ফর্মুলা কিংবা দুধের বিকল্প হিসেবে ‘পিডিয়া সিওর’ দিচ্ছেন? জেনে নিন এটি খাওয়ার নিয়ম, উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক, আপনার বাচ্চাকে খেতে চাচ্ছে না? আপনি তাকে পিডিয়া সিওর খাওয়াবেন কিনা এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন আপনার বাচ্চাকে একটি খাওয়াবেন কিনা। এর আর্টিকেলে আমরা পিডিয়া সিওর এর ভালো-মন্দ দুই দিকই আলোচনা করেছি। তাই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন পিডিয়া সিওর খাওয়ানোর ফলে আপনি কি শুধু টাকাই নষ্ট করছেন নাকি এটি আপনার বাচ্চার কোন উপকারে আসছে। তাই এ সমস্ত কিছু জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
আমরা অভিভাবকরা বাচ্চার খাওয়া নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকি। একটি বাচ্চার শরীর ও স্বাস্থ্য পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ রাখতে চাইলে তাকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ানো প্রয়োজন। শিশুদের পেট যেহেতু অনেক ছোট, অল্প খাবারের তার পেট ভরে যায় তাই সব সময় আমাদের উচিত তাকে সর্বদা পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো।
আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে পিডিয়া সিওর। কেননা এটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যা বাচ্চার সঠিক বিকাশের সাহায্য করবে। এতে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উপাদানের পাশাপাশি ভিটামিন, খনিজ পদার্থ রয়েছে। যা একজন শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন। আমরা সকলেই জানি একটি বাচ্চা তার মায়ের বুকের দুধ খেয়ে বড় হয়।
কিন্তু বাচ্চা যখন একটু বড় হয় অথবা মায়ের বুকের দুধ ঠিকমতো পায় না তখন তাকে বাইরের খাবার দিতে হয়। এক্ষেত্রে আপনি অন্যান্য খাবারের সাথে পিডিয়া সিওর বেছে নিতে পারেন। এটি আপনি চাইলে গরম পানিতে ফুটিয়ে অথবা গরম দুধের সাথে মিশিয়ে বাচ্চাদের খাওয়াতে পারেন। এতে করে বাচ্চারা অনেক স্বাস্থ্যবান হবে।
পিডিয়া সিওর খাওয়ার নিয়ম
বাচ্চাদের কোন খাবার খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই সে খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে যাচাই করে নিতে হবে। বাচ্চাকে কখনোই অপুষ্টিকর কোন খাবার খাওয়ানো চলবে না। কেননা একটি বাচ্চা পেট অনেক ছোট থাকে। তাকে যদি অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো হয় তাহলে তার পেট অল্পতেই ভরে যাবে এবং শরীর ঠিকমতো পুষ্টি গ্রহণ করতে পারবে না।
সেই সাথে বাচ্চাদের যে কোন খাবার একটি নিয়ম অনুযায়ী খাওয়াতে হবে। তেমনি কেউ যদি বাচ্চাকে পিডিয়া সিওর খাওয়াতে চান তবে তাকে অবশ্যই নিয়ম মেনে খাওয়াতে হবে। তবে একে কখনোই প্রধান খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। বাচ্চাদের প্রধান খাবার তালিকায় অবশ্যই প্রাকৃতিক শাকসবজি ও ফলমূল রাখতে হবে।
আবার অনেক মা আছেন যারা বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের খাবারের মিশ্রণে ঘরোয়া পদ্ধতিতে একটি পুষ্টিকর ফর্মুলা তৈরি করেন। যদি সেগুলো বাচ্চাকে খাওয়ানো হয় তবে পিডিয়া সিওর খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই। পিডিয়া সিওর মূলত সেইসব বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা হয়েছে যেসব বাচ্চারা ঠিকমতো প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করে না।
আবার যেসব বাচ্চা খাওয়ার অভাবে দিন দিন শুকিয়ে যাচ্ছে তাদের শরীরে কৃত্রিমভাবে পুষ্টি উপাদান প্রবেশ করানোর জন্য এই পিডিয়া সিওর তৈরি করা হয়েছে। যেসব বাচ্চারা ঠিকমতো খাবার খায় না তাদেরকে পুষ্টিবিদরা এই পিডিয়া সিওর বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে বলেন। আপনি চাইলে ২ চামচ পিডিয়া সিওর গরুর দুধের সাথে মিশিয়ে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন।
এটি আপনি দিনে সর্বোচ্চ দুইবার করতে পারবেন। কখনোই দিনে দুইবারের অধিক খাওয়ানো উচিত নয়। এতে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। সেই সাথে আপনি যদি কোন মিষ্টান্ন রান্না করেন তবে সেখানে এক চামচ পিডিয়া সিওর ব্যবহার করতে পারেন।
এতে করে একদিকে যেমন বাচ্চা মিষ্টান্ন থেকে পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করতে পারবে, সেই সাথে পিডিয়া সিওর এর পুষ্টি উপাদানও তার মধ্যে প্রবেশ করবে। তবে যারা শুধুমাত্র পিডিয়া সিওর খাওয়ান তারা ১২৫ মিলিগ্রাম করে সপ্তাহে সর্বোচ্চ তিন দিন খাওয়াতে পারবেন।
তবে বাচ্চাদের এসব কৃত্রিম খাবার না খাইয়ে বাড়িতে তৈরি খাবার খাওয়ানো উচিত। এতে করে বাচ্চা যেমন একদিকে বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ পাবে অন্যদিকে তার শরীরের পুষ্টি চাহিদাও পূরণ হবে। এতে করে বাচ্চার খাবারের প্রতি অনীহা তৈরি হবে না।
পিডিয়া সিওর বানানোর নিয়ম
পিডিয়া সিওর এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা বিভিন্নভাবে প্রস্তুত করে বাচ্চাদের খাওয়ানো যায়। আপনি চাইলে পিডিয়া সিওর দুধ এবং পানি উভয়ের সাহায্যেই প্রস্তুত করে বাচ্চাকে খাওয়াতে পারবেন। আপনি যদি এটি দুধ দিয়ে প্রস্তুত করেন তবে ১২৫ থেকে ১৫০ মিলি কুসুম গরম দুধ একটি গ্লাসে নিয়ে তাতে এক থেকে দুই চামচ পিডিয়া সিওর ভালোভাবে মিশিয়ে বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে।
এছাড়াও আপনি চাইলে শুধুমাত্র পানি দিয়ে এটি প্রস্তুত করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে ১২৫ থেকে ১৫০ মিলি কুসুম গরম পানিতে তিন থেকে চার চামচ পিডিয়া সিওর ভালোভাবে মিশিয়ে এরপর বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে। তবে কখনোই ফুটন্ত গরম পানি বা দুধে পিডিয়া সিওর দেয়া উচিত নয়। এতে করে এর অধিকাংশ পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
আবার অনেকেই ঠান্ডা দুধ বা পানিতে পিডিয়া সিওর দিয়ে তা চুলায় ফুটিয়ে নেন। যা একেবারেই ভুল পদ্ধতি। কেননা এতে করে বাচ্চার শুধু পেটই ভরবে কোন পুষ্টি উপাদান পাবেনা। কেননা আগুনের তাপে সমস্ত পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই পিডিয়া সিওর বানানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে দুধ অথবা পানি যেন উষ্ণ গরম হয়।
এছাড়াও আপনি চাইলে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন তৈরিতে যেমন হালুয়া, সুজি ইত্যাদি বিভিন্ন ডেজার্ট আইটেমে সামান্য পরিমাণ পিডিয়া সিওর যোগ করতে পারেন। এতে করে সেসব মিষ্টান্নের পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পাবে। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে পিডিয়া সিওর যেন দিনে দুইবারের বেশি এবং সপ্তাহে তিন দিনের বেশি খাওয়ানো না হয়।
পিডিয়া সিওর খাওয়ার বয়স
শিশুকে সাধারণত জন্মের পর ৬ মাস মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার খাওয়ানো উচিত নয়। তবে কোন শিশু যদি মায়ের বুকের দুধ না পায় তবে তাকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে অন্য কোন দুধ খাওয়ানো উচিত। ছয় মাস পর থেকে শিশুকে অল্প পরিমাণ বাহিরের প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো শুরু করতে হবে।
শিশুর বয়স এক বছর অতিক্রম করার পূর্বে কখনোই পিডিয়া সিওর খাওয়ানো উচিত নয়। এতে করে শিশুর উপকারের পরিবর্তে অপকার হতে পারে। আপনি চাইলে শিশুকে এটি ১০ বছর বয়স পর্যন্ত খাওয়াতে পারেন। তবে এটিকে কখনোই প্রধান খাবার হিসেবে রাখা উচিত নয়। অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি এটি খাওয়ানো উচিত।
এতে করে তার শরীরে যে অল্প পরিমাণ পুষ্টির ঘাটতি থাকবে তা এই পিডিয়া সিওর পূরণ করবে। একজন মায়ের চেষ্টা করা উচিত শিশুকে কৃত্রিম খাবারের পরিবর্তে সর্বদা প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো। কেননা কৃত্রিম খাবার যতই পুষ্টি সম্পন্ন হোক না কেন তার বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। কিন্তু প্রাকৃতিক খাবারের তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না।
তাই কেউ যদি শিশুকে পিডিয়া সিওর খাওয়াতে চান তবে তিনি শিশুর ১-১০ বছর বয়স পর্যন্ত পরিমাণ মাফিক এটি খাওয়াতে পারেন। তবে সর্বদা এটিকে সাইড খাবার হিসেবে রাখতে হবে। কখনো এটিকে প্রধান খাবার করা উচিত নয়।
Pediasure এর উপকারিতা - পিডিয়া সিওর এর উপকারিতা
পিডিয়া সিওর এক ধরনের সাপ্লিমেন্ট যা শিশুকে বাড়তি খাবার হিসেবে দেয়া হয়ে থাকে। যেসব শিশু প্রাকৃতিক খাবার বা ঘরোয়া খাবার খেতে চায়না তাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার জন্য এই পিডিয়া সিওর দেয়া হয়। তবে যেসব শিশু ঘরোয়া খাবার খেতে চায় তাদের কখনোই পিডিয়া সিওর দেয়া উচিত নয়।
কেননা এটি খাওয়ানোর অভ্যাস করলে তারা আর ঘরোয়া খাবার খেতে চাইবে না। আর একজন শিশুর জন্য পিডিয়া সিওর এর থেকে ঘরোয়া খাবার অনেক বেশি উপকারী। আমরা অনেকেই মনে করি যে বাজারে যেসব কৃত্রিম সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায় তাতে হয়তো অনেক বেশি পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। কিন্তু এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল।
আরো পড়ুনঃ মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার সেরা উপায়
বাজারে যেসব সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায় তাতে খুব কম পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে। যদি শিশুকে অন্য কোন খাবার খাওয়ানো যায় তবে শেষ চেষ্টা হিসেবে পিডিয়া সিওর খাওয়ানো যেতে পারে। এটি খেলে শিশুর যেসব উপকার সংগঠিত হয়ে থাকে তা নিচে আলোচনা করা হলো-
- পিডিয়া সিওর খাবার ফলে শিশুর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এতে বিদ্যমান ল্যাকটোজ প্রোটিন ও উপকারী চর্বি শিশু শরীরের রোগ প্রতিরোক্ষ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকে।
- পিডিয়া সিওর খুব সহজেই হজম হওয়ার কারণে এটি শিশুকে সারাদিন প্রফুল্ল রাখে। সেই সাথে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে থাকে।
- পিডিয়া সিওরে বিদ্যমান সামান্য পরিমাণ আয়রন ও ফাইবার শিশুর হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- এতে উপস্থিত প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি ইত্যাদি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকার কারণে এটি শিশুর দৈহিক গঠন ভালো রাখে এবং শিশুকে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী করে।
- এতে ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ বিদ্যমান থাকার কারণে এটি খাওয়ার ফলে শিশুর দাঁত ও হাড় মজবুত হয় এবং হাড়ের গঠন ঠিক থাকে।
পিডিয়া সিওর এর এতসব উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও যদি কোন বাচ্চা ঘরোয়া খাবার খায় তবে তাকে তাই খাওয়ানো উচিত। কেননা ঘরোয়া খাবার থেকে এর চেয়ে অনেক বেশি উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। তবে কেউ যদি বাপিডিয়া সিওর খাওয়ান তবে অবশ্যই সপ্তাহে তিন দিনের বেশি এবং দিনে দুইবারের বেশি খাওয়াবেন না।
পিডিয়া সিওর এর দাম কত
পিডিয়া সিওর হলো এক ধরনের সাপ্লিমেন্ট যা বাচ্চাকে অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি খাওয়ানো হয়ে থাকে। এতে করে বাচ্চার শরীরের পুষ্টি চাহিদা ঘাটতি পূরণ হয়। বাজারে বিভিন্ন ধরনের পিডিয়া সিওর পাওয়া যায়। এদের দামও একেক রকম। বাজারে সাধারণত চকলেট, ভ্যানিলা ও কেসার বাদাম এই তিন ফ্লেভারের পাওয়া যায়। নিচে পিডিয়া সিওর এর দাম আলোচনা করা হলো-
- ২০০ গ্রাম ভ্যানিলা ফ্লেভার পিডিয়া সিওর এর দাম সাধারণত ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
- ৪০০ গ্রাম ভ্যানিলা ফ্লেভার পিডিয়া সিওর এর দাম সাধারণত ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
- ৯০০ গ্রাম PediaSure Complete মিল্ক পাওড়ার ভ্যানিলা ( DUBAI ) এর দাম সাধারণত ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
- ৯০০ গ্রাম Pediasure Complete ক্লাসিক চকলেট মিল্ক পাউডার এর দাম সাধারণত ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
- ৪০০ গ্রাম PediaSure হেলথ ও নিউট্রিসন ড্রিংক পাউডার ফর কিডস গ্রোথ এর দাম সাধারণত ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।
এর বাইরে আরো অনেক ধরনের পিডিয়া সিওর এর কৌটা পাওয়া যায়। তাই এটি কিনার পূর্বে অবশ্যই প্যাকেটে দেওয়া মূল্য তালিকা, উৎপাদনের তারিখ এবং মেয়াদ ভালোভাবে দেখে তারপর কিনতে হবে। আপনার বাচ্চা কোন ধরনের ফ্লেভার পছন্দ করে তা জেনে নিয়ে তারপর এটি কিনুন। এতে করে এটি খাওয়ার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে।
pediasure age 1-3
কোন শিশুকে পিডিয়া সিওর না খাওয়ানোই ভালো। কেননা এতে যেসব পুষ্টি উপাদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। এছাড়াও এতে এমন অনেক উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে যার পুষ্টিগুণ শুন্য। তাই একেবারে বাধ্য না হলে বাচ্চাকে এটি খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
তবে কোনো কারণে যদি পিডিয়া শিওর খাওয়াতে হয় তবে এটিকে সেকেন্ডারি খাদ্য হিসাবে রাখা যেতে পারে। এটি খাওয়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন দিনে দুইবারের অধিক সময় এবং সপ্তাহে তিন দিনের বেশি খাওয়ানো না হয়।
আরো পড়ুনঃ সুস্বাস্থ্যের জন্য সুষম খাদ্যের গুরুত্ব
কেননা এটি অধিক পরিমাণে খাওয়ালে উপকারের পরিবর্তে নানা ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সর্বদা চেষ্টা করা উচিত বাচ্চাকে কোন ধরনের কৃত্রিম খাবার না খাইয়ে প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া খাবার খাওয়ানো।
পিডিয়া সিওর এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
আমাদের দেশে যতগুলো জনপ্রিয় সাপ্লিমেন্ট রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম পিডিয়া সিওর। এর উপকারী দিক থাকলেও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেগুলো জানার পর বাচ্চাদের এটি খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। পিডিয়া সিওর এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো নিম্নরূপ-
- এতে ক্যালরি ও চর্বি বিদ্যমান থাকার কারণে অধিক পরিমাণ এটি খাওয়ানোর ফলে শিশুরা অত্যাধিক স্বাস্থ্যবান হয়ে যেতে পারে।
- এতে ল্যাকটোজ ও চিনে থাকার কারণে এটি বিভিন্ন সময়ে বদহজমের কারণ হতে পারে।
- অধিক পরিমাণ এটি খাওয়ানোর ফলে শিশুদের অন্যান্য খাবারের প্রতি রুচি উঠে যায়। যা পরবর্তীতে শিশুর ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
- এতে অনেক ধরনের কৃত্রিম উপাদান মিশ্রিত থাকার কারণে ঘন ঘন একটি খাওয়ালে শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
- এতে যেসব পুষ্টি উপাদানের কথা উল্লেখ রয়েছে তা গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত নয়। তাই এটি খাওয়ানোর ফলে শিশুর শুধু পেটই ভরবে কিন্তু পুষ্টি চাহিদার ঘাটতে দেখা যেতে পারে।
মোটকথা যেসব শিশু বাড়তি খাবার খেতে পছন্দ করে তাদের বাজারে ক্রয়কৃত এসব কৃত্রিম খাবার না খাইয়ে ঘরোয়া খাবার খাওয়ানো উচিত। এতে করে যেমন শিশুর শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে তেমনি শিশু বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে। যা পরবর্তীতে তাকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করবে। তাই নিরুপায় না হলে কখনোই এসব খাবার খাওয়ানো উচিত নয়।
লেখকের মন্তব্য
যদিও পিডিয়া সিওর-এ বিদ্যমান পুষ্টি চাহিদার কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই তবুও এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সামান্য পরিমাণ হলেও সাহায্য করে থাকে। তাই যেসব শিশু খেতে চায় না তাদের না খাওয়ানোর চেয়ে পিডিয়া সিওর খাওয়ানো উত্তম। এতে করে সামান্য হলেও তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধন হবে।
প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনি এটি আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন। যাতে করে তারাও এই আর্টিকেল থেকে উপকৃত হতে পারে।
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url