প্রিয় পাঠক আপনি কি মেকাপের জিনিসের নাম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন, তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি মেকাপের জিনিসের নাম এবং মেকাপ সম্পর্কে যাবতীয় সব তথ্য জানতে পারবেন। মেকাপ সম্পর্কে ধারণা পেতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এছাড়াও আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে আর্টিকেলটির দিকে অগ্রসর হওয়া যাক।
ভূমিকা
নিজের সৌন্দর্য কে কেনা বৃদ্ধি করতে চায়? মেকআপ হলো সেই সৌন্দর্য বর্ধনের সেরা অস্ত্র। মেকআপ একজন অসুন্দর মানুষকেও সুন্দর করে তুলে। আজকাল এমন কোন মেয়ে পাওয়া যাবে না যারা মেকআপ করতে ভালোবাসে না। কম বেশি সবাই মেকআপ করতে পছন্দ করে।
কেউ হয়তো ন্যাচারাল মেকআপ করতে বেশি পছন্দ করে আবার কেউ হয়তো পার্টি মেকআপ করতে ভালোবাসে। বর্তমানে অনেক ছেলেরাও তাদেরকে সুদর্শন দেখানোর জন্য মেকআপ করে থাকে। যারা প্রাথমিক অবস্থায় মেকআপ শুরু করে তারা ঠিকভাবে মেকআপ করার জিনিসের নাম জানে না এবং কিভাবে মেকআপ করতে হয় সেই সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই।
তাই এই পোষ্টের মাধ্যমে আমি মেকাপের জিনিসের নাম এবং কিভাবে করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
মেকাপের জিনিসের নাম ও এদের কাজ
বর্তমানে একজন মেয়ের কাছে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস হল মেকআপ।একটি পারফেক্ট মেকআপ করার জন্য বাজারে আমরা অনেক ধরনের প্রোডাক্ট দেখতে পাই। একজন মেকআপ আর্টিস্ট নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মুখকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলে। তার কাছে মুখ হলো একটি ক্যানভাস, যা তিনি মেকআপ সামগ্রী ও তুলির সাহায্যে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তুলেন। নিচে মেকাপের জিনিসের নাম তুলে ধরা হলোঃ
মুখের মেকাপের জিনিস
১. ময়েশ্চারাইজার
বয়স বাড়ার সাথে সাথে এবং বিভিন্ন কারণে মানুষের মুখের ত্বকের আদ্রতা কমে যায়। ফলে মুখ রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। তাই ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। যাতে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে।
মেকআপ করার আগে যদি ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেওয়া যায় তবে মুখে মেকআপ খুব সুন্দর ভাবে সেট হয়। এই কারণেই মেকআপ করার আগে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
২. প্রাইমার
মেকআপ করার জিনিসের নাম বলতে গেলে যে নামটি সর্বপ্রথম আসে তা হলো প্রাইমার। প্রাইমারের কাজ হলো সমস্ত মেকআপকে ঠিক রাখা। এটি প্রথমে ব্যবহার করলে মেকআপ করতে কোন অসুবিধা সম্মুখীন হতে হয় না।
প্রাইমার আপনার মুখের ছোট ছোট ক্ষত লুকিয়ে রাখবে, মেকআপ এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আপনার স্কিনকে রক্ষা করবে। সেই সাথে একটি মেকআপকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত ঠিক রাখতে সাহায্য করবে।
৩. কন্সিলার
মুখের দাগ দূর করার জন্য কন্সিলার ব্যবহার করা হয়। এটি আপনার মুখের লালভাব দূর করে দেয়। এটি ব্যবহার করার কারণে ফটোশুটের সময় আপনার ত্বককে খুব বেশি উজ্জ্বল দেখায়। এটি আপনার মুখের সৌন্দর্য অনেকগুণ বাড়িয়ে তুলে।
৪. ফাউন্ডেশন
মেকাপের সময় আপনার স্কিনকে উজ্জ্বল করার কাজে মূলত ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা হয়। আপনার স্কিন কেমন দেখতে চাচ্ছেন সে অনুযায়ী আপনাকে ব্যবহার করতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন মানুষের স্কিনটোনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন শেডের ফাউন্ডেশন বাজারে পাওয়া যায়।
সঠিক মেকআপ করার ফলে আপনাকে সুন্দর দেখায়। আর এই সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ফাউন্ডেশান আপনাকে সাহায্য করে থাকে। ফাউন্ডেশন সবসময় ভালো ব্র্যান্ডের ইউজ করা উচিত। কেননা এতে মেকআপ ভালো হয় এবং ত্বকের কোনো ক্ষতি হয় না।
৫. ফেস সিরাম
মুখের স্কিনকে রোদের হাত থেকে বাঁচাতে এবং মুখের আদ্রতা ধরে রাখার জন্য মুখে ফেস সিরাম ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারের ফলে মুখকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে।
৬. কম্প্যাক্ট পাউডার
ফাউন্ডেশন ও কনসিলারকে সুন্দরভাবে সেট করার জন্য এবং মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য কম্প্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করা হয়। এটি মুখের তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
৭. হাইলাইটার
মেকাপ করা ত্বককে হাইলাইট করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহার করার ফলে আপনার মুখ আরো আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। মুখকে সব দিক থেকে সুন্দর দেখানোর জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
৮. ব্রাশ সেট
উপরে যতগুলো মেকাপের জিনিসের নাম বলা হয়েছে তার সবগুলো ব্যবহার করতে প্রয়োজন ব্রাশ। ব্রাশ ছাড়া আঙ্গুল দিয়ে সব সময় মেকআপ সঠিকভাবে এপ্লাই করতে পারবেন না। সুন্দরভাবে মেকআপ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই ব্রাশ সেট রাখতে হবে।
৯. সেটিং স্প্রে
মেকাপকে অনেকক্ষণ ভালো রাখার জন্য এবং মেকাপকে পারফেক্ট করার জন্য সেটিং স্প্রে ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারের ফলে মেকআপ সহজে নষ্ট হয়ে যায় না। এটি দেখতে পানির মতো।
ঠোঁটের মেকআপ করার জিনিস
১. লিপবাম
এটি আমাদের ঠোঁটকে নমনীয় রাখতে সাহায্য করে। বাজারে অনেক ধরনের এবং অনেক কালারের লিপবাম পাওয়া যায়। লিপবাম ব্যবহারের ফলে ঠোঁট ময়েশ্চারাইজ হয়।
২. লিপস্টিক
মেকাপের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলার জন্য ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহার করা হয়। লিপস্টিক ব্যবহার করার কারণে ঠোঁট আরো সুন্দর হয়ে ওঠে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের ও বিভিন্ন কালারের লিপস্টিক পাওয়া যায়। ওয়াটারপ্রুফ লিপস্টিক সকলের কাছে অনেক বেশি প্রিয়। কেননা এটি সহজে নষ্ট হয় না।
৩. লিপলাইনার
ঠোঁটকে হাইলাইট করার জন্য ঠোঁটের চারিদিকে লিপলাইনার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এতে করে ঠোঁটের গঠন সুন্দর হয় এবং দেখতে আকর্ষণীয় লাগে। অনেকে আবার ঠোঁটের গঠন ছোট বড় করতে লিপলাইনার ব্যবহার করে থাকে। লিপলাইনার ব্যবহার করার ফলে ঠোঁটকে আকর্ষণীয় ভাবে ফুটিয়ে তোলা যায়।
৪. লিপগ্লস
করতে চকচকে ও নরম করতে লিপগ্লস ব্যবহার করা হয়। লিপগ্লস লিপস্টিকের গুণগত মান বৃদ্ধি করে থাকে এবং ঠোঁটের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের লিপগ্লস পাওয়া যায়।
চোখের মেকাপের জিনিস
১. আইলাইনার
এটি চোখের পাতায় ব্যবহার করা হয়। চোখের মেকআপ ফুটিয়ে তুলতে আইলাইনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মানুষজন সাধারণত কালো রঙের আইলাইনার ব্যবহার করে থাকে। কেননা এত করে চোখকে অনেক সুন্দর দেখায়। ক্যাটআই, সরু এগুলো হলো আইলাইনারের ডিজাইনের নাম।
২. আইভ্রু কিট
চোখের আইভ্রুকে আরো সুন্দর ও ঘন করতে আইভ্রু কিট ব্যবহার করা হয়। এটি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এর সাহায্যে চোখের আইভ্রুকে বিভিন্ন সেপ দেওয়া যায়। যার ফলে চোখ থাকতে আকর্ষণীয় লাগে।
৩. আইশ্যাডো
বাজারে বিভিন্ন রকম ও বিভিন্ন কালারের আইশ্যাডো পাওয়া যায়। এটি আমাদের চোখকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করে। এটি ব্যবহার করার ফলে চোখের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
৪. কাজল
মেয়েদের চোখকে সুন্দর করে সাজাতে কাজলের বিকল্প নেই। কাজল সাধারণত চোখের নিচের পাতায় ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন রকম কাজল পাওয়া গেলেও বর্তমানে মেয়েরা কালো রংয়ের কাজল বেশি ব্যবহার করে থাকে। কাজল চোখের সৌন্দর্যকে কয়েকগুন বাড়িয়ে দেয়।
৫. মাস্কারা
চোখের পাপড়িকে আকর্ষণীয় ও দেখতে ঘন করার জন্য মাস্কারা ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহার চোখ একটি নতুন লুক পায়। বর্তমানে বাজারে ওয়াটারপ্রুফ মাস্কারা পাওয়া যায়।
ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম
আমরা সকলেই নিজেকে সবার সামনে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে চাই। আর এই সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী সামগ্রীর সাহায্য নিতে হয়। যা আমাদেরকে আরো সুন্দর করে তুলে। আর এই সুন্দর করার জন্য মেকআপ হলো সবচেয়ে সহজ মাধ্যম।
তবে মেকআপ করার সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে আমরা ঘরে বসে মেকআপ করতে ভয় পায়। যদি মেকআপ করার সঠিক পদ্ধতি জানা থাকে তবে আমরা ঘরে বসেই আমাদের নিজেদেরকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে পারবো। ঘরে বসে মেকআপ করার নিয়ম নিচে দেওয়া হলো
- মেকআপ করার আগে সর্বপ্রথম আমাদের মুখকে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এর জন্য আমরা ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারি। আমাদের মুখের ত্বক অনুযায়ী আমাদের ফেসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। এই ধরুন কারো ত্বকে তৈলাক্ত ভাব বেশি তাহলে তার জেল ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। আবার যাদের ত্বক শুষ্ক তাদের জন্য ক্রিম ফেসওয়াশ উত্তম হবে।
- শুধু ফেসওয়াশ দিয়ে মুখকে সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার করা যায় না। ত্বকের গভীরে থাকা ময়লা সম্পূর্ণ রূপে পরিষ্কার করতে চাইলে আপনাকে ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর অবশ্যই টোনার ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই ভালো হবে মুখ শুকিয়ে নিতে হবে। টোনার মুখ পরিষ্কার করার পাশাপাশি ত্বকের রোমছিদ্র সংকুচিত করার ফলে ধুলা ময়লা প্রবেশে বাধা প্রদান করে। এছাড়াও এটি ত্বককে মসৃণ ও টানটান রাখে।
- এরপর আপনাকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজার মুখের আদ্রতা ঠিক রাখে। এতে করে মেকআপ করতে সুবিধা হয় এবং মেকআপ খুব ভালো ভাবে সেট হয়।
- তারপর আপনাকে ফেস মেকআপ করার জন্য ফাউন্ডেশন ও কনসিলার ব্যবহার করতে হবে। এবং ব্রাশের সাহায্যে সেগুলো ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
- এরপর কম্প্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করে ফাউন্ডেশন ও কনসিলারকে ভালোভাবে সেট করে নিতে হবে।
- এরপর আপনাকে আপনার ফেসে হাইলাইটার ব্যবহার করতে হবে। এতে করে আপনার মেকআপ আরো বেশি আকর্ষণীয় ও সুন্দর হবে।
- এরপর চাইলে আপনি পার্টির ধরণ অনুসারে আপনার চোখকে সাজিয়ে তুলতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি আয়লাইনার, মাস্কারা, কাজল, আইশ্যাডো, আইভ্রু কিটের সাহায্য নিতে পারেন। এইসবের সাহায্যে চোখকে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা যায়।
- এবার পালা আপনার চেহারার সবচেয়ে সুন্দর অংশ ঠোঁটকে সাজানো। ঠোঁটকে সাজানোর জন্য আপনি লিপবাম, লিপস্টিক, লিপলাইনার, লিপগ্লস ব্যবহার করতে পারেন। লিপলাইনার ব্যবহার করার ফলে আপনার ঠোঁটের গঠন সুন্দর হয় এবং আকর্ষণীয় লাগে। লিপগ্লস আপনার ঠোঁটের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
- আপনার মেকআপকে ভালোভাবে সেট করার জন্য এবং অনেকক্ষণ যাবৎ যাতে ভালো থাকে তার জন্য সেটিং স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেটিং স্প্রে ব্যবহারের সময় তা যেন ভুলেও চোখে বা মুখে প্রবেশ না করে।
ন্যাচারাল মেকআপ করার নিয়ম
সব সময় অতিরিক্ত মেকআপ করলে সুন্দর দেখায় না। জায়গা ও সময় বুঝে মেকআপ করা উচিত। ন্যাচারাল মেকআপেই অনেককে বেশি সুন্দর লাগে। ন্যাচারাল মেকআপ করতে কয়েকটি সহজ উপায় অনুসরণ করতে হয়। চলুন এবার সহজ উপায় সম্পর্কে জেনে নিই।
ফেসওয়াশ ব্যবহারঃ মেকআপ করার আগে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এতে করে মেকআপ করতে সুবিধা হয় এবং সুন্দরভাবে মেকআপ সেট হয়।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ ত্বক শুষ্ক থাকলে ঠিকভাবে মেকআপ বসে না। তাই মেকাপ করার পূর্বে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। এতে করে ত্বকের আদ্রতা বজায় থাকে এবং মেকআপ ভালোভাবে সেট হয়।
প্রাইমারঃ মেকআপ করার কথা চিন্তা করলে সর্বপ্রথম যা প্রয়োজন তা হলো প্রাইমার। প্রাইমার ব্যবহার করার ফলে মেকআপ ঠিক থাকে এবং মেকাপের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
কনসিলারঃ প্রাইমার ব্যবহারের পর কনসিলার ব্যবহার করুন। কনসিলার দিয়ে ত্রিকোণ করে চোখ এঁকে নিন। এতে করে চেহারা ভরাট দেখাবে এবং মেকআপ করলে তা সুন্দর দেখাবে।
ফাউন্ডেশনঃ আপনার ন্যাচারাল মেকআপকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে ফাউন্ডেশনের বিকল্প নেই। আপনার স্কিনের কালার অনুযায়ী ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে তা দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা উচিত নয়।
পার্টি মেকআপ করার নিয়ম
পার্টি মেকআপ সচরাচর অনেক গর্জিয়াস হয়ে থাকে। যারা পার্টি মেকআপ করতে চায় তাদের ব্রাইডাল মেকআপ নিতে হয়। এই মেকআপ করতে পার্লারে যেতে হয়। কেননা এই মেকআপ বাড়িতে বসে করা সম্ভব নয়। যদি বাড়িতে করতেই হয় তবে মেকআপ আর্টিস্টকে বাড়িতে নিয়ে আসতে হবে।
এই মেকাপের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম ফেসওয়াশ দিয়ে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এরপর মুখ শুকিয়ে নিয়ে মুখে টোনার ইউজ করতে হবে। টোনার ইউজের কিছুক্ষণ পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এতে করে মুখের আদ্রতা ঠিক থাকবে। এরপর মেকআপ করার নিয়ম অনুসারে প্রথমে মুখের মেকআপ করার জন্য প্রাইমার,কন্সিলার,ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে হবে।
এরপর রোদ থেকে বাঁচার জন্য ফেস সিরাম ব্যবহার করতে হবে। কনসিলার ও ফাউন্ডেশন ভালোভাবে সেট করার জন্য কম্প্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করতে হবে। এরপর হাইলাইটার ব্যবহার করার মাধ্যমে মুখের মেকআপ শেষ হবে। মুখের মেকাপ শেষ করে ঠোঁট সাজাতে হবে। এক্ষেত্রে ঠোঁটে লিপস্টিক, লিপলাইনার, লিপগ্লস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
লিপস্টিকের উপর লিপগ্লস ব্যবহার করলে ঠোঁটকে অনেক বেশি সুন্দর লাগে। ঠোঁটের সাইজ ঠিক রাখার জন্য লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট আঁকা হয়। যা দেখতে অনেক বেশি সুন্দর লাগে। এরপর মেকআপ আর্টিস্ট চোখ সাজাতে শুরু করে। এজন্য তাকে আইলাইনার, মাস্কারা, কাজল, আইশ্যাডো ইত্যাদির সাহায্য নিতে হয়।
সঠিকভাবে মেকআপ করার পর সবার শেষে সেটিং স্প্রে ব্যবহার করার মাধ্যমে মেকআপকে দীর্ঘস্থায়ী করা হয়। সেটিং স্প্রে ব্যবহার করার ফলে মেকআপ অনেকক্ষণ যাবৎ নষ্ট হয় না। একজন মেকআপ আর্টিস্ট তার মেধা ও দক্ষতা দিয়ে পার্টি মেকআপ করে থাকেন। তার মেকআপ করা কমপ্লিট হয়ে গেলে ঐ মেকআপকারীকে দেখতে অনেক বেশি সুন্দর লাগে।
মেকাপ করতে কি কি লাগে
ন্যাচারাল মেকআপ বা পার্টি মেকআপ যে কোন মেকআপেই কিছু কমন জিনিস প্রয়োজন। যেগুলো না থাকলে মেকআপ করা সম্ভব নয়। যেমন প্রাইমার, ফাউন্ডেশন, কনসিলার, হাইলাইটার, আইলাইনার, মাস্কারা, কাজল, লিপস্টিক, লিপলাইনার, মেকআপ বক্স, মেকআপ ব্রাশ কিট, বডি মিস্ট ইত্যাদি। এছাড়াও পার্টি মেকআপ করতে আরও অনেক ধরনের জিনিসের প্রয়োজন রয়েছে।
মেকাপের জিনিসের দাম
মেকআপ করার জিনিসের নাম
|
মেকআপ করার জিনিসের দাম
|
ময়েশ্চারাইজার
|
গুণগত মান ভেদে ১০০ টাকা থেকে ১০/১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
|
প্রাইমার
|
এগুলো ১০০ টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকাও হয়ে থাকে।
|
কন্সিলার
|
১০০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে এর দাম।
|
ফাউন্ডেশন
|
১৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে এর দাম।
|
কমপ্যাক্ট পাউডার
|
১০০টাকা থেকে শুরু করে ৫/১০ হাজার টাকার ফেস হয়ে থাকে।
|
মেকআপ ব্রাশ
|
এগুলো ৫০ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকাও হয়ে থাকে।
|
হাইলাইটার
|
এগুলো ৫০টাকা থেকে শুরু করে ৯/১০ হাজার টাকাও হয়ে থাকে।
|
ব্রোঞ্জার
|
৫০ টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
|
ব্লাশ
|
৫০/১০০ টাকা থেকে ৫/৬ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়।
|
ফেস সিরাম
|
১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫-১০ হাজার টাকার হয়ে থাকে।
|
আইলাইনার
|
গুণগত মান ভেদে ৫০টাকা থেকে ৪/৫ হাজার টাকা।
|
মাসকারা
|
৫০/১০০ টাকা থেকে এগুলো ৪/৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
|
আইশ্যাডো
|
৫০/১০০ টাকা থেকে ২০/২৫ হাজার টাকার আইশ্যাডো হয়ে থাকে।
|
কাজল
|
এগুলোর দাম ১০ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
|
আইভ্রু কিট
|
এটি ৫০/১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকাও হয়ে থাকে।
|
ফেক ল্যাশ
|
১০০ টাকা থেকে শুরু করে ২/৩ হাজার টাকা হয়ে থাকে।
|
লিপস্টিক
|
বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লিপস্টিক ৫০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
|
লিপলাইনার
|
এগুলো দাম ৫০ টাকা থেকে ৩/৪ হাজার টাকাও হয়ে থাকে।
|
সেটিং স্প্রে
|
৩০০ টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকার সেটিং স্প্রে হয়ে থাকে।
|
শেষ কথা
একটি সুন্দর মেকআপ আপনার চেহারাকে যেমন সুন্দর করে তেমনি সঠিকভাবে মেকআপ করতে না পারলে আপনার চেহারা আরও খারাপ হয়ে যায়। এছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ মেকআপ করার ফলে বিভিন্ন ধরনের সাইড ইফেক্ট দেখা দেয়। দীর্ঘদিন মেকআপ করার ফলে চেহারা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
তাই মেকআপ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে এবং সব সময় ভালো ব্র্যান্ডের মেকআপ ব্যবহার করতে হবে। মেকআপ করার পাশাপাশি অবশ্যই ত্বকের যত্ন করতে হবে। যাতে করে দীর্ঘ দিন মেকআপ করার পর ত্বক সুন্দর ও মসৃণ থাকবে।
প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই তা আপনার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন। এই আর্টিকেল সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url