OrdinaryITPostAd

এক টুকরো আদার গুণ সম্পর্কে জানলে অবাক হবেন আপনিও - আদা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

প্রিয় পাঠক, আপনি কি আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অবগত নন? আপনি কি এই সম্পর্কে জানতে খুব ইচ্ছুক? তবে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। এই আর্টিকেলে আমরা আদার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই এ সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জনের জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি আদা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। কোন কিছুই যেমন নিয়মবহির্ভূত সেবন করলে তার থেকে তেমন প্রকার পাওয়া সম্ভব নয় ঠিক তেমনি আদাও নিয়ম মেনে না খেলে এর থেকে উপকার পাওয়া সম্ভব নয়। তাই এসব কিছু জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

ভূমিকা-আদার উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা কমবেশি সকলেই আদার সাথে পরিচিত। আদা এমন একটি উদ্ভিদ মূল যা আমরা মসলা এবং ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করি। আমাদের রান্নাঘরের পরিচিত একটি মসলা হলো আদা। তবে মসলার বাইরেও আদার অনেক গুনাগুন রয়েছে। মূলত প্রাচীন গ্রিক এবং রোমানরা এটি অনেক বেশি ব্যবহার করত। কারণ আদার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা ছিল তাদের।

যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে এবং যারা অতিরিক্ত ওজন কমাতে চান তাদের জন্য আদার রস হতে পারে একটি চমৎকার উপায়। এছাড়াও আদা শরীরের ত্বক উজ্জ্বল করতে ও রক্ত পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আদার অনেক উপকার থাকা সত্ত্বেও এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তা এটি সেবনের সময় সেই বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।

বর্তমান সময়ে আমরা ঘরোয়া উপকরণ গুলোর উপকারিতা সম্পর্কে সকলেই কমবেশি জানি। তবে সবচেয়ে উপকারী মসলা আদার গুনাগুন সম্পর্কে অনেকেই উদাসীন। তাই আজ আমরা জানব আদা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

আদা খাওয়ার সঠিক নিয়ম

আদা আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী সে বিষয়ে আমরা খুবই কম জানি। তাই আদার উপকারিতা গুলো আমরা যথাযথভাবে পাই না। আজ আমরা জানবো আদা খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে। চলুন আর দেরি না করে তাহলে জেনে নেওয়া যাক আদা খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি?আদা খাওয়ার সঠিক নিয়মটা আমরা জানি না বলে এর থেকে সর্বোচ্চ উপকার টা আমরা পাইনা।

আমরা যদি সঠিক প্রক্রিয়ায় ও পরিমাণ মতো নিয়মিত আদা সেবন করি তবে আমরা এর থেকে অনেক উপকার পেতে পারি। সাধারণত চারজনের একটি পরিবারের একদিনে বিভিন্ন রান্নায় ৫ থেকে ১০ গ্রাম আদার ব্যবহার হয়, তাই বেশিরভাগ পুষ্টি উপাদানের গুনাগুন ভোগ করতে আমাদের সময় লেগে যায়। আপনি চাইলে নিয়মিত চায়ের সাথে আদা খেতে পারেন।

সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা কিছু খাবার খেয়ে এক টুকরো আদা মুখে নিয়ে চিবাতে পারেন। এতে করে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। তবে খালি পেটে আদা খেলে যদি আপনার সমস্যা না হয় তাহলে আপনি খালি পেটে আদা খেতে পারেন। কারণ খালি পেটে আদা খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

আদা কুচি করে রোদে শুকিয়ে জিনজার বানিয়ে প্রতিদিন অল্প করে খেতে পারেন।যদি আপনার চা খাওয়ার অভ্যাস না থাকে তাহলে এক গ্লাস গরম পানিতে আদা কুচি করে কেটে ৩/৪ মিনিট রেখে সেই পানি পান করতে পারেন। তাতেও অনেক উপকার পাবেন।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা শুকনো কাঁচা যে কোন ভাবে প্রতিদিন ৪ গ্রাম আদা খেতে বলে। এর বেশি যেন না হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন। তবে হ্যাঁ একটা কথা মাথায় রাখতে হবে গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক গ্রাম আদা খাওয়া যেতে পারে। এর বেশি খাওয়া উচিত নয় এতে গর্ভে থাকা বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।

আদার রসের উপকারিতা

ওজন কমাতে এবং শারীরিক সুস্থতার জন্য আদার রসের অনেক উপকারিতা রয়েছে। আমরা কমবেশি সকলেই আদার রস গ্রহণ করি। আদাতে অনেক ধরনের উপাদান রয়েছে যেমন ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফলিড, সেলিনিয়াম ইত্যাদি। এসব উপাদান আমাদের শরীরের নানা ধরনের উপকার সাধন করে থাকে।

নিয়মিত আদা রস সেবন করার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও সাধারণ মানুষের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ও কমাতে সহায়তা করে এই আদার রস। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদার রস খুবই উপকারী একটি উপাদান।

আদা রসের সাথে পানি মিশিয়ে যদি আমরা ডিটক্স ওয়াটার হিসেবে খাই তাহলে আমরা অনেক শারীরিক উপকারিতা পাব। সেইসাথে এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। এই ডিটক্স ওয়াটার আমাদের ওজন কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আপনার যদি হজম জনিত কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আদার রস খেতে পারেন। কারণ আদার রস হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পরিপাকতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে আদার রস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আদার রস ত্বক সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগ দূরে রাখতে সহায়তা করে। আদার রস পান করার ফলে শরীরের রক্ত বিশুদ্ধ হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে। আপনি যদি নিয়মিত আদার রস সেবন করেন তাহলে ব্রণ এবং ত্বকের সংক্রমণের ঝুঁকিও অনেক আছে কমে যাবে।

শরীরে যেকোনো ধরনের ব্যথা দূর করার জন্য আদার রস নিয়মিত খেতে পারেন। নিয়মিত ভাবে যদি আপনি আদার রস পান করতে পারেন তাহলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকবে যার ফলে কোন ধরনের ব্যথা আপনার শরীর আসবেনা। এমনকি মাথা ব্যথারও উপশম করতে পারে আদার রস।

খালি পেটে আদা খাওয়ার উপকারিতা

আদা আমরা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে থাকি। বিশেষ করে রান্নার কাজে আদা বেশি ব্যবহার করা হয়। শুধুমাত্র রান্না করে এবং চা তৈরি করে খাওয়ার ফলে আদার পুরোপুরি উপকারিতা আমরা পাই না। আদার পুরোপুরি উপকারিতা পেতে হলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আদা পানি পান করলে এর পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ পাওয়া যায়।

আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্ত রাখতে আদা খুব কার্যকর। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে আদা পানি খেতে পারেন তাহলে এই পানীয়টি প্রাকৃতিকভাবে শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করবে। যা আপনার শরীরকে দ্রুত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে। এবং কিছুদিনের মধ্যে আপনি একটি সুঠামদের অধিকারী হবেন।

আপনি যদি খালি পেটে আদা পানি খান তাহলে বিপাক ক্রিয়া বাড়ে এবং বিপাকক্রিয়া ঠিক থাকলে সারাদিন স্বাভাবিক মাত্রায় যে কাজগুলো করবেন তার ফলে আপনার ক্যালরি পোড়াতে সহায়তা করবে। এজন্য খুব দ্রুত আপনার ওজন কমে যাবে।আপনি যদি নিয়মিতভাবে প্রতিদিন সকালে আদা পানি পান করেন তাহলে এটি আপনার শরীরে থাকা ময়লা ও টক্সিন দূর করতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও আদা পানিতে উপস্থিত এন্টি অক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিক্যালস এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। যা ভবিষ্যতে মারাত্মক ক্যান্সারের মতো রোগের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এছাড়াও আমাদের ত্বকের ফুসকুড়ি, ব্রণ এবং বার্ধক্যের লক্ষণ কমাতে এই পানীয়টি বেশ কার্যকর। নিয়মিত ভাবে যদি আদা পানি পান করতে পারেন তাহলে রক্তকে স্বাভাবিকভাবে বিশুদ্ধ করতে সাহায্য করবে।

নিয়মিতভাবে আদা পানি পান করার ফলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যবান দেখাবে। নিয়মিত সকালে খালি পেটে আদা পানি খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী হবে। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রদানের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। আদা পানি খাওয়ার ফলে হজমজনিত সমস্যা দূর হয়ে যায়।

এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা অনায়াসে দূর করতে পারে। এই সমস্যাগুলো দূর করার জন্য আপনি আদা পানি যেভাবে তৈরি করবেন- হাফ ইঞ্চি পরিমাণ আদা ছিলে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। চার কাপের মতো পানি ফুটিয়ে আদা কুচি করে ছেড়ে দিয়ে দশ মিনিটের মতো ফোটাতে হবে।

এরপর পানি ঠান্ডা হলে পান করতে হবে। এছাড়াও শুধুমাত্র হাফ ইঞ্চি আদা ভালোভাবে ধুয়ে ছিলে কুচি করে কেটে পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেই পানিটি পান করলেও খুবই উপকার পাবেন। আপনি আদা যেমন করে খান না কেন এর রস আপনার শরীরের ভেতর প্রবেশ করলে তা আপনার উপকার করবে।

পুরুষদের জন্য আদার উপকারিতা

বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে নারীদের পাশাপাশি পুরুষদেরও বন্ধ্যাতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের নেপথ্যে অনেকগুলো কারণ রয়েছে যার মধ্যে অন্যতম কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে বর্তমান সময়ের পুরুষদের মধ্য থেকে শুক্রাণুর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

শুক্রাণুর সংখ্যা এবং শুক্রানুর গতিশীলতা বাড়াতে রান্নাঘরে থাকা আদা অত্যন্ত কার্যকরীতা প্রমাণিত হয়েছে। প্রায় সব বাড়িতেই আদা রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। আদার রয়েছে অনেক ধরনের ভেষজ গুণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে ধরনের পুরুষরা যৌন সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য কার্যকর ভেষজ হচ্ছে আদা।

বিশেষজ্ঞদের মধ্যে পুরুষদের উর্বরতা সংক্রান্ত সমস্যার জন্য আদা একটি ওষুধের মত কাজ করে থাকে। আপনারা যারা শুক্রাণুর স্বল্পতায় সমস্যায় ভুগছেন তাদের নিয়মিত আদা খাওয়া উচিত। আদা খাওয়ার প্রভাবে শরীরের তাপমাত্রা অংশবিশেষ বৃদ্ধি পায় যা আপনার শরীরের শুক্রানু উৎপাদনের সহায়ক হতে পারে।

শরীরের টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে আদতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান খুবই কার্যকর। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন দুর্বল কর্মক্ষমতা এবং ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের বিরুদ্ধে আদা অত্যন্ত কার্য করি একটি উপাদান। তাই যেসব পুরুষ দুর্বলতা জনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত পরিমান মত আদা সেবন করতে পারেন এতে বেশ ভালো উপকার পাবেন।

সহবাসের আগে আদা খেলে কি হয়

আমরা সকলেই জানি আদা পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ একটি উপাদান। আজকে আমরা জানবো সহবাসের আগে আদা খেলে কতটা উপকৃত হওয়া যায়। অনেক পুরুষেরই যৌন সমস্যা থাকার কারণে বিয়ের পূর্বে এই সমস্যা নির্মূলের জন্য চেষ্টা করে। তবে বিবাহ পূর্ববর্তী সময়ে এই সব চেষ্টা গুলো করা একদমই বৃথা। কারণ বিয়ের আগে আপনি কখনো এই ধরনের সমস্যা ধরতে পারবেন না।

তবে অনেকের ধারণা রয়েছে সহবাসের পূর্বে যদি আপনি আদা খান তাহলে সহবাসের পারফরম্যান্স ভালো হবে। আদার উপকারিতা রয়েছে এটা ঠিক তবে শুধুমাত্র সহবাসের পূর্বে আদা খেলে যে পারফরম্যান্স ভালো হবে এটা একদমই ভুল ধারণা। আপনি শুধুমাত্র সহবাসের পূর্বে আদা না খেয়ে প্রতিদিন নিয়ম করে পরিমাণ মতো আদা খান।

সহবাসের পূর্বে আদা খেলে আপনি হয়তো কিছুটা উপকৃত হতে পারেন। তবে আপনি যদি নিয়মিত আদা খাওয়া অভ্যাসে পরিণত করতে পারেন সেটা আপনার শরীরের জন্য উপকারী হবে। আমি আপনাকে বোঝাতে চাচ্ছি শুধুমাত্র সহবাসের পূর্বে আদা খেয়ে সহবাসের পারফরম্যান্স ভালো করতে চান তাহলে এটা আপনার একটি ভুল সিদ্ধান্ত হবে।

আদার উপকারিতা ও অপকারিতা

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঔষধ ও খাদ্য হিসেবে আদা ব্যবহৃত হচ্ছে প্রায় দুই হাজার বছর আগে থেকে। প্রত্যেক বাঙালি রান্না ঘরে আদার উপস্থিতি অপরিহার্য। আদাতে রয়েছে জিঞ্জারাল নামের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বায়ো একটিভ যৌগ যা আদার ঔষধি গুণের জন্য বিখ্যাত।

জিঞ্জারাল উপাদান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টি ইনফ্লামেটরি হিসেবে কাজ করে। আদা হজমে সাহায্য করে এবং লালা গ্রন্থের ক্ষরণ বাড়ায় এবং বাইল নিঃসরণ করে। ওজন কমাতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে আদা খুবই কার্যকর। তাহলে চলুন জেনে নেই আদার উপকারিতা সম্পর্কে-

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
আদা খাওয়ার ৬০ মিনিট বা এক ঘন্টা পরে এর মধ্যে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল আমাদের শরীরের রোগ জীবাণুর ধ্বংস করতে শুরু করবে। সেই সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলবে। ঠান্ডা জনিত সমস্যা আপনার ধারের কাছেও ঘেসবে না। মুখের রুচি বৃদ্ধি করতে ও আদা বেশ কার্যকর।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে
আদা খাওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই আমাদের দেহের হজম ক্রিয়ার বিশেষ কিছু কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। অর্থাৎ পেটের গোলমাল সামলাতে এবং খাবার হজম করতে আদার রস সরাসরি কাজ করে এবং খুব দ্রুত কাজ করে। সেই সাথে পেটের গ্যাসের সমস্যা থাকলেও এটিও দূর করতে সহায়তা করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে
আদা খাওয়ার ৩০ মিনিট পর এর ভিতরে উপস্থিত থাকা জিংক এবং ম্যাগনেসিয়াম শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে শুরু করে। সেই সাথে প্রাকৃতিক পেইন কিলার বা ব্যথা নাশক হিসেবে কাজ করতে শুরু করে আদা। যার কারণে বাত জনিত ব্যথা এবং মাথাব্যথা থেকে খুব সহজেই মুক্তি মিলে।

ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে
আদা খাওয়ার ১২ ঘণ্টা পর এর নির্যাস আমাদের শরীরের কোষের গ্লুকোজের শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে যা ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ ও রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তাই যাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত পরিমাণমতো আদা খেতে পারেন।

সর্দি কাশি দূর করতে
শীতকালে যদি খুব বেশি কাশি আসে অথবা বুকে কফ জমে থাকে তাহলে এক টুকরো আদা খেয়ে নিতে পারেন অথবা চায়ের সাথে আদা খেতে পারে যেভাবেই খান না কেন উপকার পাবেন। যা আপনার কন্ঠনালী কে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করবে।

জয়েন্টের ব্যথা দূর করে
আদা খাওয়ার ৬ ঘণ্টা পরে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ বৃদ্ধি করে বলে নিয়মিত আদা খেলে শরীরের হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা দূর হয়ে যায়। এছাড়াও আপনার যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে থাকে তা খুব দ্রুত ভালো হয়ে যাবে নিয়মিত আদা খাওয়ার ফলে।

পুরুষের গুরুত্বপূর্ণ হরমোন বৃদ্ধি করতে
আদা খাওয়ার ২৪ ঘন্টা পর আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যা বর্তমান সময়ে প্রত্যেকটা পুরুষের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন। কারণ আদার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শরীরে হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে।

চুল পড়া বন্ধ করবে
নিয়মিত আদা সেবনের ২১ দিন পর আপনার মাথার চুল ঝরে পড়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও আদা উপকারী একটি উপাদান। এছাড়াও আদা মাথার ত্বক ভালো রাখে এবং খুশকির উৎপাদন বন্ধ করে। এর কারণ হলো আদাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, বি ও সি যেগুলো আপনার চুলের বাড়তি সুরক্ষা দিবে। সেইসাথে আপনার মাথার ত্বক, মুখের ত্বক ও ব্রণ উঠা বন্ধ করবে।

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
আদা সেবনের এক সাপ্তাহ পর আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কার্যকর ভাবে কমতে শুরু করবে। সেই সাথে আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরতে শুরু করবে। যার কারনে আপনার শরীরের অতিরিক্ত ওজন ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করবে
নিয়মিত আদা খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা পুরোপুরি নির্মূল করা যায়। তাই আপনি যদি গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এছাড়া শরীরে অতিরিক্ত ঘামের সমস্যা দূর করবে এই আদা।

বয়সের ছাপ দূর করতে
আদা সেবন করার ১৫ দিন পর আপনার শরীরে পুরোপুরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। এছাড়াও আদার রস আপনার ত্বকের বয়সের ছাপ কমতে শুরু করবে।

লিভার ভালো রাখতে
আদা আপনার লিভারকে শক্তিশালী করে তুলবে। আর আমাদের শরীরে থাকা ক্যান্সারের জীবাণুকে ধ্বংস করে দেয় আদা। অর্থাৎ আদা আমাদের শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

রক্তশূন্যতা দূর করতে সহায়ক
আদা খাওয়ার ৩০ দিন পর আপনার শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করবে। হৃদ যন্ত্রের কাজ ঠিক রাখবে। যার কারনে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে। হার্ট এটাক হওয়ার হাত থেকে আপনি অনেকাংশে নিরাপদ থাকবেন।

আদার গুনাগুনের মধ্যে অন্যতম গুণাগুণ হল আদা একদিন খেলেও এর উপকারিতা দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ দিন পর্যন্ত শরীরে কার্যকর থাকে। তাহলে আজ থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী এই মসলাটি খাওয়া শুরু করে দিন। প্রতিদিন তিন থেকে চার গ্রাম আদা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আর সুস্থ থাকুন হাজারো রোগ থেকে।

আদা খাওয়ার অপকারিতা

আদার প্রচুর গুন রয়েছে। সেই গুনাগুন বা উপকারিতা গুলো জানার পর যদি আপনি মুড়ি-মুরকির মতো আদা খেয়ে ফেলেন তাহলে কিন্তু এর উপকারের থেকে অপকারিতা বেশি দেখতে পাবেন। আদা, কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষের শরীরের জন্য পরম বন্ধুর মত কাজ করে আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আদা সবথেকে বড় শত্রু হয়ে দাঁড়ায়।

তাই আদা খাওয়ার আগে অবশ্যই কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেই আদা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে-

যারা রোগা হতে চান তাদের জন্য আদা উপকারী হলেও যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান তাদের জন্য আদা মোটে উপকারী নয়। কারণ আদা খিদে কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের চর্বি গলাতে আদা বেশ উপকারী। তাই যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান তারা আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

ডায়াবেটিসের মতো উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগীদের অধিক পরিমাণে আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ যারা উচ্চ রক্তচাপের মেডিসিন গ্রহণ করেন তাদের জন্য অতিরিক্ত আদার রস ক্ষতিকর হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি উচ্চ রক্তচাপ জনিত রোগীরা আদা খেতে চান তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।

যদি আপনার বুকে ব্যথা হওয়ার মত সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি আদা খাবেন না। কারন আপনার আদা খাওয়ার ফলে বুকে ব্যথা আরো বেড়ে যেতে পারে। আবার অনেক সময় দেখা যায় অতিরিক্ত পরিমাণে আদা খাওয়ার ফলে বুকে ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে।

আবার অনেকের অতিরিক্ত পরিমাণ আদা খাওয়ার ফলে বুক জ্বালাপোড়া, পেট ব্যথা এবং বমি বমি ভাব হতে পারে।

তাই আপনাদের যদি আদা সয্য না হয় তাহলে কম পরিমাণ আদা খান বা আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আদার অনেক স্বাস্থ্য উপকারী অনেকে জানলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে, আদা ক্ষতিকারক হয়ে যেতে পারে সেটি হয়তো আপনারা অনেকেই জানতেন না। এবার আদা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ক্ষতিকর দিকগুলো খেয়াল রাখবেন।

তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক আদা খাওয়ার ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে যেগুলো আদা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে-

ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে
অতিরিক্ত আদা খেলে ইনসুলিন লেভেল বৃদ্ধি পায়। ব্লাড সুগার লেভেল কমে। তাই আপনার যদি ডায়াবেটিকস থাকে এবং তার জন্য যদি মেডিসিন নেন তাহলে আদা খেলে মেডিসিন ডোজ চেঞ্জ করতে হতে পারে। ডায়াবেটিসের মেডিসিন নিলে তাই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর আদা খান।

গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে
কিছু কিছু গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে আদার খারাপ প্রভাব দেখাতে পারে। আদা খেলে কিছু হরমোন ক্ষরণের সাম্য নষ্ট হয়। যার কারণে প্রসবের সমস্যা হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের অতিরিক্ত আদা না খাওয়াই ভালো। তার পরেও যদি আপনি আদা খেতে চান তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

যারা বাচ্চাদের দুধ খাওয়ান তাদের ক্ষেত্রে
যারা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান তারা অতিরিক্ত পরিমাণে আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা অতিরিক্ত আদা খাওয়ার ফলে শিশুর নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

রক্ত ক্ষরণ বৃদ্ধি
অতিরিক্ত পরিমাণে আদা খাওয়ার ফলে শরীরের রক্তক্ষরণ বাড়তে পারে। তাই কোন ধরনের সার্জারির আগে বা পরে আদা না খাওয়াই ভালো।

হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি
যাদের পূর্ব থেকেই হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে আদা খেলে হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

আদা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই এ বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন। সব সময় চেষ্টা করবেন পরিমিত পরিমাণ আদা খাওয়ার। কখনই অধিক পরিমাণে আধা গ্রহণ করা উচিত নয়। এতে করে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

আদার প্রতিক্রিয়া

কিছু কিছু মেডিসিন এর সাথে আদা বিক্রিয়া করতে পারে। তাই সেই ধরনের মেডিসিনগুলো গ্রহণ করলে আদা খাওয়া উচিত নয়। যেমন ডায়াবেটিকস ও হাই ব্লাড প্রেসার এর মেডিসিন খেলে আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যদি আপনি আদতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন। নয়তো আদা আপনার উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি করে ফেলবে।

এছাড়াও যাদের আধা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি হয়ে থাকে তারাও আদা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। যদি খালি আদার রস খেতে না পারেন তবে এর সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতেও তার কোন উপকার পাওয়া যাবে।

লেখকের মন্তব্য

আদা সহজলভ্য মসলা হওয়া সত্ত্বেও এর অনেক গুনাগুন ও উপকারিতা রয়েছে। নিয়ম মেনে পরিমান মত আদা খেলে এটি আমাদের নানা ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এর উপকারের কথা চিন্তা করে একবারে প্রচুর পরিমাণ আদা খাওয়া উচিত নয়। এতে নানা ধরনের ক্ষতি হতে পারে।

প্রিয় পাঠক, আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে এসেছে। আদা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরে আপনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। আপনার যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই এটি আপনার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের মাঝে শেয়ার করুন। আপনার কোন মতামত থাকলে তা কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url