ব্লগ থেকে টাকা আয় কিভাবে করবেন? ব্লগ লিখে আয় করার উপায়

আপনি কি ব্লগিং করতে চাচ্ছেন? কিন্তু আপনি এটা নিয়ে কিছুটা কনফিউজ যে কিভাবে ব্লগিং করে টাকা আয় করবেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা কিভাবে ব্লগিং করার মাধ্যমে টাকা উপার্জন করা যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই দেরি না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা সম্ভব। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য এই ব্লগিংকে বেছে নিচ্ছে। তাই আপনিও এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে একজন সফল ব্লগার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন।

ব্লক হলো এমন একটি প্রক্রিয়াটি যেখানে একজন বা একাধিক ব্যক্তি অনলাইনে নিয়মিত কনটেন্ট গুলোকে পাবলিশ করে থাকেন। আপনারা হয়তো অনেকেই অবগত নন যে ব্লক লিখেও অর্থ উপার্জন করা যায়। সেজন্য আজকে আপনাদের জানাবো ব্লগ লিখে অর্থ উপার্জনের উপায় সম্পর্কে।

ব্লগিং এর প্রক্রিয়াতে একজন ব্যক্তি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়মিত নিজের ওয়েবসাইটের জন্য কিছু বিশেষ কাজগুলোকে করে থাকেন এবং তিনি তার ওয়েবসাইটে ব্লক পোস্ট পাবলিশ করেন। আপনি ব্লক শব্দটি অনেকের মুখে বা অনেক জায়গায় শুনেছেন, কিন্তু আপনি কি জানেন ব্লক মানে কি সেটা জেনে নেওয়াটা কিন্তু আপনার জন্য অনেক লাভজনক হতে পারে।

ব্লক মানে হচ্ছে কোন বিষয় সম্পর্কে একটি আর্টিকেল। যেখানে ওই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলা থাকবে। আবার অনেকের জন্য ব্লক হলো ইন্টারনেটে কিছু জানার বা শেখার মাধ্যম। চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্লগ লিখে অর্থ উপার্জনের উপায় সম্পর্কে।

সহজ কথায় বললে ব্লক হলো আপনার ব্যক্তিগত ডায়েরির মতন। এটা এমন একটা ডায়েরী যেখানে আপনি আপনার মনের মত যা খুশি লিখতে পারবেন। তবে তা অবশ্যই যুক্তিসঙ্গত ও তথ্যবহ হতে হবে। এখানে আপনি কবিতা, পত্রিকা, শায়ে্রি, SMS, tutorials, stories সহ বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে পারবেন। আপনি শুধু খেয়াল রাখবেন যাতে আপনি যেটা লিখছেন সেটা পুরো পরিষ্কারভাবে লেখা হয়।

এর কারণ হলো এমনিতে আপনার পার্সোনাল ডাইরি কেউ দেখতে না পারলেও ব্লগে আপনি যেটা লিখবেন সেটা অনেকেই অনলাইনে পড়বে, আর আপনার লেখা আর্টিকেল যদি কারো ভালোই না লাগে তাহলে আপনি ব্লগিং এ কখনোই সফল হতে পারবেন না। পার্সোনাল ডায়রির মতো আপনি এখানে হাতে-কলমে লিখতে পারবেন না। ব্লগ লেখার জন্য আপনার কিছু জিনিসের প্রয়োজন হবে।

সেগুলো হলো একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ, ইন্টারনেট কানেক্ট, সাধারণ কম্পিউটার knowledge এবং যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখবেন তার সঠিক জ্ঞান। এগুলো যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে ইন্টারনেটে এমন কিছু প্ল্যাটফর্মস বা ওয়েবসাইট আছে যারা আপনাকে একটি ফ্রি ব্লক তৈরি করার সুবিধা দেবেন। আশা করি ব্লক কি সেটা আপনি খুব সহজে বুঝতে পেরেছেন।

আপনারা অনেকেই জিজ্ঞাসা করে থাকেন ব্লগে কিভাবে ভিজিটর আসবে? এর উত্তর হলো গুগল সার্চ, ইয়াহু সাচ, সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্য ব্লগ থেকে। ব্লক সাকসেসফুল করার জন্য আর ব্লগ লিখে টাকা আয় করার জন্য আপনার প্রচুর ভিজিটরের প্রয়োজন হবে। আর আপনি নিজের ব্লগে ফ্রী traffic আর ভিজিটরস কেবল google এবং ইয়াহু সার্চের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পাবেন।

দেখতে গেলে ব্লক থেকে আয় করার অনেক উপায় আছে। কিন্তু সব উপায় এর মধ্যে সবার থেকে ভালো এবং বেশি ইনকাম হওয়ার উপায় মূলত তিনটি। ব্লক থেকে আনিং এর এই তিনটি উপায় হলো Google AdSense, Affiliate marketing, এবং product promotion। এই তিনটি উপায়ের মধ্যে যে কোন একটি উপায় বেছে নেওয়ার মাধ্যমে লোকেরা নিজের ব্লক থেকে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করছেন। নিচে এই তিনটি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

গুগল এডসেন্স একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে ইনকাম করার থেকে সহজ এবং সবচেয়ে ভালো উপায়। গুগল এডসেন্স এমন একটি সার্ভিস বা প্রোগ্রাম যে আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আপনাকে টাকা কামানোর সুযোগ করে দেয়। এইসব বিজ্ঞাপন গুলো অনেক রকমের হতে পারে যেমন image ads, video ads, লিংক ads ইত্যাদি।

আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটে Google Adsense এর দেওয়া বিজ্ঞাপনগুলিতে ভিজিটররা ক্লিক করবেন তখন আপনার Adsense account এ কিছু টাকা ইনকাম হয়। এই ছোট ছোট এড্স ক্লিক এবং টাকা এক সময় গিয়ে হাজার হাজার টাকাতে পরিণত হয় যা আপনি এডসেন্স একাউন্টে পেয়ে যাবেন।

আর যখন আপনি ১০০ ডলার নিজের এড্রেস একাউন্টে করে ফেলবেন তখন আপনি চাইলে আপনার টাকা আপনার ব্যাংক একাউন্টে নিতে পারবেন। গুগল এডসেন্স থেকে প্রচুর টাকা আয় করার জন্য আপনার ব্লগে ট্রাফিক বা ভিজিটরদের সংখ্যা ভালো হতে হবে। কারণ যখন ব্লগে ভিজিটর আসবে তখন google এডসেন্স এর দেখানো এডে বেশি বেশি ক্লিক পড়বে।

এতে করে আপনার ডলারও বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রথমে আপনাকে নিজের ব্লগে ভিজিটর এর সংখ্যা কিভাবে বাড়াবেন সেটা ভাবতে হবে। এরপর আপনি আপনার ওয়েবসাইটে এডসেন্সের দেওয়া বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে অনলাইনে ঘরে বসেই টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

গুগল এডসেন্স এরপর এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্লক থেকে অনলাইন টাকা আয় করার সবচেয়ে ভালো উপায়। এফিলিয়েন্ট মার্কেটিং অনেক সোজা জিনিস এখানে আপনার ইনকামটা কম্পিটিশন হিসেবে দেওয়া হয়। এফিলিয়াট মার্কেটিং কি সেটা আগে জেনে নিন।

"এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন এক ধরনের উপায় যেখানে পণ্য বিক্রি করার মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করে আয় করা যায়। এখানে আপনি যে কোন জিনিস যেটা অনলাইনে কেনা যায় নিজের ব্লগে promote করে ইনকাম করতে পারেন।"

এক্ষেত্রে বিভিন্ন অনলাইন স্টোর যেমন Amazon.in, Flipkart.com, দারাজ ইত্যাদি অনলাইন মার্কেটপ্লেসের বিভিন্ন products যেমন টিভি, ল্যাপটপ, মোবাইল ইত্যাদির প্রচার নিজের ব্লগে করা যায়। এ প্রচার গুলি বিশেষ affiliate link এর দ্বারা ব্লগে করা হয় যেটা আপনাকে অনলাইন স্টোর গুলিতে afiliate account বানানোর পরে দেওয়া হবে।

এখন আপনার লাগানো অ্যাফিলিয়েট লিংক বা বিজ্ঞাপন থেকে যদি কেউ অনলাইন কোন প্রডাক্ট purchase করেন তাহলে আপনাকে সেই প্রোডাক্টের উপর commission দেওয়া হয়। আর এভাবেই আপনাকে যে কোন প্রোডাক্ট এর অ্যাফিলিয়েট লিংক নিজের ব্লগে লাগিয়ে promote আর advertise করে unlimited commission ইনকাম করতে পারবেন।

তবে অবশ্যই মনে রাখবেন আপনার advertise করা product বা জিনিসটিকে কেউ কিনলে আপনি তার কমিশন পাবেন নয়তো আপনি কোন কমিশন পাবেন না।

গুগল এডসেন্স এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পর ব্লক লিখে টাকা আয় করার আরেকটা সহজ উপায় আছে হলো লোকাল প্রোডাক্ট প্রমোশন। যখন আপনার ব্লগে অনেক ট্রাফিক ও ভিজিটরস আসা শুরু হয়ে যাবে তখন নিজের লোকাল জায়গার যে কোন জিনিসের বা দোকানের বিজ্ঞাপন আপনার নিজের ব্লগে করতে পারবেন।

Advertisement বা product promotion এর জন্য আপনি আশেপাশে দোকান মালিক বা স্টোরের ম্যানেজারদের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। আপনার ব্লগে করা দোকান বা প্রোডাক্ট এর বিজ্ঞাপনের বিনিময় আপনি কিছু টাকা চার্জ হিসেবে নিতে পারেন।

আপনি হয়তো জানেন না যে আজকাল লোকাল দোকান থেকে শুরু করে সবাই অনলাইনে বিজ্ঞাপনকে অনেকটাই লাভজনক মনে করে। আর তাই আপনার ব্লগে যদি ট্রাফিক বা ভিজিটরস অনেক আসে তাহলে আপনি এই সুযোগে নিজের ব্লগ থেকে প্রচুর টাকা কামিয়ে নিতে পারবেন।

দেখুন আপনি নিজের ব্লক থেকে কি ধরনের আয় করতে পারবেন সেটা সম্পূর্ণটা নির্ভর করে আপনার ব্লগের উপর। আপনার ব্লগে প্রত্যেকদিন কি পরিমান ভিজিটর বা ট্রাফিক আসছে, আপনি কোন মাধ্যমে টাকা ইনকাম করছেন এবং ট্রাফিক কোন দেশের তার ওপর নির্ভর করে আপনার কিরূপ ইনকাম হবে।

ইউএস, ক্যানাডা, ইউকে ইত্যাদির মত উন্নত দেশ থেকে যদি আপনার ব্লগে ভিজিটর আসছে তাহলে অনেক কম ট্রাফিক দিয়েও অনেক সহজে মাসে ৫০০ থেকে ১০০০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন। কিন্তু যদি আপনার ব্লগে মূলত ইন্ডিয়া বা বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে ভিজিটর আসে তাহলে ৫০০ ডলার ইনকাম করতে প্রত্যেকদিন ২০০০ থেকে ৩০০০ ভিজিটর প্রয়োজন হবে।

তবে ব্লক থেকে কি ধরনের আয় হয় যদি সোজাভাবে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয় তাহলে বলতে পারেন যদি সঠিক নিয়ম মেনে ব্লগিং করা হয় তাহলে মাস শেষে পঞ্চাশ হাজার টাকা আরামে ইনকাম করতে পারবেন।

আবার বিশ্বজুড়ে এরকম হাজার হাজার ব্লগাররা আছেন যারা মাসে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করে থাকেন ব্লগিংয়ের মাধ্যমে। তাই আপনি কতটা মন দিয়ে কাজ করছেন, ব্লগিং এ কতটা এগিয়ে চলেছেন, নতুন কি কি শিখতে পারছেন এগুলোর উপরে আপনার ইনকাম নির্ভরশীল।

ব্লগ লিখে অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে আপনাকে লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশীয় লেখকরা অবশ্যই ব্লগ লেখার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। কেননা তারা তাদের নিজের ভাষায় লেখালেখি করে। তবে আপনাকে অবশ্যই লেখার গুণগত মান ও যে বিষয়ে ব্লগ লিখছেন সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে হবে। এছাড়াও একজন বিদেশি তার লেখার গুণগতমান উন্নত করার মাধ্যমে ব্লগ লিখতে পারে।

আপনার লেখার দক্ষতা উন্নত করার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো বেশি বেশি পড়া এবং লেখা। আপনি যত বেশি করবেন তত বেশি আপনার ভাষার জ্ঞান বাড়বে এবং আরো গভীর ভাবে আপনি শব্দের মাধ্যমে নিজের চিন্তা ভাবনা প্রকাশ করতে পারবেন ব্লগিংয়ের মাধ্যমে। এছাড়া পাঠকদের জন্য তথ্যবহুল ব্লক পোস্ট লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে।

আর এজন্যই অনলাইন বা অফলাইনে গবেষণা চালিয়ে আপনাকে ব্লগ লিখতে হবে। অনলাইন অথবা অফলাইনে অর্থ দিয়ে বা বিনামূল্যে বিভিন্ন কোর্সগুলো শিখতে পারেন। যেখানে প্রশিক্ষকরা ব্লক লেখার বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে আপনাকে দিকনির্দেশনা দিবে।

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, ব্লগিং অনেকের কাছেই আবেগের বিষয়। আবার অনেকের কাছে শখ। আর আপনি যদি আপনার ব্লগিং পেশায় পরিণত করতে চান তবে অবশ্যই বিশ্বস্ত কোন প্রতিষ্ঠান থেকে ব্লগিংয়ের উপর কোর্স সম্পন্ন করতে হবে। এটি বহুমুখী একটি কাজ। ব্লকের মালিক হিসেবে আপনাকে একই সঙ্গে সিইও, পরিচালক কর্মীসহ বেশ কয়েকটি ভূমিকা পালন করতে হবে। ব্লক থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য আপনাকে উপরে উল্লেখিত সব প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনি এটি আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন। যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে।