ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা - ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার বয়স
প্রিয় পাঠক, আপনি এই ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার বয়স সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। ল্যাকটোজেনের বিভিন্ন প্রকারভেদ থাকায় ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ার সঠিক বয়স জানা জরুরী। তাই এ সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।
ভূমিকা
ল্যাকটোজেন হলো গ্যালাকটোজ এবং গ্লুকোজের সংমিশ্রণে তৈরীর একটি দুগ্ধ জাতীয় পণ্য। এজন্য একে ডাইস্যাকারাইড বলে। একজন শিশুর জন্মের পর মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে ল্যাকটোজেন ১ দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে বলে রাখা হলো যদি কোন শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণ মায়ের বুকের দুধ পেয়ে থাকেন তবে তাকে বাইরের বাড়তি কোন দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।
কেননা একজন শিশুর জন্য সবচেয়ে উত্তম খাবার তার মায়ের বুকের দুধ। এতে তার পুষ্টি চাহিদার সকল উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। তার শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য অতিরিক্ত আর কোন খাবার দেওয়ার দরকার নেই। তবে যেসব শিশুরা ঠিকমতো মায়ের দুধ পায় না তাদের জন্য ল্যাকটোজেন ১ হতে পারে বিকল্প সমাধান।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি খেলে বাচ্চা ফর্সা হয়
ল্যাকটোজেন ১ এ একজন নবজাতকের সঠিক বৃদ্ধির জন্য যেসব পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন তার সবকিছুই এতে বিদ্যমান রয়েছে। নিয়মিত এটি খাওয়ানোর ফলে শিশু স্নায়ুবিক কার্যক্রম যথাযথভাবে হয়ে থাকে। সেই সাথে একটি শিশুর দৈহিক গঠন নিয়ন্ত্রণ করে। বয়স ভেদে ল্যাকটোজেন দুধের পরিবর্তন হয়েছে।
০-৬ মাস বয়সী শিশুদের ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানো হয়ে থাকে। এর বেশি বয়সী শিশুদের এটি খাওয়ানো উচিত নয়। এর তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না থাকার কারণে বিভিন্ন ডাক্তার শিশুকে এটি খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এটি নবজাতকের ক্ষুধা নিবারণের পাশাপাশি শারীরিক বিভিন্ন উপকার সাধন করে থাকে।
ল্যাকটোজেন ১ বানানোর নিয়ম
যখন একটি ছোট্ট বাচ্চার জন্য দুধ তৈরি করা হয় তখন বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি নজর রাখতে হয়। কেননা ছোট বাচ্চাদের খাবারের প্রতি বিশেষ যত্ন না দিলে সামান্য ভুলে বাচ্চার অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। তাই বড়দের তুলনায় শিশুদের যেকোন খাবার তৈরিতে নিয়ম ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাহলে চলুন ল্যাকটোজেন ১ বানানোর নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
- ছোট শিশুদের আমরা কিনা দুধ খাওয়ানোর সময় অবশ্যই ফিডার ব্যবহার করে থাকি। তাই ফিডার ব্যবহারের সময় অবশ্যই আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেহেতু ফিডার সাধারণত প্লাস্টিকের তৈরি হয়ে থাকে তাই এটি নির্বাচনে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা উন্নতমানের প্লাস্টিক না হলে তা থেকে নানা ধরনের রোগ জীবাণু ছড়াতে পারে। তাই ফিডার নির্বাচন করার সময় অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের একটি ফিডার নির্বাচন করতে হবে। যাতে করে এর থেকে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা না থাকে।
- ফিডারে দুধ বানানোর পূর্বে অবশ্যই ফিডার ও এই দুধ বানাতে ব্যবহৃত সামগ্রী গরম পানিতে পাঁচ মিনিট ভালোভাবে ফোটাতে হবে। এতে করে ফিডারের মধ্যে থাকা সমস্ত জীবাণু মরে যাবে। তারপর এতে পরিমাণ মতো পানি নিয়ে দুধ তৈরি করতে হবে।
- দুধ তৈরির ক্ষেত্রে প্রতি ৩০ মিলি পানির জন্য এক চামচ ল্যাকটোজেন ১ দিতে হবে। এই নিয়মে যতটুকু পানি নেওয়া হবে সে পরিমাণ ল্যাকটোজেন ১ ও সেই পানিতে দিতে হবে। তাহলেই দুধের ঘনত্ব ঠিক থাকবে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেহেতু দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাই পানি বাড়ানোর সাথে সাথে সে অনুপাতে ল্যাকটোজেন ১ এর পরিমাণও বাড়াতে হবে।
- দুধ বানানোর সময় এটিকে ভালোভাবে পানির সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে কোন অবস্থাতে যেন দলা বেধে না থাকে বা গুড়ি গুড়ি না থাকে। কেননা যদি এরকম থাকে তবে বাচ্চা খাওয়ার সময় তার গলায় আটকে যেতে পারে।
- দুধ বানানোর পর এর তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। যদি অত্যাধিক গরম থাকে তবে তা কোন অবস্থাতেই বাচ্চাকে খাওয়ানো যাবে না। এতে করে তার মুখ পুড়ে যেতে পারে। তাই শিশু যাতে সহ্য করতে পারে এমন তাপমাত্রায় পৌঁছানোর পর বানানো দুধ খাওয়াতে হবে।
- দুধ খাওয়া শেষ হলে ফিডার ভালো হবে ধুয়ে রাখতে হবে। যদি ভালোভাবে ধুয়ে রাখা না হয় তবে সেখানে নানা ধরনের জীবাণু বাসা বাধে। পরবর্তীতে যখন এই একই ফিডারে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো হয় তখন দুধের মাধ্যমে সেইসব জীবাণু শিশুর পেটের মধ্যে গিয়ে নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
এই নিয়মে দুধ বানালে একদিকে যেমন শিশু খুব সুন্দর ভাবে খেতে পারবে অন্যদিকে তেমনি তার কোন ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। সেই সাথে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে ল্যাকটোজেন ১ প্যাকেট খোলার তিন সপ্তাহের মধ্যে এটি খাওয়ানো শেষ করতে হবে। যদি শেষ না হয় তবে সেটিকে ফেলে দিতে হবে।
ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানোর বয়স
ল্যাকটোজেন ১ হলো সেই সকল শিশুদের জন্য যারা জন্মানোর পর ঠিকমতো মায়ের দুধ খেতে পারে না। একজন শিশু কাছে সবচেয়ে পুষ্টিকর খাদ্যগুলো তার মায়ের বুকের দুধ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মায়ের দুধ ঠিকমতো না হওয়ার কারণে শিশুকে বাইরের কেনা দুধ খাওয়াতে হয়। আর সেসব শিশু কথা চিন্তা করেই ল্যাকটোজেন ১ তৈরি করা হয়েছে।
ল্যাকটোজেন ১ তৈরি করা হয়েছে ০-৬ মাস বয়সী শিশুদের জন্য। এর বেশি বয়সী শিশুদের ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানো উচিত নয়। ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যে দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন সেই দুধ খাওয়াতে হবে। আপনি চাইলে তাদের ল্যাকটোজেন ২ ও ল্যাকটোজেন ৩ খাওয়াতে পারেন। তবে অবশ্যই বয়স অনুযায়ী যেটা তার প্রয়োজন সেটা খাওয়াতে হবে।
০-৬ মাস বয়সী একজন বাচ্চাকে যদি সঠিক নিয়মে ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানো হয় তবে এই দুধ তার পরিপূর্ণ করতে চাহিদা পূরণ করব। এই সময় শিশু শরীরের জন্য ঠিক যতটুকু পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন ততটুকু পুষ্টি উপাদান দুধের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। তাই নির্দ্বিধায় পরিমাণ মতো ০-৬ মাস বয়সী বাচ্চাদের এই দুধ খাওয়াতে পারেন।
ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানোর নিয়ম
একটি শিশুর বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে সঠিক শারীরিক গঠনের জন্য তার খাদ্যাভাসে নজর দেয়া প্রয়োজন। শুধুমাত্র সঠিক পরিমাণে খাদ্য গ্রহণ করলেই একজন শিশু বৃদ্ধি ও শারীরিক গঠন আশানুরূপ হয়ে থাকে। যদি সঠিকভাবে খাবার দেয়া না যায় তবে শিশু অপুষ্টিতে ভোগে এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
একজন শিশুকে সর্বপ্রথম মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। যদি শিশু বুকের দুধ ঠিকমতো না পায় তবে এর বিকল্প হিসেবে ল্যাকটোজেন ১ দেওয়া যেতে পারে। তবে শিশুর বয়স বাড়ার সাথে সাথে ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানোর নিয়ম পরিবর্তিত হয়। শিশুদের ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানোর কিছু নিয়ম রয়েছে। যেগুলো হলো-
- যেসব বাচ্চাদের বয়স ১-২ সপ্তাহ তাদেরকে ৯০ মিলি ফিডারে ৩ চামচ ল্যাকটোজেন ১ ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন ৬ বার খাওয়াতে হবে। এই বয়সে শিশুদের একদিনে এর চেয়ে বেশি খাওয়ানো কখনোই উচিত নয়।
- যেসব শিশুর বয়স ৩-৪ সপ্তাহ তাদেরকে ১২০ মিলি ফিডারে ৪ চামচ ল্যাকটোজেন ১ ভালোভাবে মিশিয়ে দৈনিক ৫ বার খাওয়াতে হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন মেশানোর সময় তা ভালোভাবে পানির সাথে মিশে যায়।
- ১-২ মাস বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে পরিমাণটা হবে ১৫০ মিলি ফিডারে ৫ চামচ ল্যাকটোজেন ১ ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৫ বার খাওয়ানো যেতে পারে।
- আপনার বাচ্চার বয়স যখন ৩-৪ মাস তখন আপনি চাইলে ১৮০ মিলি ফিডারে ৬ চামচ ল্যাকটোজেন ১ মিশিয়ে দৈনিক ৫ বার খাওয়াতে পারেন। তবে কখনোই এর চেয়ে বেশি খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। এতে করে শিশুর নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- বাচ্চার বয়স যখন ৫-৬ মাস তখন আপনি ২১০ মিলি ফিডারে ৭ চামচ ল্যাকটোজেন ১ মিশে দৈনিক পাঁচবার খাওয়াতে পারেন। সেই সাথে এই সময় বাচ্চাকে অন্যান্য খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করতে পারেন।
ল্যাকটোজেন ১ এ ব্যবহৃত উপাদান
ল্যাকটোজেন ১ কি হলো একটি ইনফ্যান্ট ফর্মুলা দুধ যা শিশুর খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যে সবচেয়ে জন্মের পরপর ঠিকমতো মায়ের দুধ পায় না তাদের মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে এটি খাওয়ানো হয়ে থাকে। ল্যাকটোজেন ১ বিভিন্ন উপকারী উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে রয়েছে ল্যাকটোজ, হোয়ে পাউডার, স্কিম মিল্ক ড্রাইভ ১৬.০৪%।
সেই সাথে এতে পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের অয়েল সংযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাই অলীক সানফ্লাওয়ার অয়েল, সয়া লেসিথিন 322i, কোকোনাট অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, লো ইরোসিস এসিড রেপসিড অয়েল ইত্যাদি।
এছাড়াও এতে বিদ্যমান অন্যান্য উপাদানগুলো হলো টরিন, ম্যালটোডেক্সট্রিন, ক্যারিয়ার গ্লুকোজ সিরাপ, প্রোবায়োটিক কালচার লিমোসিল্যাকটোব্যাসিলাস রিউটেরি ০.০৩৭৪%, এসিডিটি রেগুলেটর ৩৩০, কলিন, আ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (৩০৭ এবং ৩০৪), এল-কারনিটিন এবং ভিটামিন ও মিনারেল।
ল্যাকটোজেন ১ এর উপকারিতা
একজন শিশু স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য তার নানারকম পুষ্টি উপাদন প্রয়োজন। মহান আল্লাহ তা'লা সেই সমস্ত পুষ্টি মায়ের বুকের দুধে দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু কোন শিশু যদি পরিপূর্ণ মায়ের দুধ না পেয়ে থাকে তবে তার পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য চিকিৎসকগন শিশুকে ল্যাকটোজেন ১ বা অন্যান্য দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এই পর্যায়ে আমরা ল্যাকটোজেন ১ এর উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন ল্যাকটোজেন ১ এর উপকারিতা গুলো জেনে নেওয়া যাক-
খাদ্য চাহিদা পূরণ করেঃ একজন শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন খাদ্য। ল্যাকটোজেন ১ শিশুর খাদ্য চাহিদা মেটাতে সক্ষম। একজন শিশু জন্মের পরপর মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কোন খাবার খেতে পারেনা। তবে যদি ঠিকমতো সে মায়ের বুকের দুধ না পায় তবে তাকে ল্যাকটোজেন ১ এর ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। এই দুধ খাওয়ার ফলে শিশুদের পেট ভরা থাকে এবং শিশুর খাদ্য চাহিদা পূরণ হয়।
শিশুকে শক্তিশালী করেঃ আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি ল্যাকটোজেন ১ এ প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান। যার ফলে এটি খাওয়ার ফলে শিশু শক্তিশালী হয়ে উঠে। নিয়মিত এই দুধ খাওয়ার ফলে শিশুর শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। যা শিশুকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
দৈহিক বৃদ্ধি সাধনঃ আমাদের দেহের দৈহিক বৃদ্ধি সাধনে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ল্যাকটোজেন ১ এ প্রচুর পরিমাণ উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বিদ্যমান থাকে। যা শিশুর দৈহিক বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এটি খাওয়ার ফলে শিশুর বৃদ্ধি ভালো হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ ল্যাকটোজেন ১ এ ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি বিদ্যমান থাকায় এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সাথে এটি শিশুকে বিভিন্ন ধরনের রোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ ল্যাকটোজেন ১ এ বিদ্যমান ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
দাঁত ও হাড় মজবুত করেঃ ল্যাকটোজেন ১ এ প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম বিদ্যমান রয়েছে। যা শিশুর দাঁত ও হাড় গঠনে সাহায্য করে থাকে। সেই সাথে এটি শিশুর দাঁত ও হাড় শক্ত ও মজবুত করতে কাজ করে।
এছাড়াও এটি খাওয়ানোর ফলে শিশুর শরীরের রক্ত কণিকার গঠন ঠিকমতো হয়ে থাকে এবং শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন প্রবাহিত হয়। এই দুধ খাওয়ানোর ফলে সবচেয়ে বড় যে উপকারিতা পাওয়া যায় তা হলো শিশুকে পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়। কেননা খাদ্য ছাড়া শিশু পৃথিবীতে বাঁচতে পারে না। আর এটি তখনই খাওয়ানো হয় যখন শিশু ঠিকমতো মায়ের বুকের দুধ পায় না।
ল্যাকটোজেন ১ দুধের দাম
ল্যাকটোজেন হলো নেসলে কোম্পানির একটি পণ্য। বাংলাদেশে ল্যাকটোজেন ১ এর তিন রকম প্যাকেট পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্যাকেটের দাম বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
- সবচেয়ে ছোট ১৮০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ১ এর দাম ৩০০-৩১০ টাকা হয়ে থাকে।
- মাঝারি সাইজের অর্থাৎ ৩৫০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ১ এর দাম ৬৪০-৬৫০ টাকা হয়ে থাকে।
- সবচেয়ে বড় সাইজের অর্থাৎ ৪০০ গ্রাম ল্যাকটোজেন ১ এর দাম ৮৫০ টাকা।
ল্যাকটোজেন ১ এর দাম সারা বছরই প্রায় একই থাকে। তবে অনেক সময় দামের কিছুটা হেরফের দেখা যায়। আপনি কিনার পূর্বে অবশ্যই এর দাম ও মেয়াদ ভালোভাবে যাচাই করে নিবেন। এতে করে প্রতারণা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
ল্যাকটোজেন ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
ল্যাকটোজেন ১ যেহেতু একটি কৃত্রিম দুধ তাই এটি খাওয়ানোর ফলে অনেক সময় বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। সেই সাথে অনিয়মিতভাবে এবং পরিমাণের অতিরিক্ত খাওয়ানোর ফলে বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ল্যাকটোজেন ১ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো হলো-
- বমি বমি ভাব
- পেট খারাপ হওয়া/পাতলা পায়খানা হওয়া
- হজমের সমস্যা হওয়া
যেহেতু এটি মায়ের বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে শিশুকে খাওয়ানো হয় তাই আপনি যদি সঠিক নিয়মে ও পরিমান মত শিশুকে এটি খাওয়াতে পারেন তবে এর থেকে কখনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তবে আপনি যদি বেশি পুষ্টির আশায় অথবা অন্য কোন কারণে নিয়ম বহির্ভূত কাজ করলে তা শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই এটি খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই প্রস্তুত প্রণালী ও খাওয়ানোর নিয়ম ভালোভাবে দেখে নিন।
আমাদের শেষকথা
একটি শিশু পরিপূর্ণ বৃদ্ধি নির্ভর করে তার সঠিক খাদ্যাভাসের উপরে। যদিও নবজাতকের জন্য সেরা খাবার তার মায়ের বুকের দুধ। কিন্তু যদি পরিমাণ মতো বুকের দুধ পাওয়া না যায় তবে তাকে ল্যাকটোজেন ১ খাওয়ানো যেতে পারে। কেননা এটি মূলত মায়ের বুকের দুধের বিকল্প হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। এটি খাওয়ানোর ফলে শিশুর শরীরের যাবতীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে।
প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনি এটি আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন। যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে।
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url