OrdinaryITPostAd

চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কারন ও দূর করার উপায়

প্রিয় পাঠক, আপনি কি আপনার চোখের নিচে কালো দাগ পড়া নিয়ে চিন্তিত? আপনি জানেন না কিভাবে এটি দূর করতে হয়? তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কারণ ও দূর করার উপায় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কারন ও দূর করার উপায়
এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ পরে। তাই চোখের নিচে কালো দাগ নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

ভূমিকা

চোখের নিচে কালো দাগ পড়লে সৌন্দর্য অনেকাংশে কমে যায়। একজন সৌন্দর্য প্রিয় নারী বা পুরুষ এই সমস্যা নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা থাকে। অনেকে মনে করেন শুধুমাত্র সঠিকভাবে ঘুম না হওয়ার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ করতে পারে। কিন্তু তাদের এ ধারণাটি সম্পূর্ণরূপে সঠিক নয়। যদিও চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার মূল কারণ ঘুম কম হওয়া।

এছাড়াও এর আরো অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমন অতিরিক্ত মানসিক চাপ, ডিহাইড্রেশন, এলার্জি জনিত কারণ, জিনগত কারণ, ভিটামিনের অভাব। ভিটামিন ডি এর অভাবে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পড়তে পারে। আপনি দেখতে যতই সুন্দর হন না কেন আপনার চোখ যদি কালিতে ভরা থাকে তবে কখনোই আপনাকে সুন্দর দেখাবে না।

কারণ মানুষ সর্বপ্রথম আপনার মুখের দিকেই তাকাবে। আর তখনই চোখের এই কালো দাগ সামনে এসে পড়বে। তাই সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করা অত্যন্ত জরুরি।

এই আর্টিকেলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কারণ ও এটি দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাই চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কারন

বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। তারা প্রতিনিয়ত ডিজিটাল স্ক্রিন এবং অনিয়মিত ঘুমের চক্রে নিজেদেরকে নিমজ্জিত করে রেখেছে। চোখের নিচে কালো দাগ সুন্দর নারী পুরুষদের কাছে দুঃস্বপ্নের মত। তাছাড়াও চোখের নিচে কালো দাগ কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার জানান দিয়ে থাকে।

চোখের নিচে কালো দাগের অনেকগুলো কারণ হতে পারে। মানুষের শারীরিক বা মানসিক উভয় সমস্যার কারণে চোখে নিচে কালো দাগ পড়তে পারে। তাহলে চলুন চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কি কি কারন রয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

ঘুমের অভাব
চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া। আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের শরীর দেহের ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলোকে মেরামত করে এবং পুনর্জন্ম করে থাকে। এছাড়াও ঘুমের সময় মুখের টিস্যুগুলোতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোর ফলে মুখমন্ডলকে ফ্রেশ লাগে। তাই ঠিকমতো ঘুম না হলে আপনি অনেক সময় ক্লান্তি বোধ না করলেও তা চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
ডিহাইড্রেশনের সমস্যা
সঠিক পরিমাণে পানি পান না করা চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার আরেকটি অন্যতম কারণ। কোন কারণে যদি শরীর ডিহাইড্রেটেড না হয় তবে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়।
ডিজিটাল স্ক্রিনে বেশি সময়
ডিজিটাল স্ক্রিনে বেশি সময় পার করলে অর্থাৎ মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
আয়রনের অভাব
আমাদের চোখের চারপাশের ত্বকে যে বিবর্ণতা বা শুষ্কতা দেখা দেয় তা মূলত আয়রনের মত নির্দিষ্ট কিছু খনিজ লবণের ঘাটতির কারণে হয়ে থাকে। তাই শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে আমাদের চোখের চারিপাশে অবস্থিত শিরা গুলো দেখা দেয়। এর কারণে চোখের নিচে কালো দাগ পরে। বিশেষ করে যেসব মহিলা গর্ভবতী বা যাদের মাসিকের মাঝামাঝি তাদের আয়রনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা যায়।
বংশগত কারণে
শরীরের অনেকগুলো সমস্যা রয়েছে যেগুলো বংশগত। এসব সমস্যা বাবা-মা থাকলে বা বাবা মার ভেতরে সুপ্ত অবস্থায় থাকলেও তার সন্তানদের মধ্যে দেখা দেয়। তেমনি চোখের নিচে কালো দাগ পিতা-মাতার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া যেতে পারে। যদি পিতা-মাতার এই সমস্যা থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনারও এই সমস্যা হতে পারে।
চোখ ঘষা
যাদের আঙ্গুল দিয়ে চোখ ঘষার অভ্যাস রয়েছে তাদের ডার্ক সার্কেল হতে পারে। চোখের নিচের ত্বক অত্যন্ত পাতলা এবং চর্বির একটি খুব পাতলা স্তর রয়েছে। চোখ ঘষার কারণে চোখের নিচের চর্বি গুলো স্থানচ্যুত হয় যার কারণে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ
অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকলে চোখ বসে যায় এবং চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়। মানসিক চাপের কারণে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল হলে তা দেখতে ভালো লাগে না।
বার্ধক্য জনিত কারণে
বার্ধক্য জনিত কারণেও চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে থাকে। এ সময় মানুষের ত্বক পাতলা হয়ে যায় সেই সাথে ত্বকে অবস্থিত কোলাজেন ও চর্বি কমে যায়। এ কারণে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পড়ে। কেননা কোলাজেন ও চর্বি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই কোলাজেন ও চর্বি কমে যাওয়ার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা দেয়।
এলার্জি জনিত কারণে
এলার্জির কারণেও চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল হতে পারে। কেননা এলার্জি হলে রক্তের মিশ্রিত ভিটামিন রক্তনালী গুলোকে প্রসারিত করে বলে ত্বকের নিচে গাঢ় দেখায়। এই কারণে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা যায়।
সূর্যালোকের উপস্থিতিতে বেশিক্ষণ থাকলে
কেউ যদি খুব গরমে সূর্যের আলোতে অনেকক্ষণ সময় কাটায় তবে তার শরীরের মেলানিন উৎপাদন বেশি হয়। সেই সাথে চোখের চারপাশে ত্বকের রং বদল বেড়ে যায়। আর এই কারণে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দেখা যায়।
পুষ্টিহীনতার অভাব
শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দিলে চোখের নিচে গর্ত হয়ে যায় এবং কালো দাগ পড়ে। কেননা পুষ্টিহীনতার কারণে শরীর বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এছাড়াও শরীরে রক্তস্বল্পতা ও ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে।
চোখের মেকআপ
চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল তৈরি হওয়ার এটি একটি কারণ। চোখের মেকআপ ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে চোখের নিচে কালো দাগ করতে পারে। তাই সর্বদা মেকআপ করার পর মেকআপ উঠানোর সময় ঠিক মত চোখ পরিষ্কার করতে হবে।
গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়া
চোখের চারপাশের ত্বক একটু স্পর্শকাতর ও খুবই পাতলা। তাই গরম পানি দিয়ে চোখ ধোয়ার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে।
ভালো পণ্য ব্যবহার না করা
চোখে ব্যবহৃত পণ্য থেকে অনেক সময় চোখে কালো দাগ করতে পারে। তাই চোখে ব্যবহারের জন্য কোন পণ্য ক্রয় করলে সেটি যেন ভালো মানের হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ধূমপানের কারণে
অতিরিক্ত ধূমপান করলে চোখের অবস্থিত কোলাজেন দ্রুত ক্ষয় হয়ে যায়। যার কারণে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা দিতে পারে।

চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার উপায়

চোখের নিচের কালো দাগ উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এবং লাবণ্যময়ী চেহারার অধিকারী হতে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার প্রয়োজন। তবে অনেক সময় এই দাগ খুব সহজে কমানো যায় না। তাই স্থায়ীভাবে এই দাগ সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

সেই সাথে নিজেকেও কিছু কাজ করতে হয়। উপরে আমরা চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার কারণ সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা চোখের নিচে কালো দাগ কিভাবে দূর করতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। তাই চলুন দেরি না করে আলোচনাটি শুরু করা যাক।

পরিমিত ঘুমঃ চোখের নিচে কালো দাগ পড়ার অন্যতম প্রধান কারণ পরিমিত ঘুম না হয়। তাই আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে। তাছাড়া আপনি যত কিছুই করেন না কেন তার কোন কিছুতেই লাভ হবে না। তাই সুস্থ থাকার জন্য দৈনিক ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। এতে করে চোখে নিজের কালো দাগ যেমন দূর হবে তেমনি শরীরও সুস্থ থাকবে।

রাসায়নিক পিলঃ বিশেষজ্ঞদের মতে রাসায়নিক পিল চোখের নিচে কালো দাগ তোলার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী। সেই সাথে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতেও সাহায্য করে। এই পিল মূলত চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে, সূক্ষ্ম রেখার উপস্থিতি কমিয়ে দেয় এবং চোখের চারপাশে সতেজতা বজায় রাখে। এছাড়াও এটি নতুন কোষ বের হতে সাহায্য করে যার কারণে ত্বকে অবস্থিত পিগমেন্ট হালকা হয়।

লেজার চিকিৎসাঃ চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার জন্য লেজার চিকিৎসা করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে চোখের নিচে ত্বকের কোন ক্ষতি না করে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা হয়ে থাকে।

ঠান্ডা কম্প্রেসঃ চোখের উপর একটি ঠান্ডা কম্প্রেস রক্তনালী গুলোকে সংকুচিত করতে পারে। এর কারণে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হতে পারে। এক্ষেত্রে বরফ কুচি ব্যবহার করা যেতে পারে। বরফ কুচি চোখের কালো দাগের উপর কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করলে সেই কালো দাগ সহজেই উঠে যায়।

ধূমপান ত্যাগ করাঃ অতিরিক্ত ধূমপান করার ফলে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়। তাই ধূমপান করা থেকে বিরত থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

ত্বক হালকা করার ক্রিম ব্যবহারঃ যদি আপনার ডার্ক সার্কেল দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে আপনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সহযোগিতায় স্কিন লাইটেনিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। এটি ব্যবহার করার ফলে আপনার চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হবে।

সূর্য থেকে সুরক্ষা বা সানস্ক্রিন ব্যবহারঃ সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করার জন্য চোখে সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে এবং সেই সাথে চোখের চারপাশে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। এটি ডার্ক সার্কেল প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

প্লেটলেট রিচ প্লাজমা থেরাপিঃ প্লেটলেট রিচ প্লাজমা থেরাপি চোখের ডার্ক সার্কেল চিকিৎসার জন্য একটি প্রাকৃতিক সমাধান। প্লাজমা পুনরুত্পাদনকারী সিরামের মতো কাজ করে যা চোখের নিচের অংশে ইনজেকশন দ্বারা প্রবেশ করানো হয়। এটি টিস্যু বাড়াতে এবং পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়া শুরু করতে সাহায্য করে। এর ফলে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দূর হয় এবং চোখের নিচে সতেজতা ফিরে আসে।

ফিলারঃ আপনি যদি ডার্ক সার্কেল দূর করার জন্য অস্ত্রোপচারের উপায় খুঁজে থাকেন তাহলে ফিলার এর বিকল্প হতে পারে। যেহেতু চোখের নিচের পাতলা এবং স্বচ্ছ ত্বকের কারণে কালো দাগ হয়, তাই অটোলোগাস ফ্যাট ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে এটি সফলভাবে চিকিৎসা করা যেতে পারে। চোখের নিচের অংশে প্লাটিলের সমৃদ্ধ প্লাজমা ইনজেক্ট করে নতুন কোষের সাহায্য মুখে তারুণ্যময় করে তুলতে পারে।

কফিবিন গুড়া, কোকো পাউডার ও মধু মিশ্রণঃ এক চামচ কফিবিন গুড়ার সঙ্গে পরিমাণ মতো কোকো পাউডার ও মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার সেটি চোখের নিচে লাগিয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে পানিতে ধুয়ে ফেলুন। এরপর ভালোভাবে মুখ মুছে সেখানে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে সহজেই দূর হয়ে যাবে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল।

ময়েশ্চারাইজারঃ দিনে দুইবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে চোখের নিচে কালো দাগ দূর হবে। ময়েশ্চারাইজারের সাথে আই ক্রিম ব্যবহার করলে তা দ্রুত কাজ করতে শুরু করবে।

গ্রিন টি ব্যাগ মাস্কঃ গ্রিনটিতে অবস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আন্টিইনফ্লেমেটরি শরীর ও ত্বকের জন্য অনেক বেশি কার্যকরী। এছাড়াও গ্রিন টি ব্যাগ মাস্ক ব্যবহার করলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়ে যায়।

ঠান্ডা চামচ এর ব্যবহারঃ একটি পরিষ্কার চামচ ফ্রিজে রেখে ভালো করে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এরপর সেটি বের করে চোখের নিচের অংশে হালকা করে চেপে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে। সপ্তাহে ২/৩ দিন এই কাজ করতে হবে। এতে করে চোখের নিচের কালো দাগ অনেকটাই কমে আসবে।

শরীরকে ডিহাইড্রেটেড রাখাঃ শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল পড়তে পারে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে শরীরে যেন পানির ঘাটতি না হয়। তাহলে চোখের নিচে কালো দাগ থেকে মুক্তি মিলবে।

চোখের মেকআপ ভালোভাবে পরিষ্কারঃ অনেকের চোখের মেকআপ ঠিকমতো পরিষ্কার না করার কারণে চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল দেখা দেয়। তাই মেকআপ ঠিকমতো পরিষ্কার করতে হবে। তাহলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

ব্লেফারোপ্লাস্টিঃ ব্লেফারোপ্লাস্টি হলো একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যেখানে চর্বি জমা বা অতিরিক্ত ত্বকের কারণে সৃষ্ট ডার্ক সার্কেল অপসারণ করা হয়। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে স্থায়ীভাবে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করা সম্ভব।

চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়

চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি রয়েছে। নিচে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হলো।

শসা
শসা ত্বকের বিভিন্ন উপকারের পাশাপাশি চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতেও দারুণভাবে কাজে লাগে। শসা স্লাইড করে কেটে বা পেস্ট করে চোখের উপরে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখলে চোখের কালো দাগ ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে। কেননা শসাতে রয়েছে ভিটামিন কে। এই ভিটামিন ডার্ক সার্কেল কমায় এবং ত্বক টানটান রাখতে সাহায্য করে।
কাঁচা হলুদ ও দুধ
কাঁচা হলুদ ভালো করে বেটে তা দুধের সাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্টটি চোখের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এটি চোখের নিচে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে ফেললে চোখের নিচে কালো দাগ ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।
আলু
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার একটি অভিনব পদ্ধতি হচ্ছে আলুর পেস্ট। নিয়মিত এই পেস্ট চোখের নিচে লাগিয়ে রাখলে ধীরে ধীরে দাগ অদৃশ্য হয়ে যায়।
টি ব্যাগ ব্যবহার
টি ব্যাগ ব্যবহারের পর তা ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এরপর চোখ বন্ধ করে এই ঠান্ডা টি ব্যাগ ১০ মিনিট চোখের উপরে রেখে দিতে হবে। নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে চোখের নিচের কালো দাগ নিমিষে দূর হয়ে যাবে।
টক দই মধু ও গোলাপজলের ব্যবহার
চোখের নিচে কালো দাগ দূর করতে টক দইয়ের সাথে মধু ও গোলাপজল মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার সে পেস্ট চোখের নিচে লাগান। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি ব্যবহার করার ফলে চোখের নিচে কালো দাগ দূর করা সম্ভব।
লেবু
লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
গোলাপজল
ত্বক ভালো রাখার জন্য আমরা অনেকেই গোলাপজল ব্যবহার করে থাকি। গোলাপ জলে নরম তুলো ভিজিয়ে চোখের নিচে সেই তুলো দিয়ে ম্যাসাজ করলে চোখের নিচের কালো দাগ ধীরে ধীরে উঠে যায়।
নারিকেল তেল
চোখের চারপাশে নারকেল তেল ম্যাসাজ করার ফলে ত্বক নরম হয় এবং চোখের নিচের সূক্ষ্ম রেখা গুলো দূর হয়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে নিয়মিত নারকেল তেল ম্যাসাজ করার ফলে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর করা সম্ভব।
টমেটো ও লেবু
টমেটো ও লেবু একসাথে মিশিয়ে চোখের নিচে ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো হবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে এটি প্রতিদিন দিনে দুইবার করলে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর হয়ে যাবে।
অ্যালোভেরা ও আমন্ড অয়েল
অ্যালোভেরা জেলের সাথে কয়েক ফোটা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল এর উপর লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কয়েকদিন করলে চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল দূর হবে এবং চোখের সতেজতা ফিরে আসবে।

টুথপেস্ট দিয়ে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়

মানুষ সৌন্দর্য প্রিয়। চোখের নিচের কালো দাগ মানুষের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। এর সাথে সাথে ত্বকের জন্যও খারাপ। যারা খুব সহজে এবং অল্প সময়ের মধ্যে চোখের নিচে কালো দাগ অপসারণ করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য একটি ভালো উপায় হচ্ছে টুথপেস্ট দিয়ে চোখে কালো দাগ দূর করা। কেননা টুথপেস্ট সবার ঘরেই রয়েছে।

এছাড়াও টুথপেস্টে রয়েছে মেন্থল। যা চোখের নিচে শীতল অবস্থা তৈরি করে। টুথপেস্টের সাথে এলোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে হবে। এবার একটি তুলোকে গোলাপ জলে ভিজিয়ে চোখের নিচের কালো জায়গায় কিছুক্ষণ ঘষে নিতে হবে। এরপর সে স্থানে তৈরিকৃত পেস্টটি লাগাতে হবে।

দুই তিন মিনিট পর হালকাভাবে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে দুই তিন দিন ব্যবহার করলে চোখের কালো দাগ সহজেই দূর হয়ে যাবে। তবে এটি ব্যবহার করার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ অধিক পরিমাণ পেস্ট ব্যবহার করলে তা ত্বকের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মধু দিয়ে চোখের কালো দাগ দূর করার উপায়

মধু একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে খেলে যেমন শরীরের নানারকম উপকার হয়ে থাকে। তেমনি এটি ত্বকের উপরে ব্যবহার করার ফলে ও নানারকম উপকার পাওয়া যায়। মধুর সাহায্যে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা সম্ভব। এর জন্য এক টেবিল চামচ মধু নিয়ে চোখ ও তার আশেপাশের জায়গায় ভালো করে ম্যাসাজ করতে হবে। নিয়মিত ম্যাসাজ করার ফলে চোখের নিচে কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।

চোখের কালো দাগ দূর করার ক্রিম

মানুষের চোখই তার সৌন্দর্য অনেক অংশে প্রকাশ করে থাকে। তাই চোখের নিচে কালো দাগ মানুষের সৌন্দর্য প্রকাশে বাধা প্রদান করে থাকে। চোখের নিচে কালো দাগ দূর করার জন্য বাজারে অনেক ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়। এসব ক্রিম ব্যবহার করার ফলে চোখের ফোলা ভাব দূর হয়, চোখের নিচে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

চোখের নিচে ক্লান্তি ভাব দূর করে। সেই সাথে চোখের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। আমি এখানে কিছু ক্রিমের নাম উল্লেখ করেছি। যেগুলো চোখের কালো দাগ দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • The Ordinary Caffeine Solution 5% + EGCG
  • Cosrx Advanced Snail Peptide Eye Cream
  • 3W Clinic Honey Eye Cream
  • CeraVe Eye Repair Cream
  • VLCC আমন্ড ক্রিম
  • হিমালয়া হার্বালস আন্ডার আই ক্রিম
  • লোটাস হার্বাল রিজুভিনেটিং অ্যান্ড কারেক্টিং আই জেল
  • অ্যারোমা ম্যাজিক আন্ডার আই জেল
  • বায়োব্লুম ন্যাচারাল আন্ডার আই জেল

কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ হয়

একজন মানুষের চোখ সুন্দর হলেই কেবল চেহারা সুন্দর করে ফুটে ওঠে। কিন্তু সেই চোখে যদি ডার্ক সার্কেল থাকে তবে তা সৌন্দর্য প্রকাশে বিঘ্ন ঘটায়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে কোন ভিটামিনের অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ দেখা দেয়। এর উত্তরটি হলো ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি এর অভাবে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে থাকে।

আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা দিলে সর্বপ্রথম চোখই তার জানান দিয়ে থাকে। কেননা এর অভাবে চোখ গর্তের ভিতর ঢুকে যায় এবং চোখের নিচে কালো দাগ হয়। এছাড়াও ভিটামিন ডি এর অভাবে আরো অনেক ধরনের রোগ হতে পারে। সেই সাথে ক্লান্তি, পেশিতে টান, অবসাদ, চুল পড়া, অনিদ্রার মত সমস্যা হতে পারে।

সেজন্য আমাদের প্রতিনিয়ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করা প্রয়োজন। খাদ্যের পাশাপাশি আমরা সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পেয়ে থাকি। তাই চিকিৎসকরা প্রতিদিন সকালবেলা সূর্যের মধ্যে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যাতে করে আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি এর ব্যবহার পূরণ হয়ে যায়।

লেখকের মন্তব্য

চোখের নিচের কালো দাগ আমাদের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে দেয়। তাই চোখের নিচে কালো দাগ পড়লে আমাদের সর্বপ্রথম তার কারণ নির্ণয় করতে হবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। অনেক পুরাতন ডার্ক সার্কেল হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এছাড়াও উপরে উল্লেখিত বিভিন্ন উপায় এর মাধ্যমে চোখের নিচের কালো দাগ দূর করা সম্ভব।

প্রিয় বন্ধুগন, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আপনি আপনার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন। আপনার মূল্যবান মতামতটি কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url