দালাল ছাড়াই নিজে নিজে পাসপোর্ট আবেদন করুন - ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
প্রিয় পাঠক, আপনি কি পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না? যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও আপনি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পাসপোর্ট করতে কত খরচ হয় সে সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি পাসপোর্ট করতে কি কি প্রয়োজন সেই সম্পর্কেও জানতে পারবেন। পাসপোর্ট করার জন্য অনেকগুলো কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়। তাই আবেদন করতে কি কি প্রয়োজন সেই সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ুন।
ভূমিকা
পাসপোর্ট প্রত্যেকটা নাগরিকের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের বাইরে ভ্রমণ করতে প্রত্যেকেরই পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়। কেননা এই পাসপোর্ট কোন ব্যক্তির পরিচয় বহন করে। পাসপোর্টে থাকা চিপের মাধ্যমে খুব সহজেই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ইনফরমেশন পাওয়া যায়। পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম দুই ধরনের। একটি অনলাইনে এবং অন্যটি অফলাইনে।
কেউ যদি পাসপোর্ট আবেদন করতে চাই তবে তাকে পাসপোর্ট আবেদন করার পর নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করতে হবে। পাসপোর্ট এর ধরণের উপর ভিত্তি করে পাসপোর্ট ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এই ধরুন কেউ যদি ইমারজেন্সি ভাবে পাসপোর্ট করতে চায় তার জন্য একরকম ফি আবার কেউ যদি সাধারণ নিয়মে ঐ একই পাসপোর্ট চাই তার জন্য ভিন্নরকম ফি প্রযোজ্য হবে।
পাসপোর্ট কি
একটি দেশের সরকার কর্তৃক জারিকৃত ভ্রমণ নথি হলো পাসপোর্ট। পাসপোর্ট একজন মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। এটি আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় ভ্রমণকারীর জাতীয়তা ও পরিচয় পত্র বহন করে। একটি পাসপোর্টে সাধারণত ঐ ব্যক্তির নাম জন্মের তারিখ খান খান ছবি স্বাক্ষর ইত্যাদি থাকে।পাসপোর্টে থাকা চিপের মাধ্যমে খুব সহজেই অল্প সময়ে ঐ ব্যক্তির সমস্ত ডাটা জানা যায়।
পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় আমাদের অবশ্যই পাসপোর্ট এর প্রয়োজন হয়। তবে নতুন পাসপোর্ট করার জন্য অনেক রকম কাগজপাতির প্রয়োজন হয়। নিচে নতুন পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য কি কি লাগে সে সম্পর্কে বলা হলো-
- পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম অনলাইন আবেদন ফরম এবং সিডিউল কপি সংযুক্ত করতে হবে।
- অনলাইন কিংবা এসএমএস এর মাধ্যমে পাসপোর্ট ফি জমাদানকারী পাসপোর্ট এর আবেদনপত্রের সাথে পে স্লিপ সংযুক্ত করতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্র (২০ বছরের বেশি হলে বাধ্যতামূলক) কপি জমা দিতে হবে।
- ১৮ বছরের নিচে হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি অর্থাৎ ইংরেজি ভার্সন এবং সেই সাথে পিতা-মাতার ভোটার আইডি কার্ড সংযুক্ত করতে হবে।
- সরকারি/ আধা-সরকারি/ স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/ বিভাগ/ অধিদপ্তর কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে NOC/GO, অন্যান্যদের ক্ষেত্রে পেশাগত সনদ/টেকনিক্যাল সনদ কপি জমা দিতে হবে।
- NOC/GO আবেদনকারীগণ তাদের নিজ নিজ অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে NOC/GO আপলোড করবেন।
- সরকারি চাকরিজীবী যদি অবসরপ্রাপ্ত হন তবে পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য তাকে অবসর গ্রহণের কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
- ছয় বছরের নিচের কোন আবেদনকারীর জন্য 3R সাইজের এক কপি ল্যাব প্রিন্ট রঙিন ছবি দিতে হবে।
- এছাড়া পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপতির সাথে বিদ্যুৎ/গ্যাস/ওয়াসার বিলের কপি সংযুক্ত করতে হবে।
পাসপোর্ট করতে কত টাকার প্রয়োজন হয়
আমরা সাধারণত পাসপোর্ট তৈরি করে থাকি দেশের বাইরে কোথাও যাওয়ার জন্য। তবে দেশের ভিতরেও পাসপোর্ট এর অনেক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এজন্য নিয়ম মেনে পাসপোর্টে আবেদন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ফি প্রদান করতে হবে। মেয়াদ এবং পৃষ্ঠা ভেদে পাসপোর্ট তৈরিতে ভিন্ন ভিন্ন খরচ হয়ে থাকে।
আরো পড়ুনঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম ২০২৪
৪৮ পৃষ্ঠার ০৫ বছর মেয়াদে একটি পাসপোর্ট এর জন্য সাধারণ ফি ৩ হাজার ৫ শত টাকা, তবে একই পাসপোর্ট জরুরি ভিত্তিতে করতে গেলে ফি পড়বে ৫ হাজার ৫শত টাকা এবং আরো জরুরি হলে ফি পড়বে ৭ হাজার ৫শত টাকা।
৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদে একটি পাসপোর্ট এর জন্য সাধারণ ফি ৫ হাজার টাকা, তবে একই পাসপোর্ট জরুরি ভিত্তিতে করতে গেলে ফি পড়বে ৭ হাজার টাকা এবং আরো জরুরি হলে ফি পড়বে ৯ হাজার টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার ০৫ বছর মেয়াদে একটি পাসপোর্ট এর জন্য সাধারণ ফি ৬ হাজার ৩শত ২৫ টাকা, তবে একই পাসপোর্ট জরুরি ভিত্তিতে করতে গেলে ফি পড়বে ৮ হাজার ৬শত ২৫ টাকা এবং আরো জরুরি হলে ফি পড়বে ১২ হাজার ৭৫ টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদে একটি পাসপোর্ট এর জন্য সাধারণ ফি ৮ হাজার ৫০ টাকা, তবে একই পাসপোর্ট জরুরি ভিত্তিতে করতে গেলে ফি পড়বে ১০ হাজার ৩শত ৫০ টাকা এবং আরো জরুরি হলে ফি পড়বে ১৩ হাজার ৮শত টাকা। সকল ধরনের ফি-র সঙ্গে ১৫ % ভ্যাট যুক্ত হবে।
পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম
পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য আপনি অনলাইন বা অফলাইন যে কোন একটি মাধ্যম বেছে নিতে পারেন। অফলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য আবেদন ফরম পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সংগ্রহ করতে হয়। এক্ষেত্রে আবেদন ফরমটি বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এছাড়াও এই আবেদন ফরমটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পাওয়া যায়। সেখান থেকে ডাউনলোড করে প্রিন্ট দিয়েও নেওয়া যায়।
যেহেতু এই ফর্মটি হাতে লিখে ফিলাপ করতে হয় সেজন্য এর কয়েক কপি ফটোকপি রাখা ভালো। এতে করে কোথাও কোন ভুল হলে পরবর্তীতে আবার সুন্দর করে লেখা যায়। ফর্মটি ফিলাপ করে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ছবি জমা দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করা যায়। এছাড়াও পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য আপনি অনলাইন প্লাটফর্ম কে বেছে নিতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ঢুকতে হবে। এরপর আপনাকে ফরম পূরণের পেজে যেতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় তথ্যাদি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। তাহলে আপনার অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার কাজটি হয়ে যাবে।
পুরাতন পাসপোর্ট বাতিল করার নিয়ম
পুরাতন পাসপোর্ট বাতিল করার কোন সিস্টেম নেই। কেননা পাসপোর্ট এর সমস্ত তথ্য পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন সরকারি ওয়েবসাইটের ডাটাবেজে সংরক্ষণ থাকে। কোন প্রক্রিয়াতেই আমরা পুরাতন পাসপোর্ট একেবারে বাতিল করতে পারবো না।
তবে যদি কোন কারণে পাসপোর্ট হারিয়ে যায় অথবা পাসপোর্ট এর কোন ভুল থাকে তবে তা আমরা সংশোধন করতে পারবো। পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে থানায় জিডি করার পর আবার নতুন করে পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবো। তবে যদি কারো পুরনো হাতের লেখা পাসপোর্ট থাকে তাহলে সেটি সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
কেননা পুরনো হাতের লেখা পাসপোর্ট এর কোন তথ্য ওয়েব সাইটে সংরক্ষণ থাকে না। সে ক্ষেত্রে আপনি চাইলেই নতুন পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনেকেই পুরাতন পাসপোর্ট বাতিল করার জন্য দালাল চক্রের হাতে পড়ে। পাসপোর্ট বাতিল করার কথা বলে তারা অনেক টাকা নিয়ে নেয়।
এসব দালাল চক্র পাসপোর্ট অফিসের অসাধু কর্মকর্তার সাথে হাত মিলিয়ে শুধুমাত্র অফিস থেকে আপনার তথ্য ভ্যানিশ করতে পারে কিন্তু ওয়েবসাইটের ডাটাবেজে আপনার তথ্য থেকেই যায়। তাই পুরাতন পাসপোর্ট বাতিলের জন্য কোন দালালের সাথে যোগাযোগ করা ঠিক নয়।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম
অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর Apply Online অপশনটি বাছাই করে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও থানা নির্বাচন করতে হবে। এরপর একটি ইমেইল এড্রেস এবং প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফর্মটি ফিলাপ করতে হবে।
ফরমটিতে পাসপোর্ট এর মেয়াদ ও ডেলিভারির ধরন উল্লেখ করে আবেদনটি সম্পন্ন করতে হবে। এরপর ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করে সেখান থেকে ফরমটি ডাউনলোড করে নিতে হবে। ডাউনলোড করা ফরম এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
তিনি প্রয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে আপনার ই পাসপোর্ট আবেদন করা যথার্থতা হবে। এরপর তিনি আপনাকে একটি ডেলিভারি স্লিপ দিবেন যা পরবর্তীতে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে কাজে লাগবে।
ই পাসপোর্ট আবেদন সংশোধন করার নিয়ম
ই পাসপোর্ট আবেদন করার পর সেই আবেদন কপি ডাউনলোড করার পর দেখা গেল সেখানে একটি ভুল রয়েছে। ভুল সংশোধন করার জন্য মূলত দুইটি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
খুব ছোট ভুলের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কম্পিউটার অপারেটরকে অনুরোধ করার মাধ্যমে ভুলটি সংশোধন করে নেয়া যেতে পারে। ছোট ভুলের কারণে সেখানে তেমন কোন সমস্যা হবে না।
কিন্তু যদি ভুলটি বড় হয় তবে পাসপোর্ট অফিস ভুল সংশোধনের আবেদনই গ্রহণ করবে না। এক্ষেত্রে আপনাকে দ্বিতীয় পদ্ধতি অর্থাৎ আবেদন বাতিল করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার ফরম
অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন বাতিল করার জন্য পাসপোর্ট আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক বরাবর একটি লিখিত আবেদন পেশ করতে হবে। লিখিত আবেদনের সাথে অনলাইন আবেদনের Application Summery পেইজের কপিটি যুক্ত করতে হবে।
সহকারী পরিচালক সেই আবেদনটি হাতে পাওয়ার পর ঐ দিনই অথবা দু-একদিনের মধ্যে আপনার আবেদনটি বাতিল করবে এবং পরবর্তীতে সঠিক তথ্য দিয়ে আপনি আবার আবেদন করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি যদি আবেদনকৃত ফরমটি পাসপোর্ট অফিসে জমা না দেন তাহলে ৬ মাসের মধ্যে আপনার এই আবেদনটি বাতিল বলে গণ্য হবে।
অনলাইনে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম
অনলাইনে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেক করার জন্য সর্বপ্রথম আপনাকে www.epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর Application Status এ গিয়ে কাগজ জমা দেওয়ার সময় যে স্লিপ দেয়া হয়েছিল সেই স্লিপে থাকা পাসপোর্ট Application ID এবং Date Of Birth টাইপ করতে হবে।
এরপর পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট দেখার জন্য সার্চ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এছাড়াও পাসপোর্ট আবেদন করার পর আপনি পাসপোর্ট দেখতে পারবেন। এইজন্য আপনাকে ওয়েব সাইটে প্রবেশ করতে হবে।
এরপর Check Status অপশনে ক্লিক করে কাগজ জমা দেওয়ার সময় দেওয়া স্লিপে থাকা Application ID এবং Date Of Birth টাইপ করে সাবমিট করলেই আপনার পাসপোর্ট এর তথ্য আপনি দেখতে পাবেন।
লেখকের মন্তব্য
পাসপোর্ট আমাদের জীবনে খুবই প্রয়োজনীয় বস্তু। দেশের বাইরে একজন মানুষের পরিচয় তার পাসপোর্ট বহন করে থাকে। অনেকেই পাসপোর্ট করতে অনেক রকম জটিলতা সম্মুখীন হয়। অনেক সময় অনেকে দালালের খপ্পরে পড়ে।
দালালের দ্বারা পাসপোর্ট না করে নিজেই নিজের পাসপোর্ট করার সবচেয়ে ভালো। কেননা পাসপোর্ট অফিসে গেলেই পাসপোর্ট করা যায়। অযথা দালালকে টাকা দিয়ে কি লাভ। তাই আমরা সকলেই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম মেনে নিজের পাসপোর্ট নিজে করার চেষ্টা করবো।
প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই তা কমেন্ট বক্সে জানান। এরকম আরো ইনফরমেটিভ আর্টিকেল পড়তে আমার এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। পুরো আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url