OrdinaryITPostAd

সকালে নাকি রাতে কোন সময় গোসল করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো সেই সম্পর্কে জেনে নিন

প্রিয় পাঠক, আপনি কি জানেন কোন সময় গোসল করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, সকালে নাকি রাতে? যদি না জেনে থাকেন তবে আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা কোন সময় গোসল করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
সকালে নাকি রাতে কোন সময় গোসল করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো
এছাড়াও আর এই আর্টিকেল পরের মাধ্যমে আপনি গরম পানি ও ঠান্ডা পানিতে গোসল করার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই এই সমস্ত কিছু জানার জন্য আপনাকে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে। তাই দেরি না করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

ভূমিকা

আমরা সাধারনতর করে থাকি ত্বককে পরিষ্কার করার জন্য। এছাড়াও গোসল করার আরো অনেক উপকার হয়েছে। গোসল করার ফলে আমাদের ত্বকে জমে থাকা মহিলা ও রোগ জীবাণুর পাশাপাশি অন্যান্য দূষণকারী পদার্থ ও দূর হয়ে যায়। আমরা সকালে বা রাতে যখনই গোসল করি না কেন এর জন্য ত্বকে তেমন কোন প্রভাব পড়ে না।

তবে রাতের তুলনায় সকালে গোসল করা শরীরের পক্ষে একটু বেশি উপকারী। এছাড়াও গবেষণায় উঠে এসেছে যদি কেউ ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করে তবে তার মানসিক চাপ অনেকাংশে কমে যায়। সেই সাথে নিয়মিত গোসল করার ফলে শরীর থেকে দুর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।

তাই আমাদের নিজেদের সুস্থতার জন্য নিয়মিত গোসল করা উচিত। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে নিয়মিত গোসল করলে বেশ কিছু ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক তাদের নিয়মিত গোসল না করে দু একদিন পরপর গোসল করা উচিত। এতে করে তাদের ত্বক ভালো থাকবে।

এই আর্টিকেলে আমরা গোসল করা সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেছি। তাই সেসব কিছু জানতে আপনাকে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে।

গোসল করার সঠিক নিয়ম

আমরা সাধারণত পরিষ্কার হওয়ার জন্য গোসল করে থাকি। অনেকে গোসল খুব তাড়াতাড়ি করে থাকে আবার অনেকে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করে গোসল করতে। আবার অনেকে আছে দীর্ঘদিন গোসল করেন না। যেমন তেমন ভাবে গোসল করলে সঠিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া যায় না। গোসল করার একটি নিয়ম আছে। তাহলে চলুন গোসল করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই-

গোসল করার জন্য হাতে ১৫-২০ মিনিট সময় থাকতে হবে। গোসল করার সময় অবশ্যই গামছা বা তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে যেতে হবে। এরপর প্রথমে পানি দিয়ে সমস্ত শরীর ভিজাতে হবে। যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক তাদের জন্য হালকা গরম পানি ব্যবহার করাই ভালো। তবে তারাও মাথায় দেওয়ার ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন।

ভালোভাবে পানি দিয়ে সমস্ত শরীর ভেজানোর পর শরীরের সাবান মাখতে হবে। তখন অনুযায়ী সাবান ব্যবহার করতে হবে। যেমন রুক্ষ ত্বকের জন্য গ্লিসারিনযুক্ত সাবান এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মিল্ক সোপ ব্যবহার করা ভালো। এরপর ভালো হবে স্ক্রাবিং করতে হবে। এতে করে শরীরের ময়লা দূর হবে। তারপর ভালো হবে গা ধুয়ে নিতে হবে। গোসলের সময় মুখের আলাদা যত্ন নিতে হবে।

গায়ে মাখার সাবান কখনোই মুখে ব্যবহার করা যাবে না। মুখে ব্যবহারের জন্য ফেসওয়াশ রাখতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ শরীর ও মাথা ভালো করে ভিজিয়ে গোসল করতে হবে। সপ্তাহে ২/৩ বার মাথায় শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। এবার পরিষ্কার গামছা বা তোয়ালে দিয়ে গা ভালো হবে মুছে নিতে হবে।

যদি আপনি প্রতিদিন এভাবে গোসল করতে পারেন তবে এতে আপনার সময়ও খুব বেশি লাগবে না সেই সাথে আপনি পুরোপুরি পরিষ্কার হতে পারবেন। এতে করে শরীরের মন দুটিই ভালো থাকবে।

কেন গোসল ফরজ হয়

আমরা সাধারণত পাক পবিত্র হওয়ার জন্য গোসল করে থাকি। বিভিন্ন কারণে আমাদের গোসল ফরজ হয়ে থাকে। আর কারো উপর গোসল ফরজ হলে সে যতক্ষণ না পর্যন্ত ফরজ গোসল আদায় করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি নাপাক থাকবে। স্বামী স্ত্রী সহবাস করলে গোসল ফরজ হয়।

সেই সাথে জাগ্রত বা নিদ্রা অবস্থায় উত্তেজনার সাথে যদি বীর্যপাত হয় তবে তার গোসল ফরজ হয়। তবে এক্ষেত্রে উত্তেজনা কোন বিষয় নয়। যদি বীর্যপাত হয় তবে তার গোসল ফরজ হয়। ঘুমের মধ্যে স্বপ্নদোষ হলে তার জন্য গোসল ফরজ হয়ে থাকে।

এছাড়াও নারীদের মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে পবিত্র হওয়ার জন্য তাদের ফরজ গোসল করতে হয়। এছাড়াও ফরজ গোসল হওয়ার আরো অনেক কারণ রয়েছে। আমাদের কারো উপর গোসল ফরজ হলে তাকে অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব ফরজ গোসল আদায় করতে হবে।

ফরজ গোসল করার নিয়ম

আমাদের যখন গোসল ফরজ হয় তখন আমাদের উত্তমরূপে ফরজ গোসল করা উচিত। গোসল ফরজ হওয়ার পর যদি আমরা ফরজ গোসল না করি তবে আমাদের নামাজ কবুল হবে না। সেইসাথে আমরা কোরআন তেলাওয়াত ও স্পর্শ করতে পারবোনা। এর জন্য খুব সাবধানতার সহিত ফরজ গোসল করতে হবে। নিচে ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম দেয়া হলো-
  • সর্বপ্রথম নিয়্যাত করতে হবে। নিয়্যাত সব সময় মনে মনে করতে হয় মুখে নয়।
  • এরপর দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ধৌত করতে হবে।
  • এবার ডান হাতে পানি নিয়ে বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ও তার আশেপাশে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এছাড়াও যদি শরীরের অন্য কোন জায়গায় নাপাক লেগে থাকে সেটি ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
  • এরপর বাম হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
  • এবার বিসমিল্লাহর সহিত উত্তমরূপে ওজু করে নিতে হবে। কিন্তু দুই পা ধোয়া যাবেনা।
  • ওজু শেষ করে প্রথমে ডান কাঁধে তিনবার পানি ঢালতে হবে এরপর বাম কাঁধে তিনবার পানি ঢালতে হবে।
  • এরপর মাথায় পানি ঢালতে হবে এবং উত্তমরূপে সমস্ত শরীর ধৌত করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে শরীরের কোন অংশ যেন শুকনো না থাকে। এমনকি শরীরের একটি লোম যেন শুকনো না থাকে। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে আগে মাথায় পানি ঢেলে নিয়ে এরপর দুই কাঁধে পানি ঢালতে পারেন। দুই নিয়মেই ফরজ গোসল হয়ে যাবে।
  • সবশেষে দুই পা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে ডান পা তিন বার ধুতে হবে এরপর বাম পা তিনবার ধুতে হবে।
এভাবে উত্তম রূপে যদি কেউ গোসল করে থাকে তবে তার ফরজ গোসল আদায় হয়ে যাবে। এরপর যদি তার ওজু না ভাঙ্গে তবে সে চাইলেই এই ওজুতেই নামাজ পড়তে পারবে।

প্রতিদিন গোসল করার উপকারিতা

আমরা প্রত্যেকেই সাধারণত সকালে কিংবা দুপুরে গোসল করে থাকি নিজেদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে। নিয়মিত গোসল করলে অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। আমরা যখন অনেক পরিশ্রম করে ক্লান্ত হয়ে যায় ঠিক সে সময় শরীর ও মনকে চাঙ্গা করে তুলতে গোসলের কোন বিকল্প নেই। আসুন আমরা গোসলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই-
  • শরীরের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো গোসল করা। সঠিক নিয়মে গোসল করলে খুব সহজেই শরীরের দুর্গন্ধ দূর করা যায়।
  • গোসল করার আরেকটি সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো গোসল করার ফলে শরীরের ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে যায়। কেউ যদি অনেক পরিশ্রম করার পর ক্লান্ত হয়ে যায় তবে সেই সময় শরীরের মনকে চাঙ্গা করে তুলতে গোসলের কোন বিকল্প নেই।
  • গোসলের সময় সারা শরীরে রক্ত প্রবাহের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে করে হৃদপিন্ডের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে।
  • নিয়মিত গোসল করার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেইসাথে মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশ ঘটে ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে গোসল করার সময় আমাদের মস্তিষ্কের ইনফ্লেমেশন রেট কমতে শুরু করে।
  • গবেষণায় দেখা গেছে ডায়াবেটিস রোগীরা যদি টানা ২১ দিন উষ্ণ গরম পানিতে ২০-৩০ মিনিট গোসল করে তবে তার রক্তের শর্করা মাত্রা ১৩% পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এতে করে রাখতে সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। যার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
  • অনবরত কাজ করার ফলে যখন শরীরের পেশিগুলো ক্লান্ত হয়ে যায় তখন যদি গোসল করা যায় তবে খুব সহজেই পেশিগুলো আবার সতেজতা ফিরে পায়। অর্থাৎ গোসল পেশীর কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • আমরা যখন গোসলের সময় ঠান্ডা পানি ব্যবহার করি তখন শরীরে ঠান্ডা পানি স্পর্শ করার সাথে সাথে শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। এতে করে রক্ত প্রবাহের উন্নতি ঘটে।
  • হালকা গরম পানিতে গোসল করার ফলে ভাসকুলার এবং লিম্ফ সিস্টেম থেকে প্রচুর মাত্রায় ইমিউন সেলের জন্ম হতে শুরু করে। এতে করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। এর ফলে শরীর সহজে যে কোন রোগে আক্রান্ত হয় না।
  • নিয়মিত ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কেননা প্রতিবার শরীরে ঠান্ডা পানি ঢালার সাথে সাথে ফুসফুস সংকুচিত হয়। বারবার এমনটা হওয়ার কারণে ফুসফুসে অক্সিজেন বেড়ে যায় এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • সারাদিন কাজ করার পর রাতে গোসল করলে শরীরের সমস্ত ক্লান্তি দূর হওয়ার পাশাপাশি ঘুম ভালো হয়। তাই যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন রাতে গোসল করতে পারেন। এতে করে ঘুমের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
  • নিয়মিত গোসল করার ফলে শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর টক্সিন বের হয়ে যায় এতে করে ত্বক নরম কোমল থাকে। যার ফলে আপনাকে দেখতে সুন্দর লাগে।

সকালে নাকি রাতে কোন সময় গোসল করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়

আমরা অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে বাহিরে কাজের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পূর্বে গোসল করি নিই। আবার অনেকে আছে সারাদিন কাজ করার পর রাতে বাসায় এসে গোসল করে। তারা মনে করে সারাদিন কাজ করার পর যদি গোসল করা হয় তবে ওই গোসলের মাধ্যমে শরীরের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। সেই সাথে ঘুমও ভালো হয়।

গোসল সকালে বা রাতে যখনি করা হোক না কেন তার শরীরের জন্য অনেক রকম উপকার বয়ে আনে। যারা রাতে গোসল করে থাকে তারা যদি উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করে তবে তাদের শরীরের ক্লান্তি কিছুটা দূর হয়।

সেই সাথে উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করার কারণে ঘুম ভালো হওয়ার ব্যাখ্যা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। তবে এক্ষেত্রে গোসল ৩০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে হবে। আবার যদি রাতে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা হয় তবে এর থেকে তেমন কোন উপকার পাওয়া যায় না।

অন্যদিকে যারা সকলে গোসল করে থাকেন তারা ঠান্ডা বা গরম যে পানিতেই গোসল করুন না কেন গোসল করার পর তাদের শরীরে আর ঘুম ঘুম ভাব থাকে না। সেই সাথে সকালে গোসল করার কারণে শরীর ও মন দুটোই চাঙ্গা হয়। সকালে গোসল করার ফলে শরীর সারাদিন কাজ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।

তাই সবদিক বিবেচনা করে এটি প্রতিয়মান হয় যে রাতের তুলনায় সকালে গোসল করলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়। তবে রাতে গোসল করাও আমাদের শরীরের জন্য ভালো। তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যাদের ঠান্ডা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা রাতে গোসল করা থেকে বিরত থাকবেন। নয়তো বিভিন্ন ধরনের ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ঠান্ডা পানিতে গোসলের উপকারিতা

আমরা অনেকেই ঠান্ডা পানিতে আবার অনেকে গরম পানি দিয়ে গোসল করে থাকি। তবে আপনি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসলের উপকারিতা সম্পর্কে জানব আশ্চর্য হবেন। এই করবে আমরা ঠান্ডা পানিতে গোসলের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক-
  • শরীর যখন ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে আসে তখন শরীর থেকে নোরপাইনফ্রিন নিঃসরণ হয়। নোরপাইনফ্রিনের প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকার কারণে একটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভারতের সাহায্য করে। এ কারণে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • আমরা যখন ঠান্ডা পানিতে গোসল করি তখন শরীরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য দ্রুত উষ্ণ রক্ত শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সঞ্চালন হয়। এর ফলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। সেই সাথে হৃদপিন্ডের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করার ফলে শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কেননা ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে ব্রাউন অ্যাডিপোজ টিস্যু আরও সক্রিয় হয়। যার ফলে শরীরে তারপর উৎপন্ন হয়। এর ফলে শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • নিয়মিত ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে সহ্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে যে কোন ব্যথা বেদনা সহজেই সহ্য করা যায়। এছাড়াও ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে আপনার মেজাজের উন্নতি করতে পারবেন। খুব সহজেই রেগে যাবেন না।
  • ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে চুলের ন্যাচারাল তৈলাক্ততা বজায় থাকে। এর ফলে চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয় না। এতে করে চুল ভালো থাকে।
  • ঠান্ডা পানিতে গোসল করার ফলে মাথায় খুশকি পরিমাণ কমে যায়। সেই সাথে মাথা ঠান্ডা রাখতে ও মাথার চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
  • নিয়মিত ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কেননা প্রতিবার শরীরে ঠান্ডা পানি ঢালার সাথে সাথে ফুসফুস সংকুচিত হয়। বারবার এমনটা হওয়ার কারণে ফুসফুসে অক্সিজেন বেড়ে যায় এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

গরম পানিতে গোসলের উপকারিতা

ঠান্ডা পানির ন্যায় গরম পানিতে গোসল করার ফলেও আমাদের শরীরে বেশ কিছু উপকার লক্ষ্য করা যায়। সেগুলো হলো-
  • উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করার সবচেয়ে ভালো উপকারিতা হলো এতে পেশি নমনীয়তা বৃদ্ধি পায়। সেইসাথে পেশির ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
  • সারাদিন কাজ করার ফলে শরীর ক্লান্ত হয়ে গেলে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে গোসল করার কারণে শরীরের সমস্ত ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হয়ে যায়।
  • রাতে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে গোসল করার ফলে ঘুম ভালো হয়।
  • তবে সময় রেখে গিয়েছে ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরে যেসব উপকার হয়, গরম পানিতে গোসল করার হলেও অনেকটা তেমন উপকার পাওয়া যায়।
  • গরম পানিতে গোসল করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। সেই সাথে একটি শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • হালকা গরম পানিতে গোসল করার ফলে ভাসকুলার এবং লিম্ফ সিস্টেম থেকে প্রচুর মাত্রায় ইমিউন সেলের জন্ম হতে শুরু করে। এতে করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। এর ফলে শরীর সহজে যে কোন রোগে আক্রান্ত হয় না।
  • গবেষণায় দেখা গেছে ডায়াবেটিস রোগীরা যদি টানা ২১ দিন উষ্ণ গরম পানিতে ২০-৩০ মিনিট গোসল করে তবে তার রক্তের শর্করা মাত্রা ১৩% পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এতে করে রাখতে সরকারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। যার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
  • উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করার কারণে শরীরের ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার করা যায়। সেই সাথে এটি শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।

প্রতিদিন গোসল করার অপকারিতা

আমরা প্রায় সবাই প্রতিদিন গোসল করে থাকি। তবে ব্যক্তি ভেবে কারো কারো ক্ষেত্রে প্রতিদিন গোসল করার ফলে নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে। প্রতিদিন গোসল করার কারণে যেসব ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেগুলো হলো-
  • প্রতিদিন গোসল করার কারণে ত্বক অতিরিক্ত সুস্থ হয়ে যায়। এতে করে জ্বালা যন্ত্রণা হতে পারে।
  • প্রতিদিন গোসল করার কারণে বিভিন্ন ধরনের চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • নিয়মিত গোসল করার ফলে ত্বকের উপরের আবরণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে ত্বক বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে।
  • নিয়মিত সাবান দিয়ে গোসল করার ফলে শুধু ত্বকের খারাপ ব্যাকটেরিয়াই নয়, উপকারী ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস হয়ে যায়। এতে করে ত্বকের নানা ধরনের ক্ষতি হয়।
তবে নিয়মিত গোসল করার ফলে যে সবারই এমন ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বিষয়টি তেমন নয়। যাদের ত্বক শুষ্ক তাদের ক্ষেত্রে নিয়মিত গোসল না করাই ভালো। তবে যাদের ত্বক তৈলাক্ত এবং যারা অতিরিক্ত ঘামেন তাদের নিয়মিত গোসল করা উচিত। এতে করে তাদের শরীর ভালো থাকবে।

শেষ কথা

সকালে অথবা রাতে, ঠান্ডা পানি অথবা গরম পানি যেভাবে গোসল করা হোক না কেন এর থেকে নানা রকম উপকার পাওয়া যায়। তাই আমাদের প্রতিদিন সঠিক নিয়মে গোসল করতে হবে। এতে করে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে।

প্রিয় পাঠক, এ আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং আপনি যদি উপকৃত হন তবে এই আর্টিকেলটি আপনি আপনার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url