OrdinaryITPostAd

আখ চাষ পদ্ধতি ও আখ চাষে সার - আখের সাথে সাথী ফসল চাষ

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি আখ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত না থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আখ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও আপনি এই আর্টিকেল থেকে আখের সাথে সাথী ফসল চাষ কিভাবে করতে হয় সেই সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই মনোযোগ সহকারে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।
আখ চাষ পদ্ধতি
বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে আখ বেশি চাষ হয় সে সম্পর্কে জানতে হলে এই আর্টিকেলটি আপনাকে সম্পূর্ণ করতে হবে। আখ সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয় ব্রাজিলে। আখ চাষ পদ্ধতি ও আখের সাথে সাথী ফসল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।

ভূমিকা

আখ একটি অর্থকারী ফসল। বর্তমানে দেশের অনেক কৃষক আখ চাষের প্রতি অনুপ্রাণিত হচ্ছে। কেননা বর্তমানে বিএসআরআই আখ-৪৮ নামের একটি নতুন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। এই জাতের আখ চাষ করার ফলে অধিক পরিমাণ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও যেহেতু আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করা যায় এর কারণে একই জমি থেকে একই খরচে একাধিক গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে।

এতে করে কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এছাড়াও চাষ করতে খরচ কম লাগে। সাধারণত আখ চাষ পদ্ধতিতে ১২ থেকে ১৫ মাস সময় লাগে। তাই আখ চাষিরা সারা বছর কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়। এতে করে তার আর্থিকভাবে লাভবান হয়। আখ চাষ সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে নালা পদ্ধতিতে আখের উৎপাদন বেশি পাওয়া যায়।

উন্নত জাতের আখ উদ্ভাবন হওয়ার কারণে আখের লাল পচা রোগ হয় না। এতে করে আখ নষ্ট কম হয়। যার কারণে অধিক ফলন পাওয়া যায়। সাধারণত বর্ষাকাল আখ চাষের জন্য উপযোগী। কেননা আখ চাষের ক্ষেত্রে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়।

আখ উৎপাদনে কোন দেশ প্রথম

আখ উৎপাদনে প্রথম দেশ ব্রাজিল। এর পরে ভারত ও চীনের স্থান। প্রতিবছর ব্রাজিলে ৭৪৬৮ লক্ষ টন আখ উৎপন্ন হয়। এছাড়াও ভারত ও চীনে প্রতিবছর যথাক্রমে ৩৭৬৯ লক্ষ টন ও ১০৮১ লক্ষ টন আখ উৎপন্ন হয়। আখ উৎপাদনে শীর্ষ বাকি দেশগুলোর নাম যথাক্রমে থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, মেক্সিকো, কলম্বিয়া, গুয়াতেমালা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের প্রতিবছর ৭.৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন আখ উৎপন্ন হয়।

আখ চাষের প্রধান অঞ্চল কোনটি

বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় কমবেশি আখ চাষ করা হয়। গড়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৪.৩ লক্ষ একর জমিতে আখ চাষ করা হয়ে থাকে। সেখান থেকে প্রতি বছর ৭৩ লক্ষ মেট্রিক টন তার উৎপন্ন হয়। বাংলাদেশের নাটোর জেলায় সবচেয়ে বেশি আখ উৎপন্ন হয়।

বাংলাদেশের সরকারি ১৫ টি চিনিকলের মধ্যে নাটোর জেলাতেই রয়েছে দুটি চিনিকল। এই ১৫ টি চিনিকল গড়ে প্রতিবছর ১.৫ থেকে ২ লক্ষ মেট্রিক টন চিনে উৎপন্ন করে থাকে এবং বাকি আখ গুলো খাওয়ার জন্য ও গুড় বানাতে ব্যবহার করা হয়।

আখ চাষের জন্য কোন ধরনের ভূমি উপযোগী

আখ প্রায় সব ধরনের মাটিতে জন্মাতে পারে। তবে পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা সম্পন্ন গভীর দোআঁশ মাটি আখ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। জমিকে আখ চাষের উপযোগী করতে ৩/৪ বার মই দিতে হয়। যেহেতু আখ আর চাষের জমি পারে নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো হতে হয় তাই জমিকে ১০০ ফুট/৫০ ফুট ভাগে ভাগ করে নালা কাটতে হয়।

আখ চাষের উপযোগী জমি সাধারণত দুই ভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে। একটি হলো ভাওর পদ্ধতি ও অপরটি হলো নালা পদ্ধতি। ভাওর পদ্ধতিতে জমিতে নাঙ্গল দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে লাইন টানা হয়। এর পর এসব লাইনে আখের টুকরা বপন করা হয়।

লাইনের গভীরতার কম বেশি হওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আরেক টুকরা উপরে উঠে আছে। যার কারণে এই পদ্ধতিতে চাষ করলে ফলন কম হয়। অন্যদিকে নালা পদ্ধতিতে জমির ১ মিটার দূরে দূরে নালা কাটতে হয়।

নালার গভীরতা বেশি হওয়ার কারণে আখের সকল টুকরায় নালার মধ্যে থাকে এবং আখের কোন অংশ নষ্ট হতো না। মেলার গভীরতা বেশি হওয়ার কারণে উপরের জমির মাটি সুস্থ হয়ে গেলেও নালার মাটিতে রস থাকে। এটি একটি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে অধিক ফলন পাওয়া যায়।

আখ চাষের সময়কাল

বাংলাদেশে অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত আখের চারা রোপন করা যায়। তবে আখের চারা রোপনের উপযুক্ত সময় হলো সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত। আখ রোপন থেকে পরিপক্ক হতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ মাস সময় লাগে।

আখের সঠিক পরিচর্যার উপর এর উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে। পরিচর্যা ভালো হলে উৎপাদন বেশি হয়। আর চাষের মাধ্যমে কৃষকেরা সারা বছর কাজ করার সুযোগ পায়। আখের গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৪৫-৭৫ টন।

আখের জাতের নাম

বাাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএসআরআই) এখন পর্যন্ত মোট ৪৬ টি আখের জাত উদ্ভাবন ও তা কৃষকের মাঝে বিতরণ করেছে। এইসব জাতই উচ্চ ফলনশীল অধিক চিনিযুক্ত। নিচে কয়েকটি আখের জাতের নাম, কৃষকের মাঝে বিতরণের সময়কাল, ফলন, চিনি আহরণ হারের একটি সারণি তৈরি করা হলো

আখের জাতের নাম

কৃষকের মাঝে বিতরণের সময়কাল

ফলন(টন/ হেক্টর)

চিনি আহরণের শতকরা হর


ঈশ্বরদী ১৬

১৯৮১

১০২

১২.২৮%


ঈশ্বরদী ১৯

১৯৮৮

৯৭

১১.০৬%


ঈশ্বরদী ২০

১৯৯০

৮৩

১১.০২%


ঈশ্বরদী ২১

১৯৯০

৮৭

১২.১০%


ঈশ্বরদী ২৫

১৯৯৩

৮৭

১০.৫৬%


ঈশ্বরদী ২৮

১৯৯৬

৯০

১১.৩%


ঈশ্বরদী ২৯

১৯৯৮

৯৩

১০.৮৭%


ঈশ্বরদী ৩০

২০০০

১১০

১০.৩৯%


ঈশ্বরদী ৩১

২০০০

১১৩

১০.২১%


ঈশ্বরদী ৩২

২০০২

১০৪

১০.২৩%


ঈশ্বরদী ৩৭

২০০৬

১০১

১৪.৪২%


ঈশ্বরদী ৩৮

২০০৭

১১৩

১২.১৮%


ঈশ্বরদী ৪০

২০০৯

১০৩

১৪.৮৬%


বিএআরআই আখ ৪১ ( অমৃত)

২০১২

১৪০

১২.১২%


বিএআরআই আখ ৪২ ( রংবিলাস)

২০১৪

১৭০

১১.১১%


বিএআরআই আখ ৪৩

২০১৪

১১৮

১৩.৭২%


বিএআরআই আখ ৪৪

২০১৪

১০৬

১৩.৩৫% 


বিএআরআই আখ ৪৫

২০১৬

১০৫

১৩.৮৮%


বিএআরআই আখ ৪৬

২০১৭

১০৩

১২.৯১%

আখ চাষে সার

আখ চাষের ক্ষেত্রে খুব অল্প পরিমাণ সারের প্রয়োজন হয়। আখ চাষের উপযোগী জমি তৈরি করার জন্য প্রতি হেক্টর জমিতে ২ থেকে ৩ টন জৈব সার, ১০০ থেকে ১৫০ কেজি চুন, জিংক সালফেট ১২ থেকে ১৫ কেজি, ৫০ থেকে ৬০ কেজি জিপসাম, টিএসপি সার দিতে হবে ১০০ থেকে ১১০ কেজি।

এছাড়াও ৬০ থেকে ৭০ কেজি ইউরিয়া এবং ৫০ থেকে ৬০ কেজি এমওপি সার দিতে হবে। এছাড়াও ছাড়া চারা রোপনের পর যখন কুঁশি গজায় তখন আবার ৬০ থেকে ৭০ কেজি ইউরিয়া এবং ৫০ থেকে ৬০ কেজি এমওপি সার দিতে হবে। এরপর আখ পরিপক্ক হওয়া পর্যন্ত আর কোন সারের প্রয়োজন হয় না।

আখ চাষ পদ্ধতি

আখ চাষের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম মাটি প্রস্তুত করে নিতে হয়। দোআঁশ ও এঁটেল-দোআঁশ মাটিতে আখ সবচেয়ে ভাল জন্মে। আখ চাষের জন্য এমন জমি নির্বাচন করতে হবে যেন সেখানে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো হয়। জমির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো করার জন্য কয়েকবার চাষ দিয়ে নিতে হবে।

এছাড়াও জমিতে যেন নিচে না হয় উঁচু বা মাঝারি উঁচু হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। জমি প্রস্তুত করার পর সাধারণত দুইটি পদ্ধতিতে আখ রোপন করা হয়। একটি হলো ভাওর পদ্ধতি এবং অপরটি হলো নালা পদ্ধতি। ভাওর পদ্ধতিতে সাধারণত লাঙ্গলের সাহায্যে গর্ত করে আখ রোপন করা হয়।

অপরদিকে নালা পদ্ধতিতে আখ রোপন করার জন্য এক মিটার দূরে দূরে ৩০ সেন্টিমিটার গভীর করে নালা খনন করা হয়। এরপর সেখানে আখ রোপন করা হয়। গাছ একটু বড় হওয়ার পর গাছ যাতে হেলে না পরে সেজন্য গাছ বেঁধে দিতে হয়। আখ গাছের শুকনো পাতা নিজে নিজে ঝরে পড়ে না তার জন্য পাতা শুকিয়ে গেলে গাছ থেকে ছিড়ে ফেলতে হয়।

মাটিতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো রাখতে এবং বাতাস চলাচল করার জন্য মাঝে মাঝে মাটি আলাদা করে দিতে হয়। আখ গাছে তেমন কোনো রোগবালাই দেখা না গেলেও আখ গাছের একটি অন্যতম প্রধান রোগ লাল পচা রোগ। এটি এক ধরনের ছত্রাক জনিত রোগ। এই রোগ হলে দেখা যায় আখ গাছের ভেতরে ফেকাশে লাল বর্ণ ধারণ করেছে।

তবে বর্তমানে উন্নত জাতের আখ চাষ করার কারণে আখ গাছগুলো এই রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছে। সঠিক পরিচর্যা ও যত্নের ফলে ১২ থেকে ১৫ মাস পর আখ পরিপক্ক হয়। তখন সেগুলো জমি থেকে কেটে নিয়ে আসতে হয়।

আখের সবচেয়ে উন্নত জাত কোনটি

বিএসআরআই এর উদ্ভাবনকৃত সবচেয়ে উন্নত জাতের আখ হলো বিএসআরআই আখ-৪৮। বিএসআরআইয়ের পক্ষ থেকে নতুন জাতটি সম্পর্কে বলা হয়েছে, এই জাত প্রতি এক একর জমিতে চাষ করলে ৯৩.৫ থেকে ১২১.৫২ মেট্রিক টন পর্যন্ত উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়াও এর চিনি ধারণ ক্ষমতাও বেশি।

বিএসআরআই আখ-৪৮ এর ধারণক্ষমতা ১২.০৬ থেকে ১৫.১১ শতাংশ। এছাড়াও এই জাত থেকে অধিক পরিমাণ গুড়ও পাওয়া যায়। গুরু উৎপাদনের হার ১০.৭৫ শতাংশ। এটি উন্নত জাত হওয়ার কারণে এতে লাল পচা রোগ হয় না। ফলে আখ নষ্ট কম হয়। এই জাতের আখগুলো অনেক মোটা হয়ে থাকে।

আখের সাথে সাথী ফসল চাষ

আখ চাষ পদ্ধতি লাভজনক হওয়ার অন্যতম কারণ হলো আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করা। উন্নত জাতের আখ চাষ করার পাশাপাশি যদি সাথী ফসল চাষ করা হয় তবে একই জমি থেকে দুই ধরনের ফসল পাওয়া সম্ভব। এতে করে অধিক লাভ করা সম্ভব। যেহেতু আখ চাষ একটি দীর্ঘ মেয়াদী চাষ পদ্ধতি তাই আখের সাথে আরেকটি স্বল্প মেয়াদে ফসল সুষ্ঠুভাবে চাষ করা যেতে পারে।

সাথী ফসল হিসেবে আমরা ডাল জাতীয়, মসলা জাতীয় অথবা তেল জাতীয় ফসল চাষ করতে পারি। ডাল জাতীয় ফসলের মধ্যে আমরা মসুর ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি ইত্যাদি চাষ করা যেতে পারে। এছাড়াও মসলা জাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন এবং তেল জাতীয় ফসলের মধ্যে তিসি, সরিষা, তিল, বাদাম ইত্যাদি চাষ করা যেতে পারে।

আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করার অন্যতম কারণ হলো এগুলো চাষ করতে আলাদা কোন জমির প্রয়োজন হয় না। এছাড়াও আলাদা করে সার ও সেচ দিতে হয় না। আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করার ফলে সাথী ফসলের পরিচর্যার করার সময় আখেরও আংশিক আন্তঃপরিচর্যা হয়ে যায়। এসব ফসলের গাছ ছোট হয় আখের সাথে পুষ্টি উপাদান গ্রহণের কোনো প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয় না।

এছাড়াও এসব ফসল উৎপাদনে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যদি আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করলে সেই সাথী ফসল ক্ষতি পুষিয়ে দেয়। আখের সাথে সাথে ফসল চাষ করার আরেকটি উপকার হলো সাথী ফসলে ব্যবহার করা বিভিন্ন সার ও ঔষধ আখ গাছেরও উপকার করে থাকে।

সাথী ফসলের চারা রোপনঃ আখ গাছের দুই সারির মাঝের মাটি আলগা করে নিয়ে বীজগুলো বপন করতে হয়। বীজ বপনের সময় আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করে নিতে হবে।

পরিচর্যাঃ আখ গাছের মতো এসব গাছেরও তেমন কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। তবে মাঝে মাঝে গাছের আগাছা পরিষ্কার করে দিতে হয়। এতে করে ফলন বেশি হয়। বীজগুলো থেকে গাছ বের হলে নির্দিষ্ট দূরত্বে গাছ রেখে বাকি কাজগুলো তুলে ফেলতে হয়। কেননা এসব গাছের ডালপালা একটু বেশি হয়।

পোকামাকড় দমনঃ এইসব গাছে সাধারণ ফল ছিদ্রকারী পোকা আক্রমণ দেখা যায়। এছাড়াও ছোলা ও মসুর ডালে জাব পোকার আক্রমণ হয়। এই পোকার আক্রমণ থেকে গাছকে রক্ষা করার জন্য কেরোসিনের সাথে ছাই মিশিয়ে ছিটিয়ে দিতে হয়। আবার মুগ ডালে বিছা পোকার আক্রমণ হয়ে থাকে। এই পোকার হাত থেকে গাছকে রক্ষা করার জন্য কেরোসিন মেশানো দড়ি জমির উপর দিয়ে টাঙিয়ে দিতে হয়। তাহলে এই পোকার আক্রমন রোধ করা যায়। আক্রমনের মাত্র অনেক বেশি হলে সঠিক মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করে পোকা দমন করা যায়।

আখ চাষ অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক কেন

আখ চাষ পদ্ধতি অর্থনৈতিকভাবে অনেক বেশি লাভজনক। কেননা আখ চাষ পদ্ধতিতে ফলন বেশি হয়। বর্তমানে উন্নত জাতের আখ চাষ করার ফলে অধিক ফলন পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। যার কারণে অধিক মুনাফা অর্জন করা যাচ্ছে। এছাড়াও আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করার কারণে একই সময়ে এবং একই জমিতে দুই ধরনের ফসল চাষ করা সম্ভব হচ্ছে।

এতে করে অধিক মুনাফা পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়াও সাথী ফসল চাষ করার জন্য আলাদা সেচের ব্যবস্থা ও সার দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না এতে করে খরচ কমছে। আখ চাষ পদ্ধতি যেহেতু একটি দীর্ঘমেয়াদী চাষ পদ্ধতি তাই দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আখ চাষিরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। এতে করে তাদের পরিবার আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে।

আখ চাষ পদ্ধতি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল হয় খুব বেশি সেচের প্রয়োজন হয় না এবং জমিতে প্রথম অবস্থায় সার প্রয়োগ করার পর আর কোন সার দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এতে করে উৎপাদন খরচ কমে যায়। যার কারণে আখ চাষ অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক।

আখ উৎপাদনে জলবায়ুর গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর

আখ চাষের ক্ষেত্রে জলবায়ুর গুরুত্ব অপরিসীম। আখের কাটা অংশ থেকে আখ গাছ সৃষ্টির জন্য আদর্শ তাপমাত্রা হলো ৩২° সেলসিয়াস থেকে ৩৮° সেলসিয়াস পর্যন্ত। এছাড়াও আখ চাষের ক্ষেত্রে বৃষ্টি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আখ চাষ পদ্ধতিতে একটানা ৬-৭ মাসেরও বেশি প্রচুর পানির দরকার হয়। তাই এ সময় যদি অধিক বৃষ্টিপাত হয় তবে আখ গাছ ভালো হয়। আখ গাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকতে হয়। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ যদি ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ হয় তবে দ্রুত আখ গাছ বৃদ্ধি পায়।

শেষ কথা

আখের উন্নত জাত আবিষ্কার হওয়ার হওয়ার জন্য এর উৎপাদন অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেহেতু আখ গাছের রস থেকে চিনি উৎপাদন করা হয় যা দেশের চিনির চাহিদা পূরণ করে তাই বেশি বেশি উৎপাদন করা প্রয়োজন। এছাড়াও আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করার কারণে একই জায়গা থেকে দুই ধরনের ফসল পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে লাভ বেশি হচ্ছে।

প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে তা আপনার আত্মীয় স্বজনদের সাথে শেয়ার করুন। এই আর্টিকেলটি আপনার কেমন লেগেছে তা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানান।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url