OrdinaryITPostAd

শীতে ঠোঁট ফাটার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

প্রিয় বন্ধুগণ, আপনি কি এই শীতে ঠোঁট ফাটা নিয়ে চিন্তিত? আপনি কি এর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা ঠোঁট ফেটে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেতে সম্পন্ন আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
শীতে ঠোঁট ফাটার কারণ ও প্রতিকার
এছাড়াও এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো জানতে পারবেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে ঠোঁট ফাটা দূর করা যায়। তাই এসব জানার জন্য আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে।

ভূমিকা

শীতকাল আসবে আর আপনি আপনার ত্বক ও ঠোঁটের যত্ন নিবেন না তা কি করে হয়? এ সময় আমাদের হাত-পা ও মুখের ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যা তৈরি হয়। ঠোঁটের চামড়া অত্যন্ত পাতলা হওয়ার কারণে এ সময় সবাইকে কমবেশি ঠোঁট ফাটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শীতকালে বাতাসের আদ্রতা অনেক কমে যায় বলে এইসব সমস্যা সৃষ্টি হয়।

অন্য যেকোনো সময় তুলনায় এ সময় ত্বক ও ঠোঁট বেশি ফাটে। মূলত বাতাসে আদ্রতা কম থাকার কারণেই এই সমস্যা হয়ে থাকে। তবে ঠোঁট ফাটার আরো অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। যেমন থাইরয়েডের সমস্যা, শরীরের ভিটামিন বি এর অভাব, অধিক সময় রোদে থাকা ইত্যাদি।

শীতকালে ঠোঁটে চামড়া টানটান থাকার কারণে অনেকে জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজায়। এ কারণে ও ঠোঁট ফেটে যায়। ঠোঁট ফাটা রোধ করার জন্য আমরা নানা রকম উপায় অবলম্বন করতে পারি। তবে সবচেয়ে ভালো হবে যদি আমরা হাতের কাছে সব সময় ভালো মানের একটি লিপবাম রাখি।

এতে করে ঠোঁট শুষ্ক হওয়ার সাথে সাথে সেটি ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটা রোধ করা সম্ভব। তাহলে চলুন আর দেরি না করে ঠোঁট কাটার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেই।

শীতে ঠোঁট ফাটার কারণ

শীতকালে বাতাসের আদ্রতা কমে যায়। এর ফলে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে ওঠে। এই সময় ত্বকে দেখা যায় নানা ধরনের সমস্যা। দেহের অন্যান্য জায়গার তুলনায় ঠোঁটের চামড়া পাতলা হওয়ার কারণে এ সময় প্রধান সমস্যা হয়ে ওঠে ঠোঁট ফাটা। ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হওয়ার ঘটনাও ঘটে অনেকের ক্ষেত্রে। তাহলে চলুন কি কি কারনে ঠোঁট কাটার সমস্যা তৈরি হয় সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
  • কোন কারণে শরীরে ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাব হলে ঠোঁটফাটা সহ অন্যান্য সমস্যা তৈরি হতে পারে।
  • শীতকালে মানুষ পর্যাপ্ত পানি পান করে না। সঠিক পরিমাণে পানি পান না করা ঠোঁট ফাটার অন্যতম একটি প্রধান কারণ। শরীরের চাহিদার তুলনায় কম পানি পান করা হয় বলে ঠোঁট ফেটে যায়।
  • শীতকালে বাতাসে আদ্রতা কমে যায়। এর ফলে ঠোঁটের প্রয়োজনীয় পানি শুকিয়ে যায়। এজন্য ঠোঁট ফেটে যায়।
  • প্রায় মানুষের কম বেশি ঠোঁট কামড়ানোর অভ্যাস থাকে। ঠোঁট কামড়ানোর ফলে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে।
  • ঠোঁট ফাটার আরও একটি অন্যতম কারণ হলো সাইট্রাস জাতীয় ফল খাওয়া। নিয়মিত এ ধরনের ফল খাওয়ার ফলে ঠোঁট ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • শীতকালে বাতাসে ভদ্রতা কমে যাওয়ার কারণে ঠোঁট শুষ্ক ও রুক্ষ হয়। সেই কারণেও ঠোঁট ফেটে যেতে পারে।
  • ধূমপান করার কারণে ঠোঁট ফাটার সমস্যা হতে পারে। কেননা ধূমপান করার কারণে ঠোঁটের চারপাশের সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষতি হয়। এর ফলে ঠোঁট ফেটে যায়।
  • অনেকে ঠোঁটের রুক্ষতা ও শুষ্কতা দূর করার জন্য লিপস্টিক বা লিপবাম ব্যবহার করে থাকেন। এইসব জিনিসের অনেকের এলার্জির সমস্যা থাকে। আবার অনেক প্রোডাক্টে ভেজাল মিশ্রিত থাকে। এসব কারণেও ঠোঁট ফেটে যেতে পারে।
  • অনেকে শীতকালে ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার কারণে ঠোঁটকে বারবার জিহ্বা দিয়ে ভিজিয়ে নেয়। এর কারণে ঠোঁট ফাটা বেড়ে যায়।
  • শরীরের বিভিন্ন রোগ যেমন পুষ্টিহীনতা, থাইরয়েডের সমস্যা ইত্যাদি সমস্যার কারণেও ঠোঁট ফেটে যেতে পারে।
এছাড়া আমাদের ত্বকে থাকা সিবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে এক ধরনের তৈলাক্ত বা মোমের মত পদার্থ বের হয়। একে সিবাম বলে। এই সিবাম আমাদের ঘামের সাথে মিশে পুরো চামড়ায় ছড়িয়ে যায় এবং চামড়াকে মসৃণ রাখে। এ কারণে চামড়া বা ঠোঁট ফাটে না।

কিন্তু শীতকালের ঘাম কম হওয়ার কারণে এই পদার্থ ঠিকমতো শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারেনা। যার কারণে শরীরের শুকনো জায়গাগুলো কুচকে গিয়ে ফেটে যায়।

শীতে ঠোঁট ফাটার প্রতিকার

শীতে ত্বক ও ঠোঁট দুটিই শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই এই সময় ত্বকের যত্নের পাশাপাশি ঠোঁটের যত্ন নিতে হবে। কারো কারো আবার সারা বছরই ঠোঁট ফেটে থাকে। সামান্য কিছু যত্ন নিলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক কিভাবে শীতে ঠোঁট ফাটার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো থেকে বিরত থাকুন
জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজানো একটি মারাত্মক বদঅভ্যাস। আপনি যতবারই জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভেজাবেন আপনার ঠোঁট ততই শুষ্ক হবে। কারণ লালা শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি ঠোঁটকেও শুকিয়ে দেয়। তাই বারবার জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজানো থেকে বিরত থাকতে হবে। তাহলে ঠোঁটফাটা কমানো যাবে।
পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা
পুষ্টিকর খাদ্য শুধুমাত্র আপনার ত্বকের জন্যই উপকারী নয়, ঠোঁটের জন্যেও তা অপরিহার্য। ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি ঠোঁট তার অবস্থা অনুযায়ী সরাসরি গ্রহণ করে থাকে। কাজেই সুষম খাবার খাওয়া ঠোঁটের জন্য উপকারী। যেহেতু ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাবে ঠোঁট ফেটে যায়। তাই খাদ্য তালিকায় যাতে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ফ্যাটি এসিডযুক্ত লিপবাম ব্যবহার
ফ্যাটি এসিড ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। তাই যেসব লিপবামে ফ্যাটি এসিড রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে। এতে করে ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হবে এবং ঠোঁট ফাটা বন্ধ হবে।
ঠোঁটের চামড়া তোলা থেকে বিরত থাকা
শীতে যদি ঠোঁটের চামড়া ফেটে যায় তবে কোন অবস্থায় তার টেনে তোলা যাবে না। এতে করে ঠোঁট ফাটা আরো বেড়ে যাবে।
পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান
শীতকালে ঠোঁট ফাটা বন্ধ করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। এতে করে শরীরের পাশাপাশি ঠোঁটও ভেতর থেকে হাইড্রেটেড থাকে। এতে ঠোঁট শুকিয়ে গেলেও ফাটে না।
রাতেও ঠোঁট হাইড্রেটেড রাখা
জেগে থাকলে বুঝতে পারি আমাদের ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ঘুমন্ত অবস্থায় তা আমরা বুঝতে পারি না। আর তাই রাতেও যাতে ঠোঁট হাইড্রেটেড থাকতে পারে তাই লিপবাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন। এতে করে সারারাত ঠোঁট নরম থাকবে। যার কারণে ঠোঁট ফাটবে না।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
ঠোঁটে টানটান ভাব অনুভূত হওয়ার সাথে সাথে ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। এতে করে ঠোঁটের টানটান ভাব দূর হবে এবং সেই সাথে ঠোঁট ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।
জীবনের সংক্রমণ প্রতিরোধ
অনেক সময় ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ঠোট আক্রান্ত হওয়ার কারণে ঠোঁট ফেটে যায়। সেজন্য ঠোঁট যাতে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে।
লিপবাম সঙ্গে রাখুন
সব সময় নিজের কাছে একটি ভাল মানের লিপবাম রাখুন। এতে করে যখনই ঠোঁট শুকিয়ে যাবে মনে হচ্ছে তখনই যাতে এটি ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে ঠোঁট অতিরিক্ত শুকিয়ে যাবে না এবং ঠোঁট ফাটা থেকে মুক্তি মিলবে।
ধূমপান ত্যাগ
ধূমপান করার কারণে ঠোঁট ফাটার সমস্যা হতে পারে। কেননা ধূমপান করার কারণে ঠোটের চারপাশের সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষতি হয়। তাই ঠোঁটফাটা রোধ করতে ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
লিপস্টিক ব্যবহার করুন
বাইরে বের হলে লিপস্টিক ব্যবহার করুন। যেহেতু ঠোঁটের কোনো প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা নেই, তাই লিপস্টিক ঠোঁটের উপর একটি স্তর ফেলবে। যা আপনার ঠোঁটকে শুকনো বাতাস, ধুলোবালি ও রোদ থেকে রক্ষা করবে। এর ফলে ঠোঁটফাটা কিছুটা কম করা যাবে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে লিপস্টিক যেন ভালো মানের হয়।

এছাড়াও শীতে ঠোঁট ফাটা রোধ করতে প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে বের হওয়া ঠিক না। বিশেষ করে যখন প্রচন্ড বাতাস থাকে বা তীব্র শীত পড়ে। যদি কোনো কারণে ঘরের বাইরে বের হতে হয় তবে অবশ্যই মুখের উপরিভাগে মাস্ক বা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এতে করে ঠোঁট শীতের হাত থেকে বেঁচে থাকবে।

ঠোঁট ফাটা কমানোর ঘরোয়া উপায়

ঠোঁট আমাদের শীতকাল আসার আগাম জানান দিয়ে থাকে। কেননা এ সময় ত্বকের পাশাপাশি ঠোঁটও শুষ্ক হতে শুরু করে। ফলে ঠোঁট ফেটে যায়। অনেক সময় ফাটা ঠোঁট দিয়ে রক্ত পড়তে পারে এবং সেই সাথে যন্ত্রণাও হয়। আর তাই ঠোঁট ফাটা রোধ করা অনেক বেশি জরুরী। উপরে ঠোঁট ফাটার প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

এখন আমরা আলোচনা করবো ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে ঠোঁট ফাটা কমানো যায়। তাহলে চলুন উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক-

অ্যালোভেরা
আমাদের সবার বাড়িতে কমবেশি অ্যালোভেরা গাছ রয়েছে। এটি একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এছাড়াও বাজারে অ্যালোভেরা কিনতে পাওয়া যায়। এর রস ঠোঁটে লাগালে শুষ্ক ঠোঁট হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত ও সতেজ। অ্যালোভেরা ঠোঁটে ঠান্ডাভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেই সাথে অ্যালোভেরার মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ঠোঁট ফাটা দূর করতে সাহায্য করে। এর ফলে ঠোঁটের কালো দাগ দূর হয়।

এক্ষেত্রে আপনি অ্যালোভেরা কেটে একটি পাত্রে তার জেল সংগ্রহ করতে পারেন এবং প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে এটি ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে তা ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন রাতে এটি ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটা সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি মিলবে।

নারিকেল তেল
নারকেল তেলের রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি এসিড। আর এ কারণেই বহুকাল ধরেই ঠোঁট ফাটা রোধ করতে নারকেল তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই ঠোঁটকে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়মিত ঠোঁটে নারকেল তেল ব্যবহার করুন। এটি ঠোঁটকে নরম ও কোমল রাখতে সাহায্য করে সেই সাথে ঠোঁট ফাটা রোধ করে।

অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল হলো প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। এতে বিদ্যমান ফ্যাটি এসিড ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে। দিনে দুইবার ঠোঁটে অলিভ অয়েল মাখলে ঠোঁট নরম ও মসৃণ থাকে। যার ফলে শীতের শুষ্ক আবহাওয়াতেও ঠোঁট ফেটে যায় না।

ঘি
দ্রুত ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করতে ঘি এর কোন বিকল্প নেই। দিনে কয়েকবার ঠোঁটে ঘি ব্যবহার করলে এটি ঠোটের উপর একটি আস্তরণ তৈরি করে। যার কারণে ঠোঁট শুষ্ক হওয়া থেকে বিরত থাকে। এর ফলে ঠোঁটফাটা বন্ধ হয়। এছাড়াও ঘি ত্বকে মালিশ করা যেতে পারে। এতে করে ত্বক নরম ও কোমল হয়। ঘিয়ে বিদ্যমান ভিটামিন ই ও কে এর জন্য ত্বক আরো বেশি উজ্জ্বল হয়।

মধু
মধু হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াজাত পদার্থ এবং ভ্যাসলিন ত্বক নরম ও কোমল রাখতে সাহায্য করে। তাই মধু ও ভ্যাসলিন একসাথে মিশিয়ে ঠোঁটে ব্যবহার করলে ঠোঁটফাটা দূর হওয়ার পাশাপাশি ঠোট নরম ও কোমল হয়। এ দুটি একসাথে ঠোঁটে লাগালে ময়েশ্চারাইজার এর কাজ করে।

এছাড়াও ঠোঁটের মরা কোষ উঠাতে প্রথমে মধু লাগিয়ে নিন। এরপর এর উপরে ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন। ১০-১৫ মিনিট পর পাতলা কাপড় বা টিস্যুর সাহায্যে মুছে ফেলুন। তাহলে ঠোঁটের মরা কোষ উঠে গিয়ে নরম ঠোঁট পাওয়া যাবে।

দুধ
দুধ প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে খুবই উপকারী। প্রতিদিন ঠোঁটে ১৫ মিনিট দুধ রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি ব্যবহারে ঠোট নরম ও উজ্জ্বল হবে। এছাড়াও কাচা দুধে গোলাপের পাপড়ি ভিজিয়ে রেখে তা ব্যবহার করলে ঠোঁট কোমল ও মসৃণ হয়।

শসা
শুষ্ক ও ফোটা ঠোঁটের সমস্যায় শসা প্রাকৃতিক ঔষধের কাজ করে। শসা ত্বক নরম ও কোমল রাখতে সাহায্য করে। এর জন্য এক টুকরো শসা কেটে ঠোঁটের ওপরে তিন থেকে চার মিনিট ঘষতে হবে। এরপর শসার রস ১০ মিনিট ঠোঁটে লাগিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দূর হবে।

গ্লিসারিন
কেউ যদি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে ঠোঁটে গ্লিসারিন দিয়ে ম্যাসাজ করে ঘুমাই তবে তার কখনোই ঠোঁট ফাটার সমস্যা হবে না। কেননা এটি ঠোঁটকে নরম রাখতে সাহায্য করে।

চিনির স্ক্রাব
সুস্থ ও সুন্দর ঠোঁটের জন্য স্ক্রাব করা জরুরী। কেননা মরা কোষের কারণে ঠোঁট অতিরিক্ত রুক্ষ হয়ে যায়। আর এই মরা কোষ তুলতে ঠোঁটে স্ক্রাব করতে হয়। এর জন্য আপনাকে সামান্য চিনি ঠোঁটের উপর নিয়ে হালকা করে ম্যাসাজ করতে হবে। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করার পর সেটি ধুয়ে লিপবাম লাগান।

গ্রিন টি
গ্রিন টি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি ঠোঁট ফাটা রোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর জন্য এক কাপ গরম পানিতে একটি গ্রিন টি ব্যাগ কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। এরপর সেটি তুলে সরাসরি ফাটা ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এই পদ্ধতিটি করতে থাকুন। তাহলে আপনার ঠোঁটফাটা বন্ধ হয়ে যাবে।

লিপ মাস্ক ব্যবহার
২ চামচ টক দই আর ১ চামচ লেবুর রস নিয়ে আপনি চাইলে লিপ মাস্ক তৈরি করে নিতে পারেন। প্রতিদিন এটি ব্যবহার করার কারণে ঠোঁট ফাটা বন্ধ হবে।

ঠোঁটের চামড়া ওঠার কারণ

ঠোঁটের চামড়া উঠার সমস্যা অনেকের মধ্যে দেখা যায়। চামড়া উঠার কারণে ঠোঁট দেখতে সুন্দর লাগে না। অনেক সময় চামড়া উঠার কারণে সেখান থেকে রক্ত বের হয়। ঠোঁটের চামড়া উঠার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
  • ঠোঁটের চামড়া উঠার প্রধান কারণ হলো পানিশূন্যতা। শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে ঠোঁটের উপর এর প্রভাব পড়ে। সেজন্য ঠোঁটের উপরের চামড়া শুষ্ক হয়ে ফেটে যায় এবং এক সময় চামড়া মরে গিয়ে উঠে যায়।
  • ঠোঁটের চামড়া পাতলা হওয়ার জন্য এ সমস্যা দেখা দেয়। কারণ শীতের সময় ত্বক এমনিতে অনেক শুষ্ক এবং রুক্ষ থাকে সেই সাথে ঠোঁটও। শুষ্ক এবং রুক্ষ থাকার কারণে ঠোঁটে টানটান ভাব হয় এবং ফেটে যায় । ঠোঁট ফেটে যাওয়ার পরে চামড়াগুলো ধীরে ধীরে উঠে যায়।
  • ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর অভাবে ঠোঁট ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের অভাবে ঠোঁটে শুষ্ক ভাব সৃষ্টি হয় যার কারণে ঠোঁটের চামড়া উঠে যায়।
  • সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে থাকলে ঠোঁটের চামড়া উঠে যায়। কেননা এতে খুব দ্রুত ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায় এবং চামড়া উঠে যায়।

কোন ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট ফাটে

ঠোঁট ফাটার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি কারণ হচ্ছে ভিটামিনের অভাব। আমরা হয়তো অনেকেই জানিনা যে কোন ভিটামিনের অভাবে আমাদের ঠোঁট ফেটে যায়। বিশেষজ্ঞরা ঠোঁট ফাটার জন্য ভিটামিন বি এর অভাবকে দায়ী করেছেন। ভিটামিন বি৩ এর অভাবে ঠোঁট শুষ্ক হয় এবং ঠোঁট ফেটে যায়।

এছাড়াও ভিটামিন বি২ ঠোঁটের সুস্থতা ও উজ্জ্বলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। এছাড়াও ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন বি১২ এর অভাবে ঠোঁট ফাটার সমস্যা হতে পারে। ভিটামিন সি এর অভাবে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়। যার কারণে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে। তাই ঠোঁটফাটা রোধ করতে ভিটামিন বি ও সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।

ঠোঁট ফাটা সম্পর্কিত কয়েকটি প্রশ্ন এবং উত্তর

প্রশ্ন-১ঃ ঠোঁট ফেটে যাওয়ার কারণ কি?
উত্তরঃ ঠোঁট কেটে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া। বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়ার কারনে ঠোঁট রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়। এছাড়াও শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিলে, জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজালে, বিভিন্ন রকম বদ অভ্যাস যেমন ধূমপান করার কারণে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে।

প্রশ্ন-২ঃ কোন ভিটামিনের অভাবে ঠোঁট ফেটে যায়?
উত্তরঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর অভাবে ঠোঁট ফেটে যায়। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন রোগের কারণে ঠোঁট ফেটে যেতে পারে।

প্রশ্ন-৩ঃ প্রাকৃতিকভাবে ঠোঁট হাইড্রেট করার উপায় কি?
উত্তরঃ ঠোঁটে নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, মধু, গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করে হাইড্রেট রাখা যায়।

প্রশ্ন-৪ঃ গরমকালে ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার কারণ কি?
উত্তরঃ গরমকালে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বাইরে বের হয়ে যায়। এর ফলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা যায়। আর এই কারণেই ঠোঁট ফেটে যায়।

লেখকের মন্তব্য

শীতকালে প্রায় মানুষের মধ্যেই ঠোঁট ফাটার সমস্যা দেখা দেয়। এটি মূলত আবহাওয়া জনিত একটি সমস্যা। তাই এ সময় সাবধানতার সাথে চলাচল করতে হবে। সেই সাথে ঠোঁট যাতে শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর জন্য সব সময় কাছে একটি লিপবাম রাখতে হবে। যাতে করে ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে সেটি ব্যবহার করা যায়।

প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি যদি উপকৃত হন তবে এই আর্টিকেলটি আপনি আপনার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url