OrdinaryITPostAd

মাশরুমের ২৩ উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও চাষ পদ্ধতি

প্রিয় পাঠক, আপনি কি মাশরুমের উপকারিতা ও এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানেন না? তাহলে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি মাশরুমের উপকারিতা ও এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
মাশরুমের উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও চাষ পদ্ধতি
এছাড়া আপনি আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুমের দাম সম্পর্কে জানতে পারবেন। সেই সাথে মাশরুম কিভাবে চাষ করতে হয় তা জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

ভূমিকা

মাশরুম হলো একটি ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ। এর অনেক প্রজাতি পুষ্টিকর ও খেতে সুস্বাদু হয়ে থাকে। আবার অনেক প্রজাতি বিষাক্ত হয়ে থাকে। বিষাক্ত মাশরুম খাওয়ার ফলে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তবে বর্তমানে আমাদের দেশের অনেক জায়গায় মাশরুম চাষ হয়ে থাকে।

তাই বলা যেতে পারে বাংলাদেশের বেকারত্ব দূরীকরণে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে এবং মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে মাশরুম একটি সম্ভাবনাময় ফসল। যে কেউ চাইলে খুব সহজে মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবে। অল্প পুজিতে মাশরুম চাষ শুরু করা যায়। এর জন্য প্রথমে মাশরুম গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে তাকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে এরপর মাশরুম চাষ শুরু করতে হবে।

মাশরুম চাষ করার জন্য আলাদা করে চাষের জমি প্রয়োজন হয় না বলে যে কেউ এটি চাষ করতে পারে। মাশরুম বাড়িতে চাষ করা যায় বলে বাড়ির মহিলারাও চাইলে মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হতে পারবে। মাশরুম মানবদেহের জন্য অতি প্রয়োজনীয় প্রোটিন সরবরাহ করে থাকে যাতে মানবদেহের জন্য উপকারী নয়টি অ্যামাইনো এসিড বিদ্যমান।

কোন খাবারে মাশরুম ব্যবহার করার ফলে সেই খাবারের স্বাদ অনেকগুন বেড়ে যায়। আজ আমরা আর্টিকেলটি মাশরুমের পুষ্টিগুণ, উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি সহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

মাশরুমের পুষ্টিগুণ

আমরা প্রতিনিয়ত যেসব খাবার খেয়ে থাকি সে সব খাবারের পুষ্টিগুণের তুলনায় মাশরুমের পুষ্টিগুণ তুলনামূলকভাবে বেশি হয় এটি খাওয়ার ফলে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ হওয়ার পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। খাদ্য গুনে পরিপূর্ণ মাশরুম অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাবার। এতে বিদ্যমান প্রোটিন অতি উন্নত মানের যা মানব দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী।

একটি উন্নতমানের পরিপূর্ণ প্রোটিনের পূর্ব শর্ত হলো এতে মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি অ্যামাইনো এসিডের উপস্থিতি। মাশরুমে অতি প্রয়োজনীয় এই নয়টি অ্যামাইনো অ্যাসিড বিদ্যমান। এছাড়াও মাছ-মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি দামী খাবার হলেও এগুলোর মধ্যে চর্বি সংযুক্ত অবস্থায় থাকে।

যার কারণে এগুলো অধিক মাত্রায় গ্রহণ করলে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি করে যেমন মেদ ভুড়ি বৃদ্ধি করে, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ সহ বিভিন্ন জটিল রোগ সৃষ্টি করে। মাশরুমের প্রোটিনে চর্বি ও শর্করার পরিমাণ খুব সামান্য।

এতে কোলেস্টেরল ভাঙার উপাদান লোভস্ট্রাটিন, অ্যান্টাডেনিন, ইরিটাডেনিন ও নায়াসিন বিদ্যমান থাকায় শরীরে কোলেস্টেরল জমতে পারে না বরং দীর্ঘদিনের জমে থাকা কোলেস্টেরল ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়।১০০ গ্রাম শুকনো মাশরুমে ২৫-৩৫ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে যা অন্যান্য নামি দামি খাবারের তুলনায় অনেক বেশি।

এছাড়াও এতে ভিটামিন ৫৭-৬০ গ্রাম ও ৫-৬ গ্রাম মিনারেল, শর্করা ও উপকারী চর্বি ৪-৬ গ্রাম পাওয়া যায়। এতে আঁশের পরিমাণ প্রায় ১০-২৮%। এছাড়াও মাশরুমে ক্যালসিয়াম, লৌহ, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন সি ও নিওসিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকায় মাশরুম দেহকে সুরক্ষিত রাখতেও বিশেষ ভুমিকা রাখে।

মাশরুমের উপকারিতা

বাঙালি হলো খাদ্যরসিক জাতি। আমরা পৃথিবীর সকল দেশের খাবারের দিকে নজর দিই। এর ফলশ্রুতিতে কিছু বছর আগেও যা আমাদের রান্নাঘরে থাকত না তা এখন আমরা মজুদ করে রাখি। আর এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে মাশরুম। বর্তমানে মাশরুম পছন্দ করে না এমন লোক খুব কমই রয়েছে। বিশ্বের নানা দেশে এই মাশরুম খাওয়া হয়।

মাশরুম বিভিন্ন প্রজাতির হয়ে থাকে। তবে সব প্রজাতির মাশরুমই খাওয়ার উপযোগী নয়। যেগুলো খাওয়ার উপযোগী সেগুলো সাধারণত চাষ করা হয়। মাশরুমে অনেক পুষ্টিগুণ থাকার কারণে এটি খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। তবে মাশরুম আমাদের শরীরে কি উপকার করে থাকে সেই সম্পর্কে অনেকেরই কোন ধারণা নেই।

আমরা এখানে মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে মাশরুমের উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

গর্ভবতী মা ও শিশুদের রোগ প্রতিরোধে
মাশরুমে অবস্থিত আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলসহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকায় এটি শরীরের ইমিউন সিষ্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়াও মাশরুমের নিওসিন ও অ্যাসকরবিক এসিড বিদ্যমান থাকায় এটি শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের স্কার্ভি ও পেলেগ্রা প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

চর্মরোগ প্রতিরোধে
নানা ধরনের চর্মরোগ নিরাময় করতে মাশরুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও ঝিনুক মাশরুমের নির্যাস থেকে খুশকি প্রতিরোধী ঔষধ তৈরি করা হয়।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও হৃদরোগ প্রতিরোধে
মাশরুমে অবস্থিত ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ও ভিটামিন ডি রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই ভিটামিন গুলো রক্তচাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। কেননা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বৃদ্ধি। যা নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার ফলে কমে যায়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র সমস্যা প্রায় ৮০% লোকের রয়েছে। দিন দিন এই সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করছে। মাশরুম ডাইবেটিস প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা এটি নিয়মিত খাওয়ার ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা কমে যায়। আর শর্করা বা চর্বি জাতীয় খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। মাশরুমে চর্বি ও শর্করা কম থাকে এবং আঁশ বেশি থাকে। যার কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের আদর্শ খাবার।

লিভার সুস্থ রাখতে
মাশরুমে বিভিন্ন ধরনের উপকারী এসিড ও এনজাইম থাকে যা লিভারের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিয়ে লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে
মাশরুমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম (বিশেষ করে ট্রিপসিন ও অগ্নাশয় থেকে নির্গত জারকরস) যা খাদ্য পরিপাকে এবং হজমে সাহায্য করে। এটি মুখে রুচি ফিরিয়ে আনে।

দেহে প্রোটিনের চাহিদা পূরণে
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন রয়েছে। আর এই কারণে নিয়মিত মাশরুম খেলে দেহের প্রোটিনের অভাব পূরণ হবে। এইসব প্রোটিন সুস্বাদু ও মুখরোচক হওয়ার কারণে মাশরুম খেতেও অনেক সুস্বাদু।

পেটের অসুখ নিরাময়ে
মাশরুমে বিভিন্ন প্রকার এনজাইম থাকার কারণে এটি পেটের অসুখ নিরাময়ে সাহায্য করে থাকে।

আমাশয় রোগ নিরাময়ে
মাশরুমে অবস্থিত ইলুডিন এম ও এস(Eludin M & S) আমাশয় রোগীদের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এ কারণে আমাশয় রোগীদের নিয়মিত মাশরুম খাওয়ালে এই রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

দাঁত ও হাড় গঠনে
দাঁত ও হাড় গঠনে এবং মজবুত করতে মাশরুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা মাশরুমে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন ডি রয়েছে। যা শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে। এর ফলে দাঁত ও হাড় মজবুত হয়।

চুল পড়া ও অকালপক্কতা দূর করতে
বর্তমান মানুষের চুল পড়া এবং চুল অকালে পেকে যাওয়া খুবই সাধারণ সমস্যা। এটি মূলত প্রাকৃতিক দূষণ এবং শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিলে হয়ে থাকে। মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ সালফার ও অ্যামিনো এসিড থাকার কারণে এটি খাওয়ার ফলে অসময়ে চুল পেকে যাওয়া এবং চুল পড়া দূর হয়। তাই চুল পড়া ও চুলের অকালপক্ষতা দূর করতে নিয়মিত মাশরুম খেতে হবে।

রক্তস্বল্পতা দূর করতে
শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া রোগ হয়। এটি হলে শরীর হালকা হলুদ বা সাদা বর্ণ ধারণ করে। নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার ফলে শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর হতে পারে। তাই এ সমস্যা সমাধানে আমাদের নিয়মিত মাশরুম খাওয়া উচিত।

দৃষ্টিশক্তি রক্ষায়
মানুষ আধুনিক খাবার খাওয়ার ফলে দিন দিন মানুষের দৃষ্টি শক্তি কমে যাচ্ছে। বর্তমানে শিশুদেরও এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। মাশরুম দৃষ্টিশক্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেননা মাশরুমে রয়েছে খনিজ লবণ যা চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এই কারণে বয়স্ক লোকদের পাশাপাশি শিশুদেরও দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখার জন্য মাশরুম খাওয়ান।

ওজন নিয়ন্ত্রণে
মাশরুম একটি আঁশ জাতীয় খাবার। এতে প্রচুর পরিমান ফাইবার রয়েছে। এ কারণে এটি খাওয়ার ফলে অনেকক্ষণ পেট ভরা ভরা মনে হয় এবং ক্ষুধা কম লাগে। যার ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এ কারণে শরীর দেহের চর্বি থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে। যার ফলে দেহের চর্বির পরিমাণ কমে যায়। এছাড়াও মাশরুমে চর্বির পরিমাণ কম থাকার কারণে এটি খাওয়ার ফলে চর্বি হওয়ার কোন ভয় থাকে না। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

কিডনি রোগ প্রতিরোধে
মাশরুম কিডনি রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। মাশরুমে নিউক্লিক এসিড ও এন্টি এলার্জেন থাকায় এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকার কারণে কিডনি রোগ ও এলার্জি রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

এইডস প্রতিরোধক হিসেবে
মাশরুমে ট্রাইটারপিন থাকার কারণে বর্তমানে এটি বিশ্বে এইডস প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধে
মাশরুমের বেটা-ডি, ল্যামপট্রোল, টারপিনয়েড ও বেনজো পাইরিন আছে যা ক্যানসার ও টিউমার প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যারা বেশি মাশরুম খেয়ে থাকেন তাদের মধ্যে ক্যান্সার ও টিউমার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। সম্প্রতি জাপানের জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণায় তারা বলেন মাশরুমের ক্যান্সার প্রতিহত করার ক্ষমতা রয়েছে।

হাইপার টেনশন দূর করতে
মাশরুমে স্ফিংগলিপিড এবং ভিটামিন-১২ বেশি থাকার কারণে এটি স্নায়ুতন্ত্র ও স্পাইনাল কার্ড সুস্থ রাখে। এর ফলে নিয়মিত মাশরুম খেলে হাইপার টেনশন দূর হয় এবং মেরুদণ্ড দৃঢ় থাকে।

হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিস প্রতিরোধক হিসেবে
মাশরুমে অবস্থিত লৌহ, ফলিক এসিড ও লিংকজাই-৮ নামক অ্যামাইনো এসিড থাকে যা হেপাটাইটিস বি ও জন্ডিস প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
মাশরুমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ লবণ। সেই সঙ্গে এতে রয়েছে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। মাশরুমে অবস্থিত পলিফেনল ও সেলেনিয়াম নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা স্ট্রোক, ক্যান্সার, হৃদরোগ ইত্যাদি হতে শরীরকে রক্ষা করে থাকে।মূলত স্তন ক্যানসার এবং প্রস্টেট ক্যানসার প্রতিরোধে মাশরুমের কোনও বিকল্প নেই।

ত্বকের সুস্থতায়
ত্বকের জন্য দুটি উপকারী ভিটামিন হলো নিয়োসিস ও রিবোফ্লাবিন। এটি ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে এবং ত্বক নরম ও কোমল রাখে। এই ভিটামিন গুলো মাশরুমে পাওয়া যায়। তাই নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার ফলে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সেই সাথে ত্বক নরম ও কোমল হয়।

স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে
বয়স জনিত কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি দিন দিন কমে যায়। নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার ফলে মানুষের এ সমস্যা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।

তারুণ্য ধরে রাখতে
মাশরুমে অবস্থিত উচ্চমাত্রা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো ইরগোথিওনিন এবং গ্লুটাথিওন। ২০১৭ সালে প্রকাশিত পেন স্টেট ইউনিভার্সিটি একটি গবেষণায় বলা হয়েছে এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দুটি একসাথে থাকলে তার শরীরকে শরীরবৃত্তীয় চাপ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে। উল্লেখ্য যে শরীরবৃত্তিরীয় চাপের কারণে অকালে বয়স্কতার ছাপ দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত মাশরুম খাওয়ার ফলে এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

কিভাবে মাশরুম চাষ করবেন

মাশরুম হলো ঘরের ফসল। অর্থাৎ এটি চাষ করার জন্য কোন জমির প্রয়োজন হয় না। যে কেউ চাইলে এটি ঘরের ভিতর চাষ করতে পারে। আমাদের দেশে ঘরোয়া ভাবে এবং বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করা হয়ে থাকে। সব শ্রেণী ও পেশার মানুষ মাশরুম চাষ করতে পারেন। আমাদের দেশে খাওয়ার উপযোগী সব প্রজাতির মাশরুম চাষ হয়ে থাকে।

তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয় অয়েস্টার মাশরুম বা ঝিনুক মাশরুম। মাশরুম মূলত সারা বছর চাষ করা গেলেও বর্ষাকালে ও শীতকালে এটির উৎপাদন ভালো হয়। যার কোন চাষের জমি নেই সেও চাইলে ঘরের মধ্যে মাশরুম চাষ করতে পারে। তাহলে চলুন কিভাবে মাশরুম চাষ করতে হয় সেই সম্পর্কে জেনে নিই।

মাশরুম চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণ

বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাশরুম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বিশেষ করে বর্ষাকাল ও শীতকাল মাশরুম চাষের উপযোগী সময়। এর সাথে মাশরুম চাষের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ অত্যন্ত সস্তা এবং সহজলভ্য। প্রয়োজনীয় উপকরণ হলো ধানের খড়, কাঠের গুড়া, গমের ভুসি, স্পন প্যাকেট, পাতলা পলিথিন, ছিদ্রযুক্ত কালো পলিথিন, হাইড্রোমিটার, বাঁশ, ছোট চাকু বা ব্লেড, বালতি, জীবাণুনাশক ঔষধ, স্প্রে ইত্যাদি।

মাশরুম চাষ পদ্ধতি

বাংলাদেশের মূলত অয়েস্টার মাশরুম বা ঝিনুক মাশরুম বেশি চাষ করা হয়। এই কারণে এখানে অয়েস্টার মাশরুম বা ঝিনুক মাশরুমের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো।

চাষের জন্য প্রথমে এক ইঞ্চি মাপের খর কেটে জীবাণুমুক্ত করার জন্য গরম পানিতে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো ফুটিয়ে নিতে হবে অথবা চুন ও ব্লিচিং পাউডার মেশানো পরিষ্কার পানিতে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর ফুটানো বা ভেজানো খর থেকে এমনভাবে পানি ঝরাতে হবে যেন খরে হাত দিয়ে চাপ দিলে পানি না পড়ে কিন্তু হাতে যেন ভেজা ভেজা ভাব বোঝা যায়।

এরপর একটি পলিথিন ব্যাগের মধ্যে ২ ইঞ্চি পুরু করে খর বিছিয়ে দিতে হবে। এরপর ব্যাগের ধার ঘেঁষে বীজ ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর বীজের উপরে আবার খড় এবং খরের উপরে আবার বীজ এইভাবে চার থেকে পাঁচটি স্তর তৈরি করে পলিথিনের মুখ ভালো করে বন্ধ করে দিতে হবে। তবে খর বিছানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ঘরের ভিতরে বাতাস জমে না থাকে।

এর জন্য খরকে ভালো করে চেপে দিতে হবে। এরপর প্যাকেটে ১৫ থেকে ১৬ টি ছিদ্র করে দিয়ে ছিদ্রের মুখ তুলা দিয়ে ভালো করে বন্ধ করে দিতে হবে। এতে করে প্যাকেটের ভিতর বাতাস চলাচল ঠিক থাকবে কিন্তু কোন ধূলিকণা প্রবেশ করতে পারবে না। এরপর প্যাকেটটিকে কোন অন্ধকার স্থানে রেখে দিতে হবে।

তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে জায়গাটি যাতে পরিষ্কার ও পোকামাকড়মুক্ত হয়। কেননা মাছি মাশরুম চাষের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে। কয়েক দিনের মধ্যেই প্যাকেটের বীজের জায়গায় সাদা আস্তরণ দেখা যাবে। এই সাদা আস্তরণ কে মাইসেলিয়াম বলে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ প্যাকেটটি মাইসেলিয়াম দিয়ে ভরে যাবে।

এরপর প্যাকেটটি থেকে তুলা সরিয়ে আরো কিছু ছিদ্র করে কিছুটা আলোর মধ্যে রাখতে হবে। তবে কখনোই সরাসরি রোদে রাখা যাবে না। ঘরের তাপমাত্রা ও আদ্রতা বজায় রাখার জন্য মাঝে মাঝে পানি স্প্রে করতে হবে। সেই সাথে হাইড্রোমিটারের সাহায্যে মাঝে মাঝে ঘরের তাপমাত্রা পরিমাপ করে নিতে হবে।

খেয়াল রাখতে হবে সব সময় যেন ঘরের মধ্যে মাশরুম চাষের উপযোগী তাপমাত্রা বিদ্যমান থাকে। মাইসেলিয়াম বের হওয়ার ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে মাশরুমটি খাওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে। মাশরুম ঠিক খাওয়ার উপযুক্ত হলে একে গোড়া থেকে কেটে নিতে হবে এবং কাটা জায়গা ভালো করে চেছে রাখতে হবে। তাহলে পরে সেখান থেকে আবার মাশরুম বের হবে।

এইভাবে একই প্যাকেট থেকে তিনবার মাশরুম সংগ্রহ করা যায়। আর এই পদ্ধতির মাধ্যমে অয়েস্টার বা ঝিনুক মাশরুম চাষ করা হয়।

মাশরুম খাওয়ার নিয়ম

মাশরুম হলো সবজি জাতীয় খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। এটি সাধারণত রান্না করে খাওয়া হয়। এছাড়াও এটি বিভিন্ন ধরনের স্যুপ, নুডুলস বা তরকারির সাথে খাওয়া হয়। অনেকে মাশরুম ভাজি করেও খেয়ে থাকেন। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু একটি খাবার। যে কোন খাবারের সাথে খুব সহজেই মিশিয়ে এটি খাওয়া যায়।

এটি কোন তরকারি বা খাবারে দিলে তার স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেই খাবারের পুষ্টিগুনো অনেক গুণ বেড়ে যায়। এছাড়াও বাজারে মাশরুম পাউডার পাওয়া যায় যা খাওয়া যেতে পারে। মাশরুম খাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন বিষাক্ত মাশরুম খেয়ে না ফেলি।

অর্থাৎ যেখানে সেখানে পাওয়া যায় এমন মাশরুম না খেয়ে শুধুমাত্র চাষ করা হয় এমন মাশরুম খাওয়া উচিত। বিষাক্ত মাশরুম খেলে নানা ধরনের অসুখ দেখা দিতে পারে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

মাশরুম এর দাম

কোন পণ্যের দাম কখনো এক থাকেনা। মানুষের চাহিদা ও উৎপাদন অনুযায়ী পণ্যের দাম কম বা বেশি হতে পারে। তাই আমরা এখানে আপনাদের মাশরুমের দামের একটি ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। কিছুটা কমবেশিতে এগুলো বাজারে পাওয়া যাবে। তাহলে চলুন মাশরুমের দাম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
  • তাজা ঝিনুক মাশরুমের প্রতি কেজির দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা এবং শুকনো বা গুঁড়ো ঝিনুক মাশরুমের দাম ১৪০০ টাকা।
  • ১ কেজি তাজা ঋষি মাশরুমের মূল্য ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা এবং শুকনো বা গুঁড়ো ঋষি মাশরুমের মূল্য ৪ হাজার টাকা।
  • এক কেজি তাজা কান মাশরুমের মূল্য ২০০ টাকা এবং শুকনো কান মাশরুমের মূল্য ১২০০ টাকা।

মাশরুম কোথায় বিক্রি করা হয়

মাশরুম একটি ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ। এটি খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। তাই মাশরুম চাষ যেমন যত্ন সহকারে করতে হয় তেমনি মাশরুম বিক্রি করাটাও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে বিক্রি করতে না পারলে মাশরুম চাষ করে অধিক পরিমাণ লাভ করা সম্ভব নয়। তার মাশরুম কোথায় বিক্রি করা যায়, কোথায় বিক্রি করলে অধিক লাভ পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন।

যেহেতু মাশরুম একটি সুস্বাদু খাবার এবং এটি বড় বড় রেস্টুরেন্ট, সুপার শপে বিক্রি করা হয়। তাই অধিক পরিমাণে মাশরুম উৎপাদন করতে পারলে তাদের কাছে বিক্রি করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও বাজারে বা রাস্তাঘাটে নিজ উদ্যোগে মাশরুম বিক্রি করা যেতে পারে। তবে কোন কারণে যদি মাশরুম বিক্রি করা না যায় তবে তা শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

বাজারে এই শুকনো মাশরুমেরও চাহিদা রয়েছে। এই মাশরুমটিকে পানিতে ভিজালে আবার তাজা মাশরুমে পরিণত হয়। এছাড়াও মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করা যেতে পারে। তাছাড়া অনেকে অনলাইনে মাধ্যমে মাশরুম বিক্রি করে থাকেন। কেউ যদি মাশরুম চাষ করে থাকে তবে তার বিক্রি করতে কোন সমস্যা হবে না।

মাশরুম চাষের প্রয়োজনীয়তা

মাশরুম একটি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। এতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও প্রোটিন রয়েছে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীরকে নানা রকম রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। যে কেউ চাইলে মাশরুম চাষ করতে পারে। মাশরুম চাষ করার জন্য জমির প্রয়োজন হয় না। এটি ঘরের মধ্যে চাষ করা যায়।

মাশরুম চাষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। মাশরুম চাষ করার ফলে মাশরুম চাষি স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। যেহেতু মাশরুম চাষে তেমন কোন পরিশ্রমের দরকার হয় না তাই অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এটি চাষ করা সম্ভব। এতে করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। এছাড়াও মাশরুমে অবস্থিত প্রোটিন শরীরের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মাশরুম চাষ করার ফলে মাশরুম চাষি তার পরিবারের সদস্যের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। বহির্বিশ্বে মাশরুমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় অধিক পরিমাণ মাশরুম উৎপাদন করলে তা বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এতে করে একদিকে সে যেমন উপকৃত হবে তেমনি দেশ ও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।

মাশরুমের অপকারিতা

মাশরুম একটি খুবই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবার হলেও এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয়। তেমনি মাশরুমও অতিরিক্ত খেলে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেই সাথে যেখানে সেখানে জন্ম নেয়া মাশরুম কোন অবস্থাতেই খাওয়া উচিত নয়।

কেননা এদের অধিকাংশ মাশরুমই বিষাক্ত। তাই সঠিক মাশরুম চিনতে না পারলে শুধুমাত্র চাষ করা মাশরুমে খাওয়া উচিত। বিষাক্ত মাশরুম একবার খেয়ে ফেললে তা নানা রকম ক্ষতি সাধন করতে পারে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

বিষাক্ত মাশরুম চেনার উপায়

মাশরুম কিনার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে যেমন মাশরুমটি যেন তাজা, মোটামুটি শক্ত ও গোটা থাকে। কোন পোকা কিংবা প্রাণীর কামড় দেওয়া মাশরুম কোন অবস্থাতে কিনা ঠিক নয়। আবার আমাদের আশেপাশে যে ব্যাঙের ছাতা দেখতে পাওয়া যায় এটিও এক ধরনের মাশরুম। তবে এটি বিষাক্ত মাশরুম।

ছাতার মতো আকৃতির পাশাপাশি এর কাণ্ডে থাকে একটি সাদা রিং। এই মাশরুমগুলো পুরনো হলে বাদামি রং ধারণ করে। আরো এক ধরনের মাশরুম রয়েছে যেগুলোকে মোরেল মাশরুম বলে। এ মাশরুমের উপরের অংশ কিছুটা কুচকানো ও লম্বাটে।

যদি কোন মাশরুমের উপরের অংশ এলোমেলোভাবে চুপসে থাকে এবং তা দেখতে আলগা টুপির মতো মনে হয় তবে সে মাশরুম খাওয়া যাবে না। এছাড়াও মিষ্টি গন্ধযুক্ত, কমলা বা বাদামী বর্ণের মাশরুম সাধারণত বিষাক্ত হয়ে থাকে। তাই এসব মাশরুম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

শেষ কথা

মাশরুম খুবই পুষ্টিকর ও অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার হওয়ার কারণে আমাদের সকলেরই মাশরুম খাওয়ার প্রতি নজর দিতে হবে। সেই সাথে আমাদের খাদ্য তালিকায় মাশরুম যুক্ত করতে হবে। এছাড়াও মাশরুম চাষ করে অনেকেই লাভবান হয়েছেন। তাই কারো যদি অবসর সময় থেকে থাকে তবে সে বসে না থেকে বাড়িতে মাশরুম চাষ শুরু করতে পারে।

প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি যদি উপকৃত হন তবে এই আর্টিকেলটি আপনি আপনার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url