একটি চিকিৎসা হলো পিআরপি চিকিৎসা। তাছাড়াও যেসব কারণে চুল পড়ে যাচ্ছে সেই সব রোগের চিকিৎসা করলে চুল পড়া রোধ হয়। অতিরিক্ত চুল পড়া রোধ করতে এখন হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। তাই চুল পড়া বন্ধ করার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
চুল পড়া বন্ধ করার ঔষধের নাম
চুল পড়া রোধ করার তেমন কোন ঔষধ বাজারে পাওয়া যায় না। অনেকে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করে থাকে। বাজারে মাত্র দুই ধরনের ঔষধের প্রচলন আছে চুল পড়া রোধ করার জন্য। তার একটি হল মিনোক্সিডিল যা নারী-পুরুষ উভয়ে ব্যবহার করতে পারে। আর অপরটি হলো ফিনাস্টেরাইড যা শুধুমাত্র পুরুষেরা ব্যবহার করে থাকে। তবে এই উভয় ঔষধেরই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এইসব ঔষধ ব্যবহার করা উচিত নয়।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
সপ্তাহে অন্তত একদিন চুলের যত্ন করা উচিত। চুলের যত্নে আমলকি, মেথি, পেঁয়াজ , অ্যালোভেরা, লেবু, কলা, ডিম, কালোজিরা, মেহেদি একসঙ্গে পেস্ট করে মাথায় ভালোভাবে লাগিয়ে অন্তত এক ঘন্টা রেখে ভালোভাবে শ্যাম্পু করতে হবে। আমলকি ও মেথি অবশ্যই আগের দিন রাত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এছাড়াও বাজারে অনেক রকমের হেয়ার প্যাক পাওয়া যায়। যেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
এছাড়াও চুল পড়া রোধে কদুর তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। আমরা অনেক সময় শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করি না। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। যার ফলে চুল ভেঙ্গে যায়। তাই অবশ্যই শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত। তাছাড়াও ভেজা চুল কখনো আচড়ানো উচিত নয়।
লেখকের মন্তব্য
চুল পড়া রোধ করার জন্য যেসব ঘরোয়া উপায় এবং ঔষধের নাম বলা হয়েছে সেগুলো ব্যবহার করার পাশাপাশি খাবারের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কারণ সুষম খাবার গ্রহণ এবং চুলের উপযোগী খাবার গ্রহণই চুল পড়া রোধ করতে সবচেয়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। চুল পড়া রোধ করতে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার খাওয়া জরুরী। এছাড়াও বাজারে ভিটামিন ডি যুক্ত ট্যাবলেট পাওয়া যায় যা সেবন করার মাধ্যমে শরীরের ডি এর অভাব পূরণ হয়। তবে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি ট্যাবলেট সেবন করা উচিত নয়।
এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই তা আপনার আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করবেন এবং এরকম আরো ইনফরমেটিভ পোস্ট পেতে আমার এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে পারেন
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url