কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কামরাঙ্গার পুষ্টিগুণ
প্রিয় পাঠক, আপনি কামরাঙ্গা খাচ্ছেন অথচ আপনি জানেন না এটি আপনার শরীরের জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর। যদি এই সম্পর্কে না জেনে থাকেন তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা কামরাঙ্গার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই এ সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এছাড়াও এই আর্টিকেল করার পর থেকে আপনি জানতে পারবেন কামরাঙ্গার পুষ্টিগণ সম্পর্কে। কামরাঙ্গা অনেক পুষ্টিকর একটি ফল। যেটি না জানার কারণে অনেক মানুষই এই ফলটিকে এড়িয়ে চলেন এর টক স্বাদের কারণে। তাই কামরাঙ্গা সম্পর্কে এইসব তথ্য জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
ভূমিকা
কামরাঙ্গা হলো একটি মাঝারি আকৃতির কাছের টক মিষ্টি ফল। এই ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলুদ বর্ণ ধারণ করে। সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এ ফল পাওয়া যায়। তবে কিছু কিছু গাছে সারা বছরই এই ফল দেখা যায়। কামরাঙ্গা কাঁচা অবস্থায় টক স্বাদযুক্ত হলেও পাকলে কিছুটা মিষ্টি হয়।
কামরাঙ্গাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান। অনেকেই এই ফলটিকে এমনিতে খেতে পারেন না। তাই এটিকে চাটনি করে অথবা রান্না করে খাওয়া হয়। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষজন এটিকে চাটনি ও রান্না করে বেশি খেয়ে থাকেন। কামরাঙ্গার পুষ্টিগুণের কথা চিন্তা করে অধিক পরিমাণে এই ফলটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
একজন স্বাভাবিক মানুষ দিনে খুব অল্প পরিমাণ কামরাঙ্গা খেতে পারেন। এতে তার কোন সমস্যা হয় না। তবে যদি কিডনি সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তি কামরাঙ্গা খায় তবে তার কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। তাই এই ফল খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হতে হবে। এই আর্টিকেলে আমরা কামরাঙ্গার উপকারিতা ও অপকারিতা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।
কামরাঙ্গার পুষ্টিগুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম কামরাঙ্গায় যে সমস্ত পুষ্টিগুন দেখা যায় তা নিতে তুলে ধরা হলোঃ
- খাদ্য শক্তিঃ ৩১ কিলো ক্যালোরি
- প্রোটিনঃ ১.০৪ গ্রাম
- ফ্যাটঃ ০.৩৩ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেটঃ ৬. ৭৩ গ্রাম
- চিনিঃ ৩.৯৮ গ্রাম
- ফাইবারঃ ২.৮ গ্রাম
- ভিটামিন সিঃ ৬.১ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন এঃ ৬০০ আইইউ
- ভিটামিন বি৬ঃ ০.১ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন কেঃ ৪.৬ মাইক্রোগ্রাম
- ফসফরাসঃ ১২ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়ামঃ 133 মিলিগ্রাম
- জিংকঃ০.১২ মিলিগ্রাম
এছাড়াও, কামরাঙ্গায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফোলেট, এবং অন্যান্য কিছু খনিজ উপাদানও পাওয়া যায়।
কামরাঙ্গা খাওয়ার উপকারিতা
স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করে না এমন মানুষ কমই দেখা যায় তাই চিকিৎসকেরা শরীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য বিভিন্ন ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে সেই ফলের মধ্যে রয়েছে কামরাঙ্গা। কামরাঙ্গা একটি সহজলভ্য ফল। এটি খুব সহজেই পাওয়া যায় এবং দামে সস্তা। আমাদের বাড়ির আনাচে-কানাচে এই ফলটি প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়।
কামরাঙ্গা ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ রং ধারণ করে এবং পাকলে হলুদ রং ধারণ করে। কামরাঙ্গা অনেকেই ঔষধি ফল নামে চিনে থাকে এবং এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। তাই খাদ্য তালিকায় অন্যান্য ফলের পাশাপাশি কামরাঙ্গা ফল রাখা উচিত। কামরাঙ্গা খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে যা নিচে ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো।
মুখে রুচি ফিরাতেঃ আমাদের অনেক সময় খাবারে অরুচি হয়ে থাকে। সেজন্য আমাদের শরীর দিন দিন ভেঙ্গে যায়। তাই আপনার যদি মুখের অরুচি হয়ে থাকে তাহলে কামরাঙ্গা খেতে পারেন। এতে মুখে রুচি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
ত্বক সুন্দর করতেঃ ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে কামরাঙ্গা খেতে পারেন। কারণ কামরাঙ্গায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এছাড়াও ফোলেট, প্যান্থটেনিক এসিড রয়েছে। ভিটামিন সি ত্বকের কালো দাগ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি ত্বকের ব্রণ দূর করে, ত্বক পরিষ্কার রাখে ত্বকের বলি রেখা দূর করে অল্প দিনে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিক্স রোগীদের চিকিৎসকেরা নানা ধরনের ফল এবং মিষ্টি জাতীয় ফল থেকে দূরে থাকতে বলে কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কামরাঙ্গা খাবার পরামর্শ দিয়ে থাকে চিকিৎসকেরা। এতে মিলবে বিভিন্ন উপকারিতা।
ঠান্ডা ও জ্বর কমাতেঃ যাদের দীর্ঘদিনের ঠান্ডা রয়েছে তাদের জন্য কামরাঙ্গা একটি উপকারী ফল। আপনি যদি কামরাঙ্গা ভর্তা করে খেতে পারেন তাহলে অনেক দিনের ঠান্ডা কয়েকদিনের ভিতরে ঠিক হয়ে যাবে। আবার যাদের ঘন ঘন জ্বর হয়ে থাকে তারা কামরাঙ্গা খেতে পারেন। এতে ধীরে ধীরে জ্বর কমতে শুরু করবে।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ আমাদের শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েও যদি হজম হতে সমস্যা হয় তাহলে দেখা দিবে নানান সমস্যা। তাই হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য কামরাঙ্গা খেতে পারেন।
কোলেস্টরেল কমাতেঃ কামরাঙ্গা খেলে শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টরেল খুব সহজে কমিয়ে ফেলে। কারণ কামরাঙ্গায় রয়েছে সোডিয়াম ও পটাশিয়াম যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই কোলেস্টরেলের মাত্রা কমানোর জন্য কামরাঙ্গা খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ কামরাঙ্গায় রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, জিংক, ফাইবার ও অন্যান্য উপাদান যা কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো কঠিন রোগ দূর করতে সাহায্য করে।
দাঁত ও মাড়ি মজবুত করতেঃ কামরাঙ্গা খাওয়ার ফলে দাঁত ও মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে। কারণ কামরাঙ্গায় রয়েছে ভিটামিন সি। ভিটামিন সি দাঁত এবং মাড়ির জন্য অনেক উপকারী।
দুর্বলতা দূর করতেঃ কামরাঙ্গা দুর্বলতা দূর করে শরীরের পেশীকে শক্তিশালী এবং মজবুত করতে সাহায্য করে। কারণ কামরাঙ্গায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা রক্তের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। সুস্বাস্থ্য জীবনের জন্য নিয়মিত কামরাঙ্গা খেতে পারেন।
ক্যান্সার নিরাময়েঃ ক্যান্সার রোগী যদি নিয়মিত কামরাঙ্গা খেতে পারে তাহলে ক্যান্সারের রোগ আস্তে আস্তে কমতে শুরু করবে। কিন্তু পরিমাণ মতো খেতে হবে অন্যথায় অপকার হবে।
কৃমি থেকে মুক্তিঃ পেটে কৃমির আবির্ভাব বেড়ে গেলে দেখা দেয় নানান সমস্যা। তাই আপনি যদি কৃমির সমস্যার ভুলে থাকেন তাহলে কামরাঙ্গা খেতে পারেন। এতে ভালো ফলাফল পাবেন।
এছাড়া আরও বিভিন্ন উপকারিতা পাওয়া যায় কামরাঙ্গায় যেমন বাত ব্যথায়, রক্ত জমাট, পেটের ব্যাথা ইত্যাদি। আবার আমাশয় রোগীদের ক্ষেত্রে কামরাঙ্গার রস ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ধীরে ধীরে আমাশয় নিরাময় হবে।
কামরাঙ্গায় কোন ভিটামিন বিদ্যমান
কামরাঙ্গায় বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বিদ্যমান রয়েছে। যা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ভিটামিন এঃ কামরাঙ্গায় ভিটামিন এ রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম কামরাঙ্গায় ৬০০ আইইউ ভিটামিন এ থাকে। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি, ত্বক ও হাড়ের স্বাস্থ্যের ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ভিটামিন বি৬ঃ কামরাঙ্গায় ভিটামিন বি৬ পাওয়া যায় অল্প পরিমানে। প্রতি ১০০ গ্রাম কামরাঙ্গায় ০.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি৬ থাকে। ভিটামিন বি৬ শরীরের শর্করা, প্রোটিন ও চর্বি বিপাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ভিটামিন সিঃ কামরাঙ্গা ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস। প্রতি ১০০ গ্রাম কামরাঙ্গায় ৬.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও, ভিটামিন সি ত্বক, দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন কেঃ কামরাঙ্গায় ভিটামিন কে পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম কামরাঙ্গায় ৪.৬ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে রয়েছে। ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
এছাড়াও, কামরাঙ্গায় অন্যান্য কিছু ভিটামিনও দেখা যায়, যেমনঃ
- পটাসিয়াম
- ক্যালসিয়াম
- ম্যাগনেসিয়াম
- আয়রন
- থিয়ামিন
- রিবোফ্লাভিন
- নিয়াসিন
- ফোলেট
- প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে কি হয়, গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টিকর খাবারের দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হয়। কারণ এই সময় মায়ের খুদার ভাবটা অনেক অংশে বেড়ে যায়। সেই সাথে শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য মায়ের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয়। তাই ডাক্তারেরা পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার সাথে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল খেতে বলে, এতে মায়ের পুষ্টির অভাব পূরণ হয়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ফল খাওয়া উচিত নয় কিন্তু অনেক মায়েরা মনে করেন যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয়। আসলে কি এই কথাটি সত্য নাকি মিথ্যা। আমি বিভিন্ন রিচার্জ করে দেখলাম যে এই কথাটি ১০০% সঠিক নয়। চিকিৎসকের মতে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া যেতে পারে কারণ
কামরাঙ্গায় রয়েছে পটাশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এছাড়াও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও রয়েছে। গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, ফাইবার হজম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী, ভিটামিন এ গর্ভাবস্থা দৃষ্টি শক্তির উন্নতি করে এবং ভিটামিন সি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অন্যরকম ভূমিকা পালন করে।
অনেক মায়েরা মনে করেন যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয়। কিন্তু আপনি যদি কিছু নিয়ম মেনে কামরাঙ্গা খেতে পারেন তাহলে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাবেন। এ জন্য গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গার উপকারিতা পেতে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ টুকরা কামরাঙ্গা খেতে হবে। এবং কামরাঙ্গা খাওয়ার সাথে সাথেই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
চিকিৎসকেরা বলে থাকেন যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খাওয়া নিরাপদ কিন্তু কামরাঙ্গা পরিমাণ মত খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। অনেকেই আবার মনে করেন যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে কিডনিতে পাথর জমার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে গর্ভাবস্থায় কামরাঙ্গা খেলে কিডনিতে কোন ধরনের পাথর জমতে পারে না।
সেজন্য প্রতিদিন তিন থেকে চার টুকরা কামরাঙ্গা খেতে পারেন। কিন্তু আপনার যদি আগে থেকেই কিডনিতে কোন ধরনের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয়। এছাড়াও যদি কামরাঙ্গা খাওয়ার ফলে আপনার কোন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয় তবে এই ফল এড়িয়ে চলায় ভালো।
কিন্তু আপনার যদি কোন সমস্যা না হয়ে থাকে তবে গর্ভাবস্থায় অল্প পরিমাণ কামরাঙ্গা খাওয়া যেতে পারে। এতে করে কামরাঙ্গায় থাকা বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান শরীর শোষণ করে শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারবে। যা মা ও শিশু উভয়ের জন্যই কল্যাণকর।
কামরাঙ্গা খেলে কি ক্যান্সার হয়
আমরা অনেকেই মনে করে থাকি যে কামরাঙ্গা খেলে আমাদের দেহে ক্যান্সারের আবির্ভাব ঘটতে পারে কিন্তু এই কথাটি কতটুকু সত্য। একজন সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে কামরাঙ্গা খেলে কোন ধরনের ক্যান্সার আক্রমণ করতে পারবে না। কিন্তু আপনার যদি আগে থেকেই ক্যান্সারের রোগ থেকে থাকে সেক্ষেত্রে কামরাঙ্গা যদি অল্প পরিমানেও খান তাহলে ক্যান্সারের সমস্যা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করবে।
আর আপনার যদি আগে থেকে কোন ধরনের কিডনিতে সমস্যা কিংবা ক্যান্সার হওয়া এগুলো যদি না থেকে থাকে তাহলে প্রতিদিন পরিমাণ মতো কামরাঙ্গা খেতে পারেন। এতে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। কিন্তু কামরাঙ্গা খাওয়ার সময় একটি কথা মাথায় রাখতে হবে সেটি হল পরিমাণ। আপনাকে অবশ্যই পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে চলতে হবে সেজন্য প্রতিদিন তিন থেকে চার টুকরা কামরাঙ্গা কেটে খেতে পারেন।
কামরাঙ্গা পাতার উপকারিতা
আপনি কি জানেন কামরাঙ্গার যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমনিভাবে কামরাঙ্গার পাতারও অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। নিচে কামরাঙ্গা পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
কামরাঙ্গা পাতার অনেকগুলো উপকারিতার মধ্যে একটি হলো কৃমিনাশক রোগ নিরাময়। আপনি যদি সকালবেলা খালি পেটে কামরাঙ্গার কচি পাতা বেটে রস করে খেতে পারেন তাহলে কৃমিনাশক ঔষধ হিসেবে কাজ করবে। এটি একটি ঘরোয়া উপায় আপনি চাইলে ঘরোয়া উপায়ে আপনার পেটের কৃমি দূর করতে পারেন।
কামরাঙ্গা খাওয়ার অপকারিতা
কামরাঙ্গা একটি স্বাস্থ্যকর ফল এবং বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই ফল আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা উপরে কামরাঙ্গার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
কিন্তু কামরাঙ্গার এতগুলো উপকারিতা থাকার শর্তেও অনেকগুলো অপকারিতা রয়েছে যা আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কামরাঙ্গার অপকারিতা সম্পর্কে।
কিডনির সমস্যাঃ যারা অনেক আগে থেকেই কিডনির সমস্যায় ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয়। কারণ কামরাঙ্গায় রয়েছে অক্সালিক অ্যাসিড যা কিডনি ড্যামেজ করে অল্প দিনে।
বদহজমঃ খালি পেটে কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয়। খালি পেটে কামরাঙ্গা খেলে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা যেমন গ্যাস, বদহজম, বমি ইত্যাদি। তাই আমরা খালি পেটে কামরাঙ্গা খাওয়া থেকে বিরত থাকবো।
ডায়রিয়াঃ ডায়রিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে কামরাঙ্গা এড়িয়ে চলাই ভালো। এতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
পেট ফুলে যাওয়াঃ ভরা পেটে কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয় কারণ কামরাঙ্গায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার।তাই ভরা পেটে অতিরিক্ত কামরাঙ্গা খেলে গ্যাসটিক এবং পেট ফুলে যাওয়ার মত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও একজন সুস্থ ব্যক্তি যদি একবারে অতিরিক্ত পরিমাণ কামরাঙ্গা তবে তার নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শুধু কামরাঙ্গা নয় যে কোন কিছুই অতিরিক্ত খাওয়া ভালো নয়। তাই কামরাঙ্গার ক্ষতিকর দিকের কথা মাথায় রেখে সাবধানতার সাথে এই ফল খাওয়া উচিত। যাদের এই ফল খেলে সমস্যা হয় তাদের এই ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকায় উত্তম।
লেখকের মন্তব্য
কামরাঙ্গা একটি পুষ্টিকর ফল। কামরাঙ্গার অনেক উপকারিতার পাশাপাশি এর কিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে। তাই আমাদের এটি খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। কখনোই অধিক পরিমাণে কামরাঙ্গা খাওয়া উচিত নয়। এতে নানা ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়।
প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি তো আপনার আপনজনের মধ্যে শেয়ার করবেন। এই আর্টিকেলটি আপনার কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানাবেন।
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url