OrdinaryITPostAd

ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম এবং ২০ টি উপকারিতা-কোন রঙের ক্যাপসিকাম বেশি উপকারী

প্রিয় পাঠক, আপনি কি ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন। তাই দেরি না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা
এছাড়াও আপনি এই আর্টিকেল করার মাধ্যমে কোন রঙের ক্যাপসিকাম বেশি উপকারী সে সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। যেহেতু ক্যাপসিকাম একটি পুষ্টিকর খাদ্য তাই এর সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা থাকা অতীব জরুরী। আর এজন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

ক্যাপসিকাম এক ধরনের সবজি যা সাধারণত কোন খাবারকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করে। অনেকে এটিকে খাবার সাজাতে ব্যবহার করে থাকেন। আবার অনেকে এটি সালাদ হিসেবে খেতে পছন্দ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সুশি জাতীয় খাদ্যে ক্যাপসিকাম এর ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান যার শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি অনেক পুষ্টিকার হওয়ার সত্বেও এতে ক্যালোরির পরিমাণ অনেক কম হওয়ার কারণে যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ইচ্ছুক তারা এটি নিয়মিত খেতে পারেন।

এতে করে একদিকে যেমন শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে তেমনি অন্যদিকে শরীর অতিরিক্ত ক্যালরি থেকে মুক্ত থাকবে। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ক্যাপসিকাম সাধারণত লাল, হলুদ ও সবুজ এই তিন রঙের হয়ে থাকে। ক্যাপসিকাম রান্না ও কাঁচা দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়।

তবে বিশেষজ্ঞরা রান্না করে খাওয়ার চেয়ে কাঁচা খাওয়া খেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কেননা এটি উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করার ফলে এতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে দিন দিন মানুষের কাছে এটি জনপ্রিয় খাদ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে।

নিজে ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আলোচনা শুরু করা যাক।

ক্যাপসিকাম খাওয়ার নিয়ম

ক্যাপসিকাম অনেক পুষ্টিকর একটি খাবার। এটি খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম/উপায় রয়েছে। কেউ চাইলে নুডুলস এর সাথে ক্যাপসিকাম মিশিয়ে খেতে পারেন। কেউ বা স্যুপ তৈরিতে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করতে পারেন। আবার কেউ বিভিন্ন ধরনের সবজির সাথে ব্যবহার করে খেতে পারেন।

এছাড়াও আরো অনেক ধরনের উপায় রয়েছে। আমরা অনেকেই কমবেশি ক্যাপসিকাম খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা সঠিক পদ্ধতিতে কিভাবে ক্যাপসিকাম খেলে এর সর্বোচ্চ উপকারিতা পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে ধারণা রাখিনা। মূলত মানুষজন ক্যাপসিকাম খাবারের স্বাদ বাড়াতে ও খাবার কে আকর্ষণীয় করতে ব্যবহার করে থাকে।

ক্যাপসিকাম বিভিন্নভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। তবে এটি রান্না করে খেলে এর মধ্যে বিদ্যমান সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় না। কেননা অতিরিক্ততা আপে রান্না করার ফলে এই পুষ্টি উপাদান গুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাই ক্যাপসিকামে অবস্থিত পুষ্টিগুণ পরিপূর্ণভাবে পেতে চাইলে এটি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া উচিত।

এজন্য একে সালাদ হিসাবে গ্রহণ করা যেতে পারে। সালাদে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করার কারণে এর মধ্যে বিদ্যমান সকল পুষ্টিগুণ শরীর গ্রহণ করতে পারে। তবে হালকা তাপমাত্রায় রান্না করলে অথবা রান্না করার শেষ পর্যায়ে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করলে এর পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।

তাই ক্যাপসিকাম বেশি তাপমাত্রায় রান্না না করে সালাদ হিসেবে কাঁচা খাওয়ায় উত্তম। তবে এক্ষেত্রে চেষ্টা করতে হবে যেন টাটকা ক্যাপসিকাম খাওয়া যায়। এতে করে আরও বেশি পুষ্টি পাওয়া যাবে।

ক্যাপসিকাম খাওয়ার উপকারিতা

খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করতে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করা হয়। ক্যাপসিকাম এর রয়েছে নানা উপকারিতা। এতে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন, থায়ামিন, ফলিক এসিড সহ নানা রকম পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। তাই এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। গোটা বিশ্বে স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে এর জনপ্রিয়তা রয়েছে।

এটি দেখতেও অনেক সুন্দর। তাই অনেকে খাবারে শুধুমাত্র ডেকরেশনের জন্য এটি ব্যবহার করে থাকে। আমরা এখানে ক্যাপসিকামের উপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন এর উপকারিতা গুলো জেনে নেয়া যাক-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ দূর করতে সাহায্য করে। ক্যাপসিকামে থাকা ফ্ল্যাবোনয়েড ফুসফুসের ইনফেকশন হতে বাধা প্রদান করে। এছাড়াও দ্রুত শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

ব্যথা উপশম করেঃ নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার কারণে প্রবল ব্যথাও ধীরে ধীরে কমে যায়। তাই ক্যাপসিকাম কে ব্যথা উপশমকারী ওষুধ বলা হয়ে থাকে। তাই শরীরের বিভিন্ন ধরনের অপারেশনের পর চিকিৎসকরা খাদ্য তালিকায় ক্যাপসিকাম রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার ফলে শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। সেইসাথে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের জন্য এটি ঔষধ হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত এটি সবজি বা সালাদের সাথে খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে একটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে চর্বির পরিমাণ অনেক কম থাকে। ক্যাপসিকামে অনেক ফাইবার থাকার কারণে এটি খাওয়ার ফলে পেট অনেকক্ষণ ভর্তি মনে হয়। যার কারণে ক্ষুধা কম লাগে। এর ফলে অতিরিক্ত খাবার না খাওয়ার কারণে ওজন কমে যায়। এছাড়াও এটি পেটের মেদ ঝরাতেও সাহায্য করে।

হৃদযন্ত্র ভালো রাখেঃ নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার ফলে হাইপারটেনশন ও হার্ট রেট নিয়ন্ত্রণে থাকে। সেই সাথে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে যার কারণে হার্ট ভালো থাকে। এছাড়াও এতে ফ্ল্যাবোনয়েড থাকার কারণে হার্টকে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্ত রাখে।

দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ পাওয়া যায় যা চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। সেই সাথে বর্তমানে অনেক ছোট শিশুরও দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দেখা দেয়। যাদের দৃষ্টি শক্তি সমস্যা রয়েছে তাদের নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়া উচিত। নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার ফলে দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

ত্বক সুস্থ রাখেঃ ক্যাপসিকাম ত্বক সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কেননা এতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন সি ও কলেজের নামক উপাদান বিদ্যমান। আর ভিটামিন সি ত্বকের চামড়া টানটান রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সতেজ রাখে। এছাড়াও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে থাকে। তাই নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার হলে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ দেরিতে পড়ে।

পেটের সমস্যার সমাধানেঃ ক্যাপসিকামে অবস্থিত ট্যানিন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ডিজঅর্ডার পেটের বিভিন্ন রোগ সারাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ডায়রিয়া আমাশয় সহ বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এমন কি এটি পেটকে আলসারের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করেঃ ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর পরিমান ফাইবার যা খাদ্য হজমে সহায়তা করে। সেই সাথে এটি দেহের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ক্যাপসিকাম কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

চুলের গোড়া মজবুত করেঃ ক্যাপসিকাম চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে। ক্যাপসিকাম অনেক পুষ্টিগুণ হওয়ায় কারণে এতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে যা চুলের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এতে বিদ্যমান কোলাজেন চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং ডিহাইড্রো টেসটোসস্টেরন এর প্রভাবে এটি চুল ঝরে পড়া থেকে রক্ষা করে।

চুল বৃদ্ধি করেঃ চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। ক্যাপসিকাম গ্রোথ স্টিমুলেটর হিসেবে কাজ করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ক্যাপসিকামে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ বিরোধী উপাদানগুলো থাকায় এটি এন্টিক্যান্সার এজেন্ট হিসেবে কাজ করে থাকে। এতে বিদ্যমান সালফার যৌগ ও ক্যারোটিনয়েড লাইকোপেন নামক উপাদান শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হতে শরীরকে মুক্ত রাখে। সেইসাথে এটি ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি ব্যাহত করে। ক্যাপসিকামে অবস্থিত লাইকোপেন প্রোস্টেট ক্যানসার, সার্ভিক্যাল ক্যানসার ও ওভারিয়ান ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে থাকে।

ইমিউনিটি সিস্টেমকে উন্নত করেঃ ক্যাপ্টিকামে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সেইসাথে শরীরকে সুস্থ রাখে। ফলে শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেম উন্নত হয়। যেকোনো রোগ শরীরকে সহজে আক্রমণ করতে পারে না।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ ক্যালসিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি উপকারী। নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এজন্য ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়া উচিত।

আয়রনের অভাব দূর করেঃ ক্যাপসিকাম এ প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। আর ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণের সহায়তা করে। এজন্য নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার ফলে আয়রনের ঘাটতি জনিত বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

চামড়া পরিষ্কার রাখেঃ নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়ার ফলে চামড়া পরিষ্কার থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের র‌্যাস ও ব্রণের হাত থেকে চামড়াকে রক্ষা করে। এছাড়াও বিভিন্ন চর্ম রোগের হাত থেকে চামড়াকে সুরক্ষিত রাখে। এছাড়াও নিয়মিত ক্যাপসিকাম হওয়ার ফলে চামড়া টানটান থাকে।

মস্তিষ্কের টিস্যু পুনর্গঠনঃ ক্যাপসিকামে অবস্থিত ভিটামিন সি মস্তিষ্কের টিস্যুকে পুনরুজ্জীবিত করে। সেই সাথে এটি দেহের হাড়কে মজবুত করে। দেহকে সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে।

বাত ব্যথা প্রতিরোধ করেঃ বাতের ব্যথায় ক্যাপসিকাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সিনকোনা নামক জড়িবুটির সাথে ক্যাপসিকাম খেলে, তা গেঁটে বাত ও রিউমেটিক আর্থারাইটিসের উপশমে খুব ভাল কাজ করে।

কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখেঃ ক্যাপসিকাম অনে পুষ্টিকর হওয়া সত্ত্বেও এতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক কম রয়েছে। এর কারণে এটি খাওয়ার ফলে শরীরে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় না। বরং নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল কমে যায়।

মেটাবলিজম হাড় বৃদ্ধি করেঃ ক্যাপসিকাম থার্মোজেনেসিসকে কার্যকরী করে মেটাবোলিজম হার বৃদ্ধি করে।

ক্যাপসিকাম এর ব্যবহার

এতক্ষণ আমরা ক্যাপসিকাম এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। এখন আমরা ক্যাপসিকাম এর ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করব। সারা বিশ্বে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করা হয়ে থাকে খাবারের সহায়ক উপকরণ হিসেবে। ক্যাপসিকামের বেশ কয়েকটি রং রয়েছে। তবে আমাদের দেশে লালও হলুদ ক্যাপসিকাম বেশি দেখা যায়।

ক্যাপসিকাম হলো এক ধরনের সবজি। তবে এর বিশেষত্ব হলো এটি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায়। ক্যাপসিকাম বিভিন্ন সবজির সাথে রান্না করে খাওয়া যায়। সেই সাথে বিভিন্ন খাবার সাজাতে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেউ কেউ মাংসের তরকারিতে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করে থাকেন। আবার কেউ কেউ সালাদে ও নুডুলসে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করে খেয়ে থাকেন।

তবে রান্না করার থেকে কাঁচা অবস্থায় ক্যাপসিকাম খেলে বেশি পুষ্টি পাওয়া যায়। কেননা উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে এর পুষ্টিগুণ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। তবে যেকোন তরকারিতে ক্যাপসিকাম ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া ও ক্যাপসিকাম দিয়ে বিভিন্ন ধরনের চপ বানানো যায়।

লাল ক্যাপসিকামের উপকারিতা

ক্যাপসিকাম মূলত একটি মরিচ জাতীয় সবজি। এটি প্রধানত তিনটি কালারের দেখতে পাওয়া যায় যেমন লাল সবুজ এবং হলুদ। এখানে আমরা লাল ক্যাপসিকাম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন লাল ক্যাপসিকামের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
  • লাল ক্যাপসিকামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকে। আর ভিটামিন সি শরীরে আয়রন শোষণ করতে সাহায্য করে। তাই যারা রক্তশূন্যতায় ভুগছেন তারা এটি নিয়মিত খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • লাল ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার বিদ্যমান থাকায় তা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
  • মানসিক চাপ, ক্লান্তি এবং অবসাদ দূর করতে লাল ক্যাপসিকাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এটি শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে এবং শরীরের বিভিন্ন ধরনের জ্বালা যন্ত্রণা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • লাল ক্যাপসিকামে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আর এই কোলাজেন ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করে। সেই সাথে এটি মস্তিষ্কের কোষ পুনরোজ্জীবিত করে এবং হাড়কে মজবুত করে।
  • লাল ক্যাপসিকামে বিদ্যমান ভিটামিন সি চুলের সুস্থতার জন্য অনেক বেশি উপকারী। এটি চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে এবং চুল পড়া রোধ করে। সেই সাথে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে যার কারণে খুশি হয় না।
  • নিয়মিত লাল ক্যাপসিকাম খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে শরীর সুস্থ থাকে। এছাড়াও এটি ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ধরনের জটিল ও কঠিন রোগের বিরুদ্ধে শরীরের প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

সবুজ ক্যাপসিকামের উপকারিতা

সবুজ ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকায় এটি শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। সবুজ ক্যাপসিকামের উপকারিতা নিচে বর্ণনা করা হলোঃ
  • সবুজ ক্যাপসিকামে রয়েছে লুটেইন নামক উপাদান যা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে কাজ করে থাকে। এছাড়াও চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে এই ক্যাপসিকাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও বার্ধক্য জনিত অন্ধত্ব দূর করতে সাহায্য করে।
  • সবুজ ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার বিদ্যমান থাকায় এটি হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও ফাইবার সহজে হজম হয় না বলে ক্ষুধা কম লাগে। এর কারণে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাচ্ছেন তারা প্রতিদিন সবুজ ক্যাপসিকাম খেতে পারেন।
  • সবুজ ক্যাপসিক্যাম রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে। যার কারণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে এবং হার্ট সু ভালো থাকে।

হলুদ ক্যাপসিকামের উপকারিতা

  • হলুদ ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • এটি ফ্রিরেডিকেলের সাথে লড়াই করে এবং ত্বককে সুস্থ রাখে। সেই সাথে কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
  • এতে বিদ্যমান এন্ড এক্সিডেন্ট শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • হলুদ ক্যাপসিকাম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ক্যাপসিকাম এর দাম

ক্যাপসিকাম পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি সবজি। এটি একটি বিদেশী সবজি। তবে বর্তমানে অনেক জায়গায় ক্যাপসিকামের চাষ করা হয়ে থাকে। দেশের মানুষের চালিত পূরণ করে এই সবজিটি বিদেশের রপ্তানি করা হয়। সাধারণত লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম এর দাম সবুজ ক্যাপসিকামের তুলনায় একটু বেশি।

লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে ক্যাপসিকাম এর সাইজের উপর এর দাম উঠানামা করে। তবে সবুজ ক্যাপসিকাম ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়ে থাকে। তবে ক্যাপসিকাম এর চাহিদা একেক এলাকায় একেক রকম হওয়ার কারণে এর দামের কিছুটা রদবদল দেখা যায়।

ক্যাপসিকাম এর স্বাদ

লাল কাঁপছে কামে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ চিনি বিদ্যমান থাকার কারণে এটির স্বাদ মিষ্টি জাতীয় হয়ে থাকে। হলুদ ক্যাপসিকামে ও প্রায় লাল জাতের মতই চিনি থাকে যার কারণে এটিও খেতে মিষ্টি লাগে। তবে সবুজ ক্যাপসিকামে চিনির পরিমাণ কম থাকার কারণে এর স্বাদ কিছুটা তিক্ত ধরনের।

লাল নাকি সবুজ কোন রঙের ক্যাপসিকাম বেশি উপকারী

লাল ও সবুজ ক্যাপসিকাম এর মধ্যে লালটি বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ার কারণে লাল ক্যাপসিকাম শরীরের জন্য বেশি উপকারী। এছাড়া লাল ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকায় এটি অনেক বেশি উপকারী।

যদিও সবুজ ক্যাপসিকামও বিভিন্ন পুষ্টি উপকরণে ভরপুর তারপরও সবুজ ক্যাপসিকামের তুলনায় লাল ক্যাপসিকাম শরীরের জন্য বেশি উপকারী।

পরিশেষে

ক্যাপসিকাম আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। সেই সাথে একটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। তাই আমাদের নিয়মিত ক্যাপসিকাম খাওয়া উচিত। তবে উচ্চ তাপমাত্রায় ক্যাপসিকাম রান্না করলে এর বিভিন্ন পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় যার কারণে এটি কাঁচা সালাদ হিসাবে খাওয়াই বেশি ভালো।

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেল পরে যদি আপনি উপকৃত হন তবে অবশ্যই তা আপনার আত্মীয় স্বজনের শেয়ার করুন এবং এই আর্টিকেল আপনার কেমন লেগেছে তা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানান। এই আর্টিকেল পুরোটা পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url