OrdinaryITPostAd

মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুফল ও কুফল/উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা অজানা তথ্য

প্রিয় পাঠক, আপনি কি মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন। তাই মোবাইল করার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়াও আপনি এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারবেন। মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের সাথে গভীরভাবে জড়িত। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের সুফল ও কুফল সম্পর্কে জানতে পারবেন।

ভূমিকা

যখন সর্বপ্রথম মোবাইল ফোন আবিষ্কার হয় তার আগে কেউ চিন্তাও করেনি যে এমন একটি যন্ত্রের সাহায্যে মানুষ এক দেশের খবর অন্য দেশ থেকে খুব সহজে অতি দ্রুত পেতে পারে। যখন ১৯৭৩ সালে গবেষক মার্টিন কুপার মোবাইল ফোন আবিষ্কার করলেন তখন থেকে এখন পর্যন্ত দিন দিন মোবাইল ফোন উন্নত থেকে উন্নতর হয়েছে।

দিন দিন মোবাইল ফোন কম্পিউটার বা ল্যাপটপের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে। এখন অনেক কাজ যেগুলো কম্পিউটার বা ল্যাপটপে করতে হয় সেগুলো এখন মোবাইল ফোনে করা সম্ভব হচ্ছে না। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুব সহজে এক দেশের খবর অন্য দেশ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা অন্য দেশে অবস্থানর লোকের সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে পারতেছি এবং তাদের দেখতে পাচ্ছি।

মোবাইল ফোন আমাদের দৈনন্দিন বিভিন্ন চাহিদা পূরণ করছে। তবে মোবাইল ফোনের যথাযথ ব্যবহার না করার ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। মোবাইল থেকে নির্গত হাই ফ্রিকুয়েন্সির ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন আমাদের বিভিন্ন রকম রোগের সৃষ্টি করছে। তাই আমাদের উচিত যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু মোবাইল ফোন ব্যবহার করা। এতে করে মোবাইলের উপকারিতা গুলো আমরা ভোগ করতে পারবো।

মোবাইল ফোন কে আবিষ্কার করেন

বিজ্ঞানের অনেকগুলো বিস্ময়কর আবিষ্কার মধ্যে মোবাইল ফোন একটি। টেলিফোন আবিষ্কার করার পর থেকে মানুষ তারবিহীন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা কথা চিন্তা করতে শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মিলিটারি সর্বপ্রথম ১৯৪০ সালের রেডিও টেলিফোন ব্যবহার করে। এই রেডিও টেলিফোনের আবিষ্কারক ছিলেন রেজিনালদ ফেসেন্দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭৩ সালে মটরোলা কোম্পানির গবেষক ও নির্বাহী মার্টিন কুপার ফেলুলার নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে সর্বপ্রথম মোবাইল ফোন আবিষ্কার করেন। এই ফোন ছিল ১০ ইঞ্চি লম্বা, ২ ইঞ্চি চওড়া ও ৫ ইঞ্চি উঁচু। এই মোবাইল ফোনের ওজন ছিল ১ কিলোগ্রামের বেশি। একবার চার্জ দিয়ে সর্বোচ্চ .২০ মিনিট কথা বলা যেতো। ২০ মিনিট কথা বলার পরেই এর ব্যাটারি শেষ হয়ে যেতো।

দৈনন্দিন জীবনে মোবাইল ফোনের ব্যবহার

বর্তমান বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের নাম হলো মোবাইল ফোন। বর্তমানে একজন ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ লোক পর্যন্ত সকলেই কম বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। মোবাইল ফোন আমাদের জীবনকে সহজ ও আরামদায়ক করে তুলেছে।

বর্তমানে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের সাথে এমনভাবে যুক্ত হয়েছে যে মোবাইল ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত থাকতে পারিনা। আমরা এখন প্রায় সকল কাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। আগে এমন এক সময় ছিল যখন মানুষ শুধুমাত্র কথা বলার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো।

কিন্তু বর্তমানে আমরা কথা বলার পাশাপাশি মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও কল করতে পারি, ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারি, কাউকে কোন কিছু মেইল করতে পারি, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারি।

এমনকি মোবাইল ফোন বর্তমানে এতটাই উন্নত হয়েছে যে এতে থাকা ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা ছবি তুলতে পারি এবং ভিডিও করতে পারি। ছবি তোলা বা ভিডিও করার জন্য ক্যামেরার প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে মোবাইল ফোন কম্পিউটার বা ল্যাপটপের ব্যাকআপ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
  • বর্তমানে মোবাইল ফোন একাই অনেকগুলো ডিভাইসের কাজ করে থাকে। সঠিকভাবে দিন শুরু করার জন্য মোবাইল ফোনের প্রয়োজন। এই ধরনের নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে ওঠার জন্য এলার্ম ঘড়ির পরিবর্তে আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারি। কেননা মোবাইল ফোনে এলার্ম সেট করা যায়। এছাড়াও এলাম কিভাবে বাজবে, কতক্ষণ পর বাজবে সেটিও মোবাইল ফোনে ঠিক করে দেওয়া যায়। অনেক সময় দেখা যায় ঘুমের ঘোরে এলার্ম ঘড়ির এলার্ম বন্ধ করে দিয়ে থাকি। কিন্তু মোবাইলের কিছু এডভান্স ফিচারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট নিয়মে এলার্ম বন্ধ না করা পর্যন্ত সেটি বাঁচতে থাকবে।
  • অনেক সময় আমরা বাজারে গিয়ে কি কিনতে হবে তা ভুলে যায়। এক্ষেত্রে মোবাইল ফোন আপনাকে সাহায্য করতে পারে। মোবাইল ফোনের নোটপ্যাড অ্যাপটিতে বাজার যাওয়ার আগেই কি কি লাগবে তার একটা লিস্ট বানিয়ে নেওয়া যায়। এতে করে বাজারে গিয়ে কোন কিছু আর ছাড়া পড়ে না।
  • প্রতি মাসের খরচের হিসাব রাখতে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি কোথায় কত টাকা খরচ করবেন, কত টাকা জমা করবেন সব ধরনের হিসাব রাখা যায়।
  • বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আপনি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খুব সহজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে পারছেন। এর জন্য আপনাকে ব্যাংকে যেতে হচ্ছে না। আবার সরকারি ছুটির দিনেও আপনি যে কোন জায়গায় মুহূর্তের মধ্যেই টাকা পাঠাতে পারছেন। আর এটি সম্ভব হয়েছে মোবাইল ফোনের কারণে।
  • মোটকথা মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের প্রায় প্রতিটি কাজেই দরকার। মোবাইল ফোন ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত চলতে পারি না। মোবাইল ফোন আমাদের জীবনকে সহজ ও আনন্দময় করে তুলেছে।

মোবাইল ফোনের উপকারিতা

বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার গুলোর মধ্যে মোবাইল ফোনের স্থান প্রথম দিকে থাকবে। কেননা মোবাইল ফোন আমাদের জীবনকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দময় করে তুলেছে। মোবাইল ফোনের উপকারিতা কথা বলে শেষ করা যাবে না। মোবাইল ফোনের উপকারিতা নিচে তুলে ধরা হলোঃ

যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা

যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন আমূল পরিবর্তন এনেছে। মোবাইল ফোন সারা বিশ্বকে মানুষের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। এখন মানুষ চাইলেই যে কোন সময় যে কোন জায়গার খবর পেতে পারে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। এক দেশে বসে থেকে অন্য দেশের খোঁজখবর খুব সহজেই নেওয়া যায়।

কারো কোন বিপদ হলে সাথে সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার আত্মীয়-স্বজনদের জানিয়ে দেওয়া যায়। ঘরে বসে মানুষ অনলাইনের মাধ্যমে অন্য দেশের মানুষের সাথে কথা বলতে পারে। এমনকি ভিডিও কলে তাদের দেখতেও পারে। মোবাইল ফোন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করে দিয়েছে।

শিক্ষা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা

  • মোবাইল ফোন শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। আগে যখন মোবাইল ফোন এত উন্নত ছিল না তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে ব্ল্যাকবোর্ড, চক, ডাস্টারে ক্লাস করতো। কিন্তু বর্তমানে মোবাইল ফোন এতটাই উন্নতি হয়েছে যে এখন আর ক্লাস করতে স্কুলে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। অনলাইনে শিক্ষার্থী তার ক্লাস করে থাকে। যার প্রমাণ আমরা করোনাকালীন সময়ে পেয়েছি। করোনাকালীন সময় যখন মানুষজন বাইরে বের হতে পারত না তখনও পড়াশোনা থেমে থাকে নি। অনলাইনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে।
  • মোবাইল ফোনের উন্নতির কারণে শিক্ষক এখন কোন বিষয়ে পড়ানোর পাশাপাশি সে বিষয়ে তাদের ভিডিও দেখাতে পারে। এতে করে তারা পরিপূর্ণ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
  • বিভিন্ন ক্লাস প্রজেক্টের ডিজাইন, স্লাইড তৈরি ইত্যাদি সবগুলো কাজ এখন কম্পিউটার এর পাশাপাশি এখন মোবাইল ফোনেও করা যায়। অনেকে কম্পিউটার চালাতে হিমশিম খায় কিন্তু মোবাইল ফোন চালানো অনেক বেশি সহজ।

সামাজিকতা রক্ষায় মোবাইল ফোনের ব্যবহার

  • বর্তমানে মোবাইল ফোন সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার জন্য। এর মাধ্যমে আপনি কারো লাইফ স্টাইল সম্পর্কে জানতে পারছেন। সে কি করছে সেই সম্পর্কে খোঁজ খবর রাখা অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও আপনি আপনার আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সবার সাথে সর্বদা সংযোগ স্থাপন করতে পারছেন এর মাধ্যমে।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনেক সহজেই বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে। ইভেন্ট কর্মীদের সাথে যোগাযোগের জন্য অন্য কোন মাধ্যম ব্যবহার করার প্রয়োজন হচ্ছে না। মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে।
  • মোবাইল ফোনের মূল উদ্দেশ্য ছিল একে অপরের সাথে খুব সহজেই যোগাযোগ করা। আর এটি সবচেয়ে বেশি সাহায্য করছে সামাজিকতা রক্ষার ক্ষেত্রে। আগে একজনের সাথে যোগাযোগ করতে চিঠির ব্যবহার করা হতো। যা ছিল অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু মোবাইল ফোনের কল্যানে আমরা খুব সহজে একে অন্যের সাথে মুহূর্তের মধ্যেই যোগাযোগ করতে পারছি। এভাবে মোবাইল ফোন সম্পর্ক মজবুত করতে ও সামাজিকতা রক্ষায় সাহায্য করছে।

তথ্য আহরণের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা যে কোন তথ্যমুহুর্তের মধ্যে খুঁজে বের করতে পারি। কোন অজানা বিষয়ে জানার জন্য আমরা মোবাইল ফোনের সাহায্যে ব্রাউজিং করে সেই তথ্য খুঁজে বের করতে পারি। এছাড়াও কারো লোকেশন জানার জন্য আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা যার লোকেশান জানতে চাই তার লোকেশন খুব সহজেই বের করা যায়।

ছবি তোলা বা ভিডিও করার ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা

একটা সময় ছিল যখন ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে ছবি তোলার জন্য বহুল ব্যবহৃত একটি ডিভাইস হলো মোবাইল ফোন। এখন আর ছবি তোলার জন্য স্টুডিওতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। ঘরে কিংবা বাইরে সব জায়গায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ছবি তোলা যায় এবং সেই সাথে জীবনের সুন্দর মুহূর্ত গুলো ভিডিওর মাধ্যমে ধারণ করা যায়।

কর্মজীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা

  • বর্তমানে এমন অনেক কাজ পাওয়া যাবে যার জন্য অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। ঘরে বসেই সেসব কাজ করা যায়। এসব কাজ করার জন্য গুগল সিট, পাওয়ার পয়েন্ট, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, মাইক্রোসফট অফিস ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। এই অ্যাপগুলোর মোবাইল ভার্সনে রয়েছে। মোবাইলের মাধ্যমে এই অ্যাপ গুলো ব্যবহার করে অফিসের অনেক কাজ ঘরে বসেই করা যায়।
  • যারা বিভিন্ন ধরনের লেখালেখি করে থাকেন তারা এখন কম্পিউটারে তুলনায় মোবাইল ফোনে লেখালেখি করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। তাছাড়াও মোবাইল ফোন সব জায়গায় বহন করা সহজ। এ ছাড়াও এতে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে ও সহজে লেখালেখি করা যায়। বর্তমানে অধিকাংশ কনটেন্ট রাইটাররা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টাইপিং এর কাজ করে থাকেন।
  • বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের লোগো ডিজাইন, ইনস্টলেশন ইত্যাদি কাজ করা যায়। বর্তমান ফ্রিল্যান্সাররা অনেক কাজেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করে থাকেন।
  • অফিসের অনেক কাজে বিভিন্ন জায়গায় ইমেইল পাঠাতে হয়। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে খুব সহজেই সেই ইমেইল গুলো পাঠানো যায়। আবার অনেক সময় অফিসের বাইরে অবস্থান করলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইমেইল চেক করা যায়। যার কারণে গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল মিস হয়ে যায় না।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন চাকরির অনুসন্ধান করতে পারি। এছাড়াও আমরা সেসব চাকরির আবেদন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করতে পারি।
  • অফিসের বিভিন্ন কলিক এবং বসের সাথে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে আমরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারি। মোবাইলের মাধ্যমে খুব সহজেই যে কোন প্রয়োজনে খুব দ্রুত তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়।

ব্যবসা প্রসারে মোবাইল ফোনের উপকারিতা

  • ব্যবসায় আয় ব্যয়ের হিসাব, কার কাছে কত টাকা বাকি আছে, খরচের তালিকা ইত্যাদি সবকিছুর জন্য এখন দোকানদাররা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপ এর মাধ্যমে খুব সহজে এবং সুন্দর হবে এসব হিসাব করা যাচ্ছে। এসব হিসাব করার জন্য এক্সট্রা কোন খাতা কলমের প্রয়োজন পড়ছে না এবং ঝামেলা কম হচ্ছে।
  • যে কোন ব্যবসার সবচেয়ে বড় দিক হলো এর মার্কেটিং করা। যে যত ভালো মার্কেটিং করতে পারবে তার ব্যবসা তত বেশি উন্নতি লাভ করবে। মোবাইল ফোনের কারণে কোন পণ্যের মার্কেটিং করা অনেক বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তুলনামূলক কম খরচে ব্যবসার মার্কেটিং করা যাচ্ছে। এতে করে ব্যবসার উন্নতি সাধন হচ্...
  • মোবাইল ফোন থাকার কারণে বর্তমানে অনলাইন মার্কেটিং বেশি হচ্ছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে পারছে। এতে করে তারা অধিক মুনাফা লাভ করছে। ক্রেতা অনলাইনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোন পণ্যের অর্ডার দিচ্ছে এবং বিক্রেতা সেটি দেখে সেই পণ্য তার কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।

বিনোদনের ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা

  • বর্তমান মোবাইল ফোন অন্যান্য কাজের পাশাপাশি বিনোদনেরও চাহিদা পূরণ করছে। মোবাইলের মাধ্যমে এখন লাইভ খেলা দেখা, সিনেমা দেখা, গান শোনাসহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক কাজ করা যায়। এতে করে মন প্রফুল্ল থাকে। আর এর সবটাই সম্ভব হয়েছে মোবাইল ফোনের কারণে।
  • বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন গেমস খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যেগুলো আবার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খুব সহজেই খেলা যাচ্ছে।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ওটিটি প্লাটফর্মের কনটেন্ট উপভোগ করা যাচ্ছে। যা মানুষদের বিনোদনের আরেকটি মাধ্যম।

মোবাইল ফোনের অপকারিতা

  • মোবাইল ফোন ব্যবহারের সবচেয়ে অপকারী দিক হলো চোখের সমস্যা হওয়ার। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা সাধারণত .৩০ সেন্টিমিটার দূরে রেখে যেতে ব্যবহার করেন। অনেক সময় দূরত্ব আরো কমে যায়। এতে করে হতে পারে চোখের সমস্যা। এই সমস্যার কারণে ব্যবহারকারীর কাছের জিনিস দেখতে সমস্যা হয়। তাই বিশেষজ্ঞরা একটানা অনেকক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে মানা করেছেন।
  • স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে কানের সমস্যা হতে পারে। হেডফোন ব্যবহার করে উচ্চ শব্দে অনেকক্ষণ ধরে গান শুনলে এই সমস্যা হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা হেডফোনে গান শোনার ব্যাপার.৩০/৬০ নীতি অবলম্বন করতে বলেছেন। এর দ্বারা বুঝানো হয়েছে ৩০ মিনিট হেডফোনে গান শুনে ৬০ মিনিট বিরতি দেওয়ার কথা।
  • অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে কমে যেতে পারে শুক্রাণুর হার। মোবাইল ফোন থেকে হাই ফ্রিকোয়েন্সির ইলেকট্র ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নির্গত হয়। এই ক্ষতিকর তরঙ্গ ক্যান্সার তৈরিতে সাহায্য করতে পারে। আবার এই তরঙ্গ রশ্মি শুক্রানুর উপর প্রভাব ফেলে এবং শুক্রানুর ঘনত্ব কমিয়ে দেয়।
  • অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে হতে পারে ঘুমের সমস্যা। অনেকদিন যাবত অধিক পরিমাণে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে ব্যবহারকারীর স্লিপ ডিসঅর্ডারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করার ফলে হতে পারে আঙ্গুলের জয়েন্টে ব্যথা। অবস্থা আরো বেশি খারাপ হলে আর্থ্রাইটিস এর মত জটিল রোগ হতে পারে।
  • মোবাইল ফোন ব্যবহারের আরেকটি বড় সমস্যা হলো এটি হারানোর ভয়। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকগণ এই অসুখের নাম দিয়েছে নোমোফোবিয়া। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৩ শতাংশ এবং ভারতের ২৯ শতাংশ মানুষের রোগে আক্রান্ত। পাঁচ বছর আগেও যার কোন অস্তিত্ব ছিল না।
  • গবেষণায় দেখা গেছে একটি স্মার্টফোনের উপরে টয়লেটের থেকে ১৮ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে। যার কারণে মোবাইল ফোন নিয়মিত পরিষ্কার না করলে বিভিন্ন ধরনের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের সুফল ও কুফল

ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব অনেক। একজন ছাত্র মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অজানা বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান আরোহন করতে পারে। কোন বিষয়ে বুঝতে না পারলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইউটিউব দেখে সে বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারে। এছাড়াও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের প্রেসেন্টেশন তৈরি করতে পারে।

তাছাড়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একটি গ্রুপ খুলে সেখানে পড়াশোনা বিষয়ক বিভিন্ন আলাপ আলোচনা করতে পারে। এতে করে কারো কোন বিষয়ে সমস্যা হলে সে সেই গ্রুপ থেকে সেই বিষয়ে সমাধান পেতে পারে। তাছাড়া ওকে কত ঘন্টা পড়াশোনা করছে তার একটি প্রতিযোগিতা তারা করতে পারে। এতে করে তাদের পড়াশোনা মান উন্নত হবে।

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তারা অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে ঘরে বসেই পড়াশোনা করতে পারে। মোবাইল ফোন ছাত্র জীবনের শুধু সুফল বয়ে আনে ব্যাপারটা তেমন নয়। এর অপকারিতাও রয়েছে। অনেকে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। অনেকক্ষণ যাবৎ মোবাইল ব্যবহার করার কারনে শিক্ষার্থীর পড়াশোনা ক্ষতি হতে পারে।

অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রকার মোবাইল গেমসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ায় তাদের পড়াশোনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সঠিক গাইডলাইনের অভাবে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার করছে না। যার কারণে তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি মস্তিষ্কেরও বিবৃতি ঘটছে।

অনেকে আবার ফোনে পর্নোগ্রাফি দেখছে। এতে করে তারা এর প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে তাদের পড়াশোনা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মস্তিষ্ক বিকৃত হচ্ছে।

মোবাইল ফোন সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নঃ মোবাইল ফোনের আবিষ্কারকের নাম কি?
উত্তরঃ মার্টিন কুপার।

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে কত সালে মোবাইল ফোন চালু হয়?
উত্তরঃ ১৯৯৩ সালের এপ্রিল মাসে।

প্রশ্নঃ মোবাইল ফোন কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ মোবাইল ফোন কথা বলতে, এসএমএস পাঠাতে, ইমেইল পাঠাতে, ছবি তুলতে, গান শুনতে, বই পড়তে, ব্রাউজিং করতে, ভিডিও করতে ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার।

প্রশ্নঃ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একজন অন্যজনের সাথে কিভাবে কথা হয়?
উত্তরঃ বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে।

প্রশ্নঃ SMS এর পূর্ণরূপ কি?
উত্তরঃ short message service

শেষকথা

মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের সাথে অতঃপ্রতভাবে জড়িত। মোবাইল ফোন ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত চলতে পারি না। আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমরা দেশ বিদেশের খবরা খবর মুহূর্তের মধ্যেই পেয়ে থাকি। মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আমরা খুব সহজে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি।

মোবাইল ফোন আমাদের জীবনকে সহজ ও সুন্দর করে তুলেছে। তবে আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে না যায়। মোবাইল যেমন উপকার করে তেমনি ক্ষতিও সাধন করে থাকে। তাই আমাদের উচিত মোবাইলের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই তা আপনার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন। এই আর্টিকেল সম্পন্ন পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url