OrdinaryITPostAd

ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেটের উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহার

ইন্টারনেট সম্পর্কে আমরা সকলে কমবেশি ধারণা রাখি। কিন্তু আপনি কি ইন্টারনেটের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন? যদি না জেনে থাকেন তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আরো ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই ধৈর্য সহকারে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
ইন্টারনেটের উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহার
এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ইন্টারনেট কি সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। ইন্টারনেট যে আমাদের অনেক কল্যাণে আসে তা আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কেও জানতে পারবেন। তাই ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ুন।

ভূমিকা

ইন্টারনেট মানব জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইন্টারনেট ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত চলতে পারিনা। ইন্টারনেট আমাদের নিত্য প্রয়োজনের সঙ্গী। ইন্টারনেটের উপকারিতা অপকারিতা দুটি রয়েছে। তবে এর অপকারিতার তুলনায় উপকারিতা বেশি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের যে কোন প্রান্তের খবরাখবর মুহূর্তের মধ্যে পেয়ে থাকি।

পৃথিবীর কোথায় কি হচ্ছে তা জানার জন্য আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। যদি পৃথিবীতে ইন্টারনেট না থাকতো তাহলে আমাদের এক দেশের অন্য দেশ থেকে পেতে অনেক সময় প্রয়োজন হতো। কিন্তু ইন্টারনেটের কল্যানে আমরা সেই খবর এক মুহূর্তের মধ্যেই পেয়ে যাচ্ছি। তবে ইন্টারনেট যে শুধু উপকারী করে তেমনটি নয়। ইন্টারনেটের অপকারী দিকও রয়েছে।

ইন্টারনেট সব সময় আমাদের সত্য খবর দেয় না। অনেক সময় মিথ্যা খবর দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করে। এছাড়া ইন্টারনেটের কারণে মানুষ দিন দিন এর প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ইন্টারনেটের কারণে মানুষ অলস হয়ে যাচ্ছে। কেননা এর কল্যাণে সবকিছু হাতের মুঠোয় থাকায় মানুষকে কোন কিছু পাওয়ার জন্য তেমন কষ্ট করতে হয় না।

ইন্টারনেট কি

ইন্টারকানেক্টেড নেটওয়ার্কের সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেট শব্দটি মূলত ইন্টার(অর্থ ভিতর) ও নেট(অর্থ জাল) এই দুই শব্দ সমন্বয়ে গঠিত। অর্থাৎ ইন্টারনেট শব্দের অর্থ অন্তর্জাল। ইন্টারনেট শব্দের উৎপত্তি ইথারনেট (Ethernet) শব্দ থেকে। কম্পিউটারকে এ কে অপরের সাথে সংযুক্ত করে তথ্য আদান প্রদান করার প্রক্রিয়াকে ইন্টারনেট বলে।

বইয়ের ভাষা ইন্টারনেটকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যে “ইন্টারনেট হলো সারা পৃথিবী জুড়ে বিস্তৃত, পরস্পরের সাথে সংযুক্ত অনেকগুলো কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমষ্টি যা সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত এবং যেখানে ইন্টারনেট প্রটোকলের মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে ।” ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকা ডিভাইসের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

ইন্টারনেটের জনক কে? ইন্টারনেট কত সালে আবিষ্কার হয়?

ইন্টারনেট আবিষ্কার মূলত রাতারাতি বা একদিনে হয়নি। এর জন্য কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যাবসায় প্রয়োজন হয়েছে। একজনের প্রচেষ্টায় এটি আবিষ্কার হয়নি। এটি মূলত অনেক জনের কঠোর পরিশ্রম এবং প্রচেষ্টার ফল। ইন্টারনেট আবিষ্কার হয় মূলত ১৯৬০ সালে। ১৯৬৯ সালের ২৯ অক্টোবর প্রথম একটি ডিভাইস থেকে অন্য একটি ডিভাইসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মেসেজ পাঠানো হয়।

আর বাংলাদেশে ইন্টারনেট চালু হয় ১৯৯৬ সালে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শীর্ষ দেশের মধ্যে প্রথম হল চীন এবং দ্বিতীয় দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র। অনেকের ধারণা ইন্টারনেটের জনক হলো ভিনটন জি কার্ফ। তবে এটি কোথাও প্রমাণিত হয়নি। কেননা ইন্টারনেট কারো একার পক্ষে আবিষ্কার করা সম্ভব নয়। অনেক মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ইন্টারনেট আবিষ্কৃত হয়েছে।

ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে

আমরা আগে জেনেছি যে ইন্টারনেট হল সারা পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত একটি নেটওয়ার্ক সিস্টেম যার মধ্য দিয়ে তথ্য আদান প্রদান করা হয়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে মানুষ পৃথিবীর যেকোনো স্থানের তথ্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে সংগ্রহ করে থাকে। এখন আমরা জানবো ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?

ইন্টারনেট মূলত পকেট রাউটিং সিস্টেম ব্যবহার করার মাধ্যমে কাজ করে, যা ইন্টারনেট প্রটোকল(IP) ট্রান্সফার কন্ট্রোল প্রটোকল(TCP) এর মাধ্যমে সংযুক্ত থাকে।এই ইন্টারনেট প্রটোকল(IP) ও ট্রান্সফার কন্ট্রোল প্রটোকল(TCP) মূলত নিশ্চিত করে বিশ্বের যে কোন জায়গা থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করা সক্ষমতা।

টেলিফোন লাইন, ওয়্যারলেস ব্যথার সংযোগ, অপটিক্যাল ফাইবার ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন ডিভাইস ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকে।

ইন্টারনেটের প্রকারভেদ

আমরা কম বেশি সকলে ইন্টারনেটের সাথে পরিচিত। ইন্টারনেট আমাদের জীবনকে সহজ সরল করে তুলেছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমরা খুব সহজেই অনেক বাধা বিপত্তি দূর করতে পারি। কিন্তু আমরা অনেকেই ইন্টারনেটের প্রকারভেদ সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখি না। ইন্টারনেট কে মূলত ছয়টি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো-
  • ডায়াল –আপ (Dial-up Internet)
  • ডি এস এল (Digital Subscriber Line Internet)
  • স্যাটেলাইট (Satellite Internet)
  • ক্যাবল (Cable Internet)
  • ওয়ারলেস (Wireless Internet)
  • সেলুলার (Cellular Network Internet)

ইন্টারনেটের ব্যবহার

পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০% মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। ইন্টারনেট ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত চলতে পারি না। যে কোন কাজেই আমাদের ইন্টারনেটের প্রয়োজন হয়। ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে আমরা সকলেই কমবেশি অবগত রয়েছি। তাহলে চলুন এখন আমরা ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিই।

শিক্ষার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার

বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ইন্টারনেট ছাড়া কল্পনা করা যায় না। কেননা শিক্ষার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের কোন বিকল্প নেই। এই ধরুন না ২০১৯ সালের করোনা মহামারীর সময় যদি ইন্টারনেট না থাকতো তবে শিক্ষা ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়তে। কেননা সে সময় ঘর থেকে বের হওয়া যেত না। ইন্টারনেটের কারণে করোনা মহামারীর সময়ও পড়াশুনা থেমে থাকে নি।

অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পেরেছে। বর্তমানে অনলাইন ক্লাস খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়াও ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে যে কোন জায়গার শিক্ষার্থী যে কোন জায়গার শিক্ষকের কাছে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। 10 মিনিট স্কুলের কথায় চিন্তা করুন না। অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে তারা লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে থাকে।

এর সবটাই সম্ভব হয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ থাকার কারণে। যদি ইন্টারনেট সংযোগ না থাকতো তবে কখনোই অনলাইনে মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হতো না। ইন্টারনেটে যেহেতু বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত তার কারণে এখানে শিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রচুর কন্টেন্ট রয়েছে। যেগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।

অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যালয় পাঠদানের পাশাপাশি যদি তাদেরকে সেই জিনিসটা দেখানো যায় তবে তাদের পাঠদানে পূর্ণতা আসে। আর এই কাজটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই করা সম্ভব। এজন্য শুধুমাত্র প্রয়োজন একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও ইন্টারনেট সংযোগ।

তাই বলা যায় ইন্টারনেট পড়াশোনা মানকে করেছে অনেক উন্নত। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে। এই ধরুন অনলাইন ক্লাসের সময় অনেকে ফাঁকি দিয়ে থাকে যা এর একটি অপকারী দিক। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে ইন্টারনেটের উপকারিতা অনেক বেশি।

যোগাযোগেরে ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার

আমরা যে কেবল পড়াশোনার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার করি তেমনটি নয়। যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ইন্টারনেটের উপকারিতা অনেক। কেননা ইন্টারনেট আবিষ্কারের পূর্বে পৃথিবীর কোথায় কি হতো আমরা তার কিছুই জানতে পারতাম না।

কিন্তু ইন্টারনেট আবিষ্কারের পর পৃথিবীর কোন স্থানে কি হচ্ছে তার সবটাই আমরা মুহূর্তের মধ্যে জানতে পারি। এর জন্য আমাদের সময় বা শ্রম কোনটাই তেমন প্রয়োজন হয় না। খুব অল্প সময়ের মধ্যে এবং অল্প পরিশ্রমে আমরা পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের খবর পেতে পারি।

একটি উদাহরণের মাধ্যমে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার খুব সহজেই বোঝা যায়। ধরুন ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে এবং আপনি বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তাহলে আপনার কাছে সেই সংবাদ পৌঁছানোর কোন রাস্তা নেই একমাত্র ইন্টারনেট ছাড়া। কেননা এত দূরের খবর আপনি কখনোই জানতে পারবেন না।

তবে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে মুহূর্তের মধ্যে সেই খবরটা পেতে পারেন। কারণ ইন্টারনেট পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত। পৃথিবীর কোথায় কি হচ্ছে সব খবরই ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। তাই আমরা বলতে পারি ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করেছে এবং পৃথিবীকে আমাদের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার

ইন্টারনেটের কল্যাণেই চিকিৎসার এমন উন্নতি সাধিত হয়েছে। এটি ইন্টারনেটের আরেকটি উপকারিতা। বর্তমানে একজন চিকিৎসক যদি কোন একটি রোগের চিকিৎসা করতে না পারেন তবে তিনি ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যে কোন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যমে সেই রোগের চিকিৎসা করতে পারেন।

এছাড়াও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একটি নতুন রোগের আবির্ভাব হয়েছে। সেই রোগের চিকিৎসায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা কি গবেষণা করছেন সেই সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করতে ইন্টারনেটের প্রয়োজন হয়।

ইন্টারনেটের উপকারিতার কারণে কোন একটি জটিল রোগের চিকিৎসার সময় একজন চিকিৎসক অন্য চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এর ফলে ওই জটিল রোগের চিকিৎসা খুব সহজেই করানো যায়।

অনলাইনে অর্থ উপার্জন

যেহেতু ইন্টারনেটের উপকারী অনেক দিক আছে। তাই এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়। ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা যায়। যেমন কেউ যদি একটি ব্লক তৈরি করে ইউটিউবে প্রকাশ করে তবে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অন্যান্য মানুষ দেখার ফলে যে ব্লক তৈরি করল তার অর্থ উপার্জন হবে।

এছাড়াও ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফেসবুক থেকেও ইনকাম করা যেতে পারে। তাছাড়াও ফাইবার থেকে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করা যায়। এছাড়াও ডাটা এন্ট্রি করার অনেকগুলো চাকরি রয়েছে যেগুলো করার ফলে অর্থ উপার্জন করা যায়। এই সকল কাজ অনলাইনের মাধ্যমে করা যায়।

বিল পরিশোধের জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার

আমরা সকলেই কমবেশি গ্যাস, বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকে। এসব কিছুর বিল আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিশোধ করতে পারি। আগে এসব বিল দিতে আমাদের লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হতো। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে আমরা ঘরে বসেই এসব বিল পরিশোধ করতে পারি।

এছাড়াও স্কুল কলেজের বেতনও আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দিতে পারি। তাছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ব্যাংকের সেবা গ্রহণ করতে পারি। তাই বিল পরিশোধের জন্য ইন্টারনেটের উপকারিতা অনস্বীকার্য।

অনলাইন বুকিংয়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার

অনলাইন বুকিং এ ইন্টারনেটের ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনলাইন বুকিং এ ইন্টারনেটের উপকারিতা ও অপকারিতা দুই দিকই পরিলক্ষিত হয়। আমরা কোথাও বেড়াতে গেলে ট্রেন বা প্লেনের অগ্রিম টিকিট কাটার জন্য অনলাইনে বুকিং দিয়ে থাকে।

এছাড়াও আমরা যেখানে বেড়াতে যাব সেখানকার কোন হোটেল অনলাইনের মাধ্যমে বুকিং দিতে পারি। আর এই সমস্ত কিছুই সম্ভব হয় ইন্টারনেটের কারণে। যদি ইন্টারনেট না থাকতো তবে কখনোই এসব সম্ভব হতো না।

তবে অনেক ক্ষেত্রে আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সেইসব হোটেল বুকিং করার পর বুঝতে পারি আমরা প্রতারিত হয়েছি। কেননা ইন্টারনেটে ওইসব হোটেল সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া ছিল। তাই অনলাইনে বুকিং এর ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটি রয়েছে।

গবেষণার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার

গবেষণার কাজে ইন্টারনেটের বহুল ব্যবহার রয়েছে। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। আগের দিনে একটি গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল সবার কাছে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগতো। কিন্তু বর্তমানে তা কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই পৃথিবীর সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মানুষের মধ্যে পৌঁছে যায়।

তাছাড়াও একটি গবেষণার প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু এবং দরকারি সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা একজনের পক্ষে জানা সম্ভব না থাকলে সে ইন্টারনেট থেকে সেই সব তথ্য সংগ্রহ করে থাকে যা আগের দিনের সম্ভব হতো না।

চাকরি খোঁজার জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার

চাকরি খোঁজার জন্য ইন্টারনেটের উপকারিতা ও উপকারিতা দুই দিকই পরিলক্ষিত হয়। আমরা যারা চাকরি খুঁজছি যারা বর্তমানে চাকরি খোঁজার জন্য আর কোন কোম্পানিতে যাই না। কেননা আমরা ঘরে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল চাকরির খবর পেয়ে থাকি। সকল কোম্পানিই তাদের কোন পোস্টে কতজন লোক প্রয়োজন সেই সম্পর্কে একটি সার্কুলার ইন্টারনেটে দিয়ে থাকেন।

সেখান থেকে আমরা আমাদের কাঙ্খিত চাকরী খুঁজে বের করি। যার জন্য আমাদের খুব কম সময় ব্যয় হয় এবং অল্প পরিশ্রমে আমরা আমাদের কান্ট্রিতে চাকরির সন্ধান পেয়ে থাকি। আবার অনেক সময় ভুল নিউজ এর কারণে আমরা প্রতারিত হই। এমন সব খবর ইন্টারনেটে দেওয়া থাকে যার কোন অস্তিত্বই নেই। যার মাধ্যমে আমরা প্রতারণা শিকার হয়ে থাকি।

বিনোদনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট ব্যবহার

বিনোদনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির ফলে বিনোদন জগতের একটি নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। এক সময় বিনোদনের জন্য মানুষকে বাইরে যেতে হতো। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে বিনোদনের জন্য আর বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না।

যেমন কোন খেলা দেখতে হলে আগে মানুষকে মাঠে যেতে হতো কিন্তু এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই তা দেখতে পারে। আবার কোন সিনেমা দেখতে হলে সিনেমা হলে যাওয়ার প্রয়োজন নেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসেই তা দেখা যায়। যেহেতু মানুষকে ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে না তাই তারা ঘরে থাকতে থাকতে অলস প্রকৃতির হয়ে যাচ্ছে। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

কেনাকাটার জন্য ইন্টারনেট

বর্তমানে বেশিরভাগ কেনাকাটায় অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। কেনাকাটার জন্য মার্কেটে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনলাইনে কোন পণ্যের অর্ডার দিলে তা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আপনার ঘরে দিয়ে যায়। তাছাড়াও ইন্টারনেটে অনেক ধরনের পণ্য দেখে তারপর একটি পণ্য নেওয়া যায় এবং তা করা যায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে।

এতে করে সময় কম নষ্ট হয় এবং শরীরও ক্লান্ত হয় না। কেনাকাটায় ইন্টারনেট যেন একটি বিপ্লব নিয়ে এসেছে। তবে এক্ষেত্রে আমরা অনেক সময় খারাপ জিনিসও পেয়ে থাকি। যার কারণে আমাদের টাকা নষ্ট হয়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে না। তাই আমরা বলতে পারি ইন্টারনেটের কল্যাণে কেনাকাটা হয়ে উঠেছে আরো সহজ।

বিশ্বের সাথে আপডেট থাকতে ইনটারনেট

কোথায় কি হচ্ছে তা আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারি। তাই বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য ইন্টারনেট আমাদের উপকারে আসে। কেননা এর থেকে আমরা খুব সহজেই আপডেট খবর পেয়ে থাকি এবং সে অনুযায়ী নিজেকে প্রস্তুত করে রাখতে পারি। যাতে করে আমরা পিছিয়ে না পড়ি।

ইন্টারনেট এর উপকারিতা

ইন্টারনেটের বহুল উপকারিতা রয়েছে। ইন্টারনেটের ব্যাপকতা এত বিশাল যে সকল ক্ষেত্রেই ইন্টারনেট যুক্ত। ইন্টারনেট ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত চলতে পারি না। ইন্টারনেট শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই বিচরণ করে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ বিদেশের খবর প্রকল্প সময় পাওয়া যায়।

যদি কোন শিক্ষার্থীর কোন বিষয় সম্পর্কে জানার প্রয়োজন হয় তবে সে খুব সহজেই ইন্টারনেট থেকে সে বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে। এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হওয়া যায় এবং সেখানে ক্লাস করা যায়। আবার একজন ব্যবসায়ী তার পণ্যের মূল্যের কি অবস্থা তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারে।

এছাড়াও রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে, গবেষণার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ইন্টারনেটের আরেকটি সুবিধা হলো এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়। অনেক বেকার যুবক-যুবতী ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের কর্মসংস্থান খুঁজে পেয়েছে। ইন্টারনেটের উপকারিতার কথা আমরা বলে শেষ করতে পারবো না।

ইন্টারনেট আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। ইন্টারনেটের ফলে পৃথিবী আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। আমরা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের খবর খুব সহজেই এবং তাড়াতাড়ি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। মূল কথা হচ্ছে এটা যে ইন্টারনেটের উপকারিতার কথা বলে আমরা সারা জীবনেও শেষ করতে পারবো না।

ইন্টারনেট এর অপকারিতা

পৃথিবীর প্রায় সকল জিনিসের দুটি দিক রয়েছে। একটি উপকারী দিক এবং অপরটি অপকারী দিক। ইন্টারনেটের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটিই রয়েছে। তবে ইন্টারনেটের উপকারিতা তুলনায় অপকারিতা খুব কম। নিচে ইন্টারনেটের উপকারিতা তুলে ধরা হলো-

ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেমন পৃথিবীর সকল খবরাখবর খুব সহজেই পাওয়া যায় তেমনি সেইসব খবর মিথ্যা খবরও হতে পারে। কারণ ইন্টারনেটে পাওয়া খবরের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয় না। ইন্টারনেটে যে কেউ যেকোনো ধরনের তথ্য দিতে পারে।

এর জন্য অনেক সত্য খবরের পাশাপাশি মিথ্যা খবরও ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলে অনেকেই প্রতারিত হয়। এছাড়াও ইন্টারনেট ব্যবহার করার ফলে মানুষ দিন দিন অলস হয়ে যাচ্ছে। কেননা তাদের বেশি পরিশ্রম করার প্রয়োজন হয় না। এর ফলে তাদের রোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাছাড়াও ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনেকেই প্রতারণা করছে। অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের তথ্য হ্যাক করার মাধ্যমে তাদের তথ্য অন্য কারো কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। এই সকল কিছু সম্ভব হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।

বাংলাদেশে কবে ইন্টারনেট চালু হয়? ইন্টারনেট ব্যবহারে বাংলাদেশের অবস্থান কত?

বাংলাদেশে ১৯৯৩ সালে সর্বপ্রথম ইন্টারনেট চালু করা হয়। তবে সাধারণ জনগণের জন্য তা ১৯৯৬ সালে উন্মুক্ত করা হয়। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শেষ দিকে ইন্টারনেট চালু করার অনুমতি দেয়া হয়। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখা অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম।

বর্তমানে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা 9 কোটি 5 লাখ। তার মধ্যে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে এমন লোকের সংখ্যা ৮ কোটি ৪৭ লাখ এবং ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার এবং বাকি ৮৩ হাজার জনসংখ্যা ব্যবহার করে।

লেখকের মন্তব্যঃ ইন্টারনেটের উপকারিতা, অপকারিতা ও ব্যবহার

ইন্টারনেট পৃথিবী বিস্তৃত এবং ইন্টারনেটের উপকারিতা ও অপকারিতা দুটি রয়েছে। তবে এর উপকারী দিকে তুলনায় অপকারী দিক কম। আমরা সবাই কমবেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। ইন্টারনেট ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত চলতে পারি না। আমাদের ইন্টারনেটের খারাপ দিক পরিহার করে ভালো দিকটি গ্রহণ করা উচিত। তাহলেই সফলতা আনা সম্ভব। ইন্টারনেট পুরো মানবজাতির জন্য কল্যাণকর।

প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি তা আপনার আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন এবং এই আর্টিকেলটি আপনার কেমন লেগেছে তা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url