চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম, পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
প্রিয় বন্ধুগণ, আপনি কি চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা চিয়া সিড কিভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করে সেই সম্পর্কে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যসহ বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
চিয়া সিড মূলত মরুভূমিতে জন্মানো Salvia Hispanica উদ্ভিদের বীজ। আমরা অনেক সময় চিয়া সিড ও তকমাকে একই মনে করি। কিন্তু আসলে এই দুইটি দুই জিনিস। চিয়া সিডকে প্রাচীন মানুষেরা সোনার থেকেও মূল্যবান মনে করত। কেননা তারা মনে করত এটি তাদের শক্তি ও সাহস যোগাবে।
চিয়া সিড সব ধরনের আবহাওয়াতেই জন্মে থাকে এবং এতে পোকামাকড়ের তেমন কোন আক্রমণ হয় না। চিয়া সিড সাদা এবং কালো দুই ধরনেরই হয়ে থাকে। এটি দেখতে ছোট ছোট দানার মতো। চিয়া সিডকে সুপারফুড বলা হয়। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান।
চিয়া সিডে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যাফিক এসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। চিয়া সিড ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কোলন ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি কমায়।
এছাড়াও এটি ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এর পুষ্টিগুণ বিবেচনায় রেখে বর্তমানে অধিকাংশ লোক তাদের সুষম খাদ্য তালিকায় চিয়া সিড যুক্ত করেছেন। এই আর্টিকেলে আমরা চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে আলোচনা শুরু করা যাক।
চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
চিয়া সিডের নিজস্ব কোন স্বাদ নেই। এটি একটি স্বাদহীন ও গন্ধহীন খাদ্য। এটি সাধারণত শুকনো ভাবে ছাড়া যে কোন ভাবে খাওয়া যেতে পারে। তবে এটি প্রায়শই অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া হয়। চিয়া সিট খাবার পূর্বে অবশ্যই এটি ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। চিয়া সিড খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলো হলো-
স্মুথিঃ স্মুথির পুষ্টিগুণ বাড়ানোর জন্য তাতে চিয়া সিট ব্যবহার করা হয়। এতে করে যেমন স্মুথির পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায় সেইসাথে খেতে অনেক মজাদার হয়। আপনি চাইলে যে কোন ফলের সাথে চিয়া সিড ব্লেন্ডার করে স্মুথি তৈরি করতে পারেন।
সালাদঃ আপনি চাইলে সালাদের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে করে সালাদের পুষ্টিগণ বৃদ্ধি পাবে।
পুডিংঃ আপনি চাইলে চিয়া সিডের পুডিং বানিয়ে সেটি খেতে পারেন। এর জন্য আপনাকে কিছু পরিমাণ দুধের সাথে মধু ও চিয়া সিড মিশিয়ে নিতে হবে। আপনি চাইলে এতে কোকো পাউডারও মিশ্রিত করতে পারেন। এবার মিশ্রনের উপর আপনার পছন্দমত ফলমূল ও বাদাম ছড়িয়ে দিন। তারপর ঘন্টা ছয়েক ফ্রিজে রেখে দিন। তাহলেই চিয়া সিডের পুডিং তৈরি।
বেকিংঃ রুটি বা পাউরুটি তৈরিতে চিয়া সিড ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি কর্নফ্লাওয়ার এর কাজ করবে।
জ্যাম তৈরিতেঃ আপনি যদি ঘরে জ্যাম তৈরি করতে চান তবে সেখানে আপনি আপনার পছন্দের ফলের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে জ্যাম তৈরি করতে পারেন।
এছাড়াও চিয়া সিড পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা খালি পেটে ও রাতে ঘুমানোর পূর্বে খাওয়া হয়। এতে করে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।
বাচ্চাদের চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
বাচ্চা থেকে বয়স্ক লোক সবার জন্যই চিয়া সিড খুব উপকারী। তবে বাচ্চাদের চিয়া সিড খাওয়ানোর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে। কেননা এটি গলায় বেঁধে যেতে পারে। আপনি চাইলে বাচ্চাদের দুধের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
এছাড়াও চিয়া সিড ব্লেন্ডার করে বিভিন্ন খাবারের মধ্যে বিশেষ করে মিষ্টি জাতীয় খাবারের মধ্যে ব্যবহার করে শিশুদের খাওয়ানো যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে প্রতিদিন যেন ১ চামচের বেশি চিয়া সিড খাওয়ানো না হয়। তবে এক বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের এটি না খাওয়ানোই ভালো।
গর্ভাবস্থায় চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
চিয়া সিড হলো একটি সুপার ফুড। এই বীজের কোন স্বাদ বা গন্ধ নেই। তাই এটি যে কোন খাবারে ব্যবহার করা যেতে পারে ঐ খাবারের পুষ্টিগুণ বাড়ানোর জন্য। চিয়া সিডে অবস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ ও বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন রোগের সংক্রামন (যেমন ভ্রুণের দুর্বল বৃদ্ধি, একজিমা, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদি) হ্রাস করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও চিয়া সিড ক্ষুধা দমন করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়ম করে পরিণতি পরিমাণে এটি খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। আবার স্তন্যদানকারী মায়েরাও এটি খেলে দারুন উপকার পাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিয়া বীজ বুকের দুধে ডিএইচএ কন্টেন্ট বাড়াতে সহায়তা করতে পারে। এটি শিশুর মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
তবে কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়া উচিত নয়। এতে করে ডিহাইড্রেশন, ডায়রিয়া সহ হঠাৎ করে রক্তের শর্করা মাত্রা কমে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ
United States Department of Agriculture এর ন্যাশনাল নিউট্রিয়েন্ট ডাটাবেজ হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রতি ১০০ গ্রাম চিয়া সিডে রয়েছে ৪৮৬ ক্যালোরি। এর ৬% পানি, ৪২.১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৩৪.৪ গ্রাম ফাইবার, ১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন, ৩০.৭ গ্রাম ফ্যাট। এতে চিনি ও গ্লুটেন নেই।
এছাড়াও এতে আরো রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ও ক্যাফিক অ্যাসিড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। তাছাড়াও এতে ম্যাগনেসিয়াম, জিংক, দ্রবণীয় ও অদ্রবনীয় ফাইবার সহ নানারকম পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান।
আবার চিয়া সিডে আছে মুরগির ডিম থেকে ৩ গুণ বেশি প্রোটিন, দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, কমলার চেয়ে ৭ গুণ বেশি ভিটামিন সি, পালং শাকের চেয়ে ৩ গুণ বেশি আয়রন, কলার চেয়ে দ্বিগুণ পটাশিয়াম, স্যামন মাছের চেয়ে ৮ গুণ বেশি ওমেগা-৩।
চিয়া সিড এর উপকারিতা
চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ। এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফাইবার যা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড ও বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতক্ষণ আমরা চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা চিয়া সিডের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
হজমশক্তি বৃদ্ধিতে
হজম শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য চিয়া সিডের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় ধরনের ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস। অন্ত্রের গতিবিধি ঠিক রাখতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্রের জন্য ফাইবার অপরিহার্য একটি উপাদান। এছাড়াও চিয়া সিড পরিপাকতন্ত্রকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। আর সঠিকভাবে হজমের জন্য পরিপাকতন্ত্রের হাইড্রেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই যদি আপনি হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে চান তবে অবশ্যই দিনে অন্তত একবার চিয়া সিড ভিজিয়ে রেখে ৩০ মিনিট পর সেটি খান। এটি আপনার হজম সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে থাকবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে
চিয়া সিডে বিদ্যমান ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় সাহায্য করে। কেননা ফাইবার পানি শোষণ করে পরিপাকতন্ত্রে জেলের মতো পদার্থ তৈরি করে যা মলকে নরম হতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করতে চিয়া সিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা এতে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড যা হৃদপিণ্ডকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও হৃদরোগের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী LDL কোলেস্টেরল। নিয়মিত চিয়া সিড গ্রহণ করলে রক্তে LDL কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়। আর এ কারণেই চিকিৎসকগণ হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়মিত চিয়া সিড খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
ওজন কমাতে
ওজন নিয়ন্ত্রণে চিয়া সিডের গুরুত্ব অপরিসীম। চিয়া সিডে বিদ্যমান ফাইবার দীর্ঘ সময় ধরে পেটে থাকার ফলে পেট ভর্তি থাকে। এতে করে অতিরিক্ত ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে না। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও চিয়া সিডে বিদ্যমান ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ ওজন কমাতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত করে
চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম বিদ্যমান। এই ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম আমাদের দেহের হাড় মজবুত ও শক্তিশালী করে থাকে। তাই নিয়মিত চিয়া সিড গ্রহণ করার ফলে দেহের হাড় মজবুত ও শক্তিশালী হয়।
দেহের ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে
দেহের ক্ষতিকর পদার্থ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক অসুস্থতার সৃষ্টি করে থাকে। চিয়া সিডে বিদ্যমান ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং বিভিন্ন উপকারী এসিড দেহের এই ক্ষতিকর পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। এতে করে শরীর সুস্থ থাকে।
প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে
১০০ গ্রাম চিয়া সিডে প্রায় ১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে। তাই নিয়মিত এটি খাওয়ার ফলে দেহের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
বিভিন্ন কারণে দেহের রক্তচাপ বেড়ে যায়। রক্তচাপ বেড়ে গেলে নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। চিয়া সিড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির হাত থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে।
কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
কোলন (মলাশয়) সাধারণত দেহ থেকে উচ্ছিষ্ট পদার্থ বের করে দেওয়ার কাজ করে থাকে। তবে বিভিন্ন কারণে এই অংশ ভালোভাবে পরিষ্কার না থাকার জন্য মলের মধ্যে থাকা জীবানু দ্বারা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। চিয়া সিড কোলন পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। কেননা এতে থাকা ফাইবার পরিপাকতন্ত্রে জেলের মত পদার্থ তৈরি করে যা মলকে নরম করে এবং তার সম্পূর্ণরূপে মলদ্বার দিয়ে বাইরে বের হয়ে যায়। এতে করে কোলন ক্যান্সার থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তাই নিয়মিত চিয়া সিড খেলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে। চিয়া সিড রক্তে থাকা অতিরিক্ত পরিমাণ শর্করা কমাতে সাহায্য করে। সেইসাথে এই বীজ দেহের গ্লুকোজ নিঃসরণ কমিয়ে রক্তে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা নিয়ন্ত্রণ করে।
ইমিউনিটি ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
চিয়া সিড পুষ্টিগুনে ভরপুর। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ। চিয়া সিড দেহের ইমিউনিটি ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এটি দেহের দুর্বলতা দূর করে, হৃদপিণ্ড সচল রাখতে সাহায্য করে যা পুরো শরীরের ইমিউনিটি ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
চুলের সুরক্ষা নিশ্চিত করে
চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজন প্রোটিন। চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন বিদ্যমান। যার কারণে এটি চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও চিয়া সিডে বিদ্যমান ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও নিয়মিত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে ঘুম ভালো হয়। যদি কারো হাঁটু ও জয়েন্টে ব্যথা থাকে তবে তিনি যদি নিয়মিত চিয়া সিড খান তাহলে এসব ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে চিয়া সিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পুষ্টিবিদরা তাদের একটি গবেষণায় বলেছেন দ্রুত ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমানোর পূর্বে এক চামচ চিয়া সিড ও দুই চামচ লেবুর রস মেশানো পানি খেলে খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা
এছাড়াও একদল গবেষকগণ কিছু ব্যক্তিকে চিয়া সিড সমৃদ্ধ সুষম খাবার এবং কিছু ব্যক্তিকে প্লেসবো খাওয়ার পরামর্শ দেন। নির্দিষ্ট সময় পর দেখা যায় প্লেসবো গ্রহণকারী ব্যাক্তিদের তুলনায় চিয়া সিড গ্রহণকারী ব্যক্তিদের ওজন দ্রুত কমে গেছে।
অন্য একটি পরীক্ষায় কিছু লোককে টক দইয়ের সাথে চিয়া সিড খেতে বলেন এবং কিছু ব্যক্তিকে শুধুমাত্র টকদই খেতে বলেন। কিছুদিন পর দেখা যায় যারা টক দইয়ের সাথে চিয়া সিড মিশিয়ে খেয়েছেন তারা তুলনামূলকভাবে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে আনতে পেরেছেন। সুতরাং দেহের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে সুস্থ থাকার জন্য চিয়া সেটের গুরুত্ব অপরিসীম।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
কোন কিছু অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয়। তাই চিয়া সিডও অতিরিক্ত খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে চিয়া সিড এর অপকারিতা তুলে ধরা হলো-
- চিয়া সিড protest ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। এজন্য এটি পরিমিত পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে।
- চিয়া সিড বেশি খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা হতে পারে। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিদ্যমান। তাই অতিরিক্ত চিয়া সিড খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- চিয়া সিড দেহের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া সিড খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি কমে যেতে পারে। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- চিয়া সিড ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই অতিরিক্ত পরিমাণ চিয়া সিড খাওয়ার ফলে ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে। এতে করে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
- চিয়া সিড ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড বিদ্যমান। এ কারণে এটি অধিক পরিমাণে গ্রহণ করার ফলে রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
আমরা সকলেই নিয়মের বেড়াজালে বন্দি। কেউ যদি কোন বিষয়ে অনিয়ম করে তবে তাকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তেমনি খাবার বেলায়ও নিয়মমাফিক সবকিছু খেতে হয়। চিয়া সিড অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার হওয়া সত্বেও এটিকেও নিয়ম মেনে গ্রহণ করতে হবে। তাহলে এর থেকে প্রকৃত উপকার লাভ করা সম্ভব হবে।
আরো পড়ুনঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
প্রিয় বন্ধুগণ, আপনি যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হন এবং আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সাথে এটি শেয়ার করুন।
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url