OrdinaryITPostAd

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা - অর্জুন ছালের গুড়া খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় পাঠক, আপনি কি নিয়মিত অর্জুন গাছের ছালের গুড়া খাচ্ছেন? কিন্তু আপনি জানেন না এটি আপনার জন্য উপকারী না ক্ষতিকর? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই এর সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়াও এই আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে আপনি অর্জুন ছালের গুড়া খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। শুধু অর্জুনের ছাল নয় এর পাতা, ফল ও শিকড় আমাদের জন্য উপকারী। তাই এই সকল কিছু জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন।

ভূমিকা

অর্জুন একটি ঔষধি গুনসম্পন্ন উদ্ভিদ। এটি সপুষ্পক, পত্রঝরা, বৃহৎ আকৃতির বৃক্ষ। এর উচ্চতা সাধারণত ২০ থেকে ২৫ মিটার হয়ে থাকে। ভারতীয় উপমহাদেশের সব জায়গায় কমবেশি এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন চিকিৎসার কাজে এই গাছের ব্যবহার হয়ে আসছে। এই গাছের ছাল, পাতা, ফল, শিকড় সবকিছুই ভেষজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

এই গাছের সবকিছুই ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার ফলে লোকজন বলে থাকে বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা মানে একজন চিকিৎসক থাকা। এই গাছের গুনাগুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আয়ুর্বেদিক ও হোমিও উভয় শাস্ত্রেই অর্জুন গাছের ব্যবহার হয়ে থাকে। মহাভারত ও বেদ-সংহিতায় অর্জুন গাছের ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে শরীরের বল ফিরিয়ে আনতে এবং মনকে উজ্জীবিত রাখতে।

এটি এমন একটি গাছ যার উপকারিতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি মানব কল্যাণে ব্যবহৃত হচ্ছে যুগের পর যুগ ধরে। বিভিন্ন অসুখ নিরাময়ে এই গাছের ব্যবহার হয়ে থাকলেও এটির প্রধান ব্যবহার হৃদরোগের জন্য। হৃদরোগ নিরাময় করতে এই গাছের ছাল অনেক বেশি কার্যকরী। এর পাশাপাশি শরীরের ক্ষত, খোস পাঁচড়া ভালো করতে, জ্বর নিরাময়সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এই গাছ ব্যবহার করা হয়।

এই আর্টিকেলে আমরা অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ছাল খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন দেরি না করে আলোচনা শুরু করা যাক।

অর্জুন ছালের গুড়া খাওয়ার নিয়ম ॥ অর্জুন গাছের ছাল ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম

প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে অর্জুন গাছের ছাল একটি মহৌষধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কেননা এর রয়েছে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের অলৌকিক ক্ষমতা। এটি স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে শুরু করে হার্টের উন্নতি সকল ক্ষেত্রেই উপকারে আসে। তবে এটি খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। নিয়ম মেনে অর্জুন গাছের ছাল খেলে যতটা উপকার পাওয়া যাবে এলোমেলোভাবে খেলে তা পাওয়া যাবে না।

তাই অবশ্যই বেশি উপকার পেতে চাইলে এটি নিয়ম মেনে খেতে হবে। আপনি চাইলে এটি দুই ভাবে খেতে পারেন। একটি হলো অর্জুন ছালের গুড়া পানি অথবা দুধের সাথে মিশিয়ে খাওয়া। আরেকটি হলো অর্জুন গাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করা। এই দুই উপায় এর মধ্যে যে কোন একটি অবলম্বন করলে এর থেকে অনেক বেশি উপকারিতা পাওয়া সম্ভব।

অর্জুন ছালের গুড়া খাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে গাছ থেকে ছাল উঠিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে এরপর ছায়া জাতীয় কোন স্থানে রেখে ভালো করে শুকাতে হবে। শুকানোর জন্য এটি রোদে দেয়া যাবে না। ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে এটিকে গুড়া করে নিতে হবে। এখন এটি সকালে কিংবা রাতে এক গ্লাস পানি অথবা দুধের সাথে এক থেকে দুই চামচ গুড়া ভালোভাবে মিশিয়ে খেতে হবে।

অন্যদিকে অর্জুন গাছের ছাল তুলে এনে তা ছোট ছোট করে কেটে রাতের বেলা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি সকালে খালি পেটে খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। অথবা আপনি চাইলে সকালে অর্জুন গাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে তা রাতে ঘুমানোর পূর্বে সেই পানি খেতে পারেন। এতেও দারুন উপকার পাওয়া যাবে। সেই সাথে এই গাছের ছাল সংরক্ষণ করতে চাইলে রোদে শুকিয়ে রাখতে পারেন।

উপরোক্ত দুই নিয়মেই আপনি যদি নিয়মিত অর্জুন গাছের ছাল খেয়ে থাকেন তবে এর থেকে অনেক বেশি উপকার পাবেন। তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন একদিনে অধিক পরিমাণ অর্জুন ছাল খাওয়া না হয়। এতে করে উপকারের পরিবর্তে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।

অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ॥ হৃদরোগের মহৌষধ 'অর্জুন গাছের' যত গুণ

আমাদের চারপাশে যেসব বৃক্ষ খুব সহজেই চোখে পড়ে তার মধ্যে অর্জুন একটি। এটি অনেক সহজলভ্য হওয়ার পরেও এর রয়েছে অসামান্য ঔষধি গুনাগুন। পেয়ারা গাছের পাতার ন্যায় দেখতে আকারে একটু বড় পাতা বিশিষ্ট এই গাছকে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। কোথাও এই গাছের নাম ধাওয়াল, কোথাও আবার এই গাছের নাম নাদিসারজ, কুকুভ ইত্যাদি।

তবে যে নামেই ডাকা হোক না কেন এই গাছের ঔষধি গুনাগুন একই। প্রাচীনকাল থেকেই হৃদরোগের বিভিন্ন চিকিৎসায় এই গাছের ছাল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এছাড়াও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যায় এই গাছের ছাল অনেক বেশি উপকারী। এই পর্বে আমরা অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা গুলো হলো-

হার্টের সুস্থতায়ঃ বর্তমানে মানুষের সবচেয়ে কমন কয়েকটি রোগের মধ্যে হার্টের সমস্যার একটি। খুব কম বয়সেই অনেকেই এই রোগের শিকার হচ্ছেন। শুধু হার্টের সমস্যার কারণে বিশ্বের প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যাচ্ছেন। তাইতো আমাদের সকলেরই হার্টের যত্ন নেয়া অনেক বেশি জরুরী। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে অর্জুন গাছের ছাল। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এই গাছের ছাল সেবন করলে হার্টে রক্ত চলাচলের গতি স্বাভাবিক হয়। সেই সাথে এটি হার্টের ব্লকেজ দূর করতেও কাজ করে থাকে। এর ফলে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমে।

মেদ বা চর্বি কমাতেঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা অতিরিক্ত মেদের কারণে বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত। তাদের জন্য একটি সমাধান হতে পারে অর্জুন গাছের ছাল। কেউ যদি নিয়মিত এক মাস এই গাছের ছালের গুঁড়ো পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন তবে তার মেদ অনেকটাই কমে যাবে।

উচ্চ রক্তচাপ কমাতেঃ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে অর্জুন সাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই গাছের ছাল রক্তে থাকা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সেই সাথে এটি ব্লকেজ দূর করে রক্ত চলাচল কে স্বাভাবিক করে। ফলে উচ্চ রক্তচাপ থেকে মুক্তি মিলবে। এর জন্য নিয়মিত এক চামচ অর্জুন ছালের গুড়ো এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে।

ত্বকের যত্নেঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং বলিরেখা দূর করতে অর্জুন গাছের ছাল সাহায্য করে থাকে। এর জন্য অর্জুন গাছের সালের সাথে বাদাম, হলুদ ও সামান্য কর্পূর মিশিয়ে একটি প্রলেপ তৈরি করে তা ত্বকে লাগাতে হবে। এতে করে তোকে কালকে ভাব দূর হবে, বলিরেখা দূর হবে, ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হবে।

উন্নত চুলের জন্যঃ চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় অর্জুন গাছের ছাল কাজে আসে। এর জন্য অর্জুন গাছের ছালের গুঁড়ো মেহেদী পাতার সাথে মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত হবে। সেই সাথে সাদা চুল কালো হবে।

শুকনো কাশি নির্মূলেঃ শুকনো কাশি নিরাময় করার জন্য অর্জুন গাছের ছালের সাথে বাসক পাতা মিশিয়ে ভালো করে গুড়ো করে নিতে হবে। এরপর এটি মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। তাহলেই শুকনো কাশি দূর হয়ে যাবে। নিয়মিত কয়েক দিন খাওয়ার ফলে দীর্ঘদিনের কাশিও নির্মূল করা সম্ভব।

ডায়াবেটিস নিরাময়ঃ বর্তমান পৃথিবীতে ডায়াবেটিস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এটিকে নিরব ঘাতক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। দিন দিন এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই মরণঘাতী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অর্জুন ছাল কাজ করে থাকে। অর্জুন গাছের ছাল নিয়মিত খাওয়ার ফলে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে। তবে এক্ষেত্রে অর্জুন গাছের ছালের সাথে জাম বীজের গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়মিত খেতে হবে।

প্রস্রাব জনিত সমস্যার সমাধানঃ প্রস্রাব জনিত সমস্যার সমাধানে অর্জুন গাছের ছাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এর জন্য অর্জুন গাছের ছাল পানি দিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে সেই পানে নিয়মিত পান করতে হবে। তাহলেই এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।

হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ হজমশক্তি বৃদ্ধিতে অর্জুন গাছের ছাল খুবই উপকারী। আপনি যদি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর পূর্বে এক গ্লাস উষ্ণ গরম পানি বা দুধে এক চামচ অর্জুন ছালের গুঁড়ো খেতে পারেন তবে এটি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কাজে দিবে।

পেটের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানেঃ পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন গ্যাস্ট্রিক, পেটব্যথা, বদহজম ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যায় অর্জুন গাছের ছাল কাজ করে থাকে। নিয়মিত এটি খাওয়ার ফলে এসব সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ অর্জুন গাছের ছালে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। এ ছাড়াও এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে। এর ফলে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার রোধ করতেঃ অনেক গবেষণায় দেখা গেছে অর্জুন ছালে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলো ক্যান্সার কোর্স সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে থাকে। সেই সাথে এটি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি প্রতিহত করে। এছাড়াও শরীর থেকে ফ্রি রেডিকেল গুলো বের করে দিতে সাহায্য করে।

ক্ষত নিরাময়েঃ অর্জুন ছালে প্রচুর পরিমাণ ট্যানিন বিদ্যমান রয়েছে। এর ফলে এটি দ্রুত ক্ষত সারাতে কাজ করে থাকে। তাই কোথাও কেটে বা ছিড়ে গেলে দ্রুত সেখানে অর্জুন গাছের ছাল লাগিয়ে দিলে খুব তাড়াতাড়ি ক্ষত ভালো হয়ে যায়। সেই সাথে এটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করার ফলে ইনফেকশন হওয়া সম্ভাবনা থাকে না।

এছাড়া অর্জুন গাছের ছাল মুখের ফোস্কা ভালো করে, জ্বর নিরাময়ক হিসেবে কাজ করে, বাত ব্যথা ও আঘাত জনিত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে, বিভিন্ন যৌন সমস্যা দূর করে, অ্যাজমার সমস্যার সমাধান করে। এছাড়াও একটি মেছতা, রক্ত আমাশয়, কোষ্ঠকাঠিন্য, শারীরিক দুর্বলতা, গলা ব্যথা সহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করে থাকে। তবে এর জন্য প্রয়োজন সঠিক নিয়মে অর্জুন ছাল গ্রহণ করা।

অর্জুন গাছের ছাল কিভাবে খেলে তা হার্টের পক্ষে উপকারী

অর্জুন ছালের অনেকগুলো ঔষধি গুনাগুনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ করে থাকে হার্টের সমস্যা সমাধানে। বর্তমান পৃথিবীতে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। তাই আমাদের হার্টের ব্যাপারে যত্নশীল হতে হবে। আর হৃৎযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে অর্জুন গাছের ছাল।

সচরাচর হার্টের সমস্যা দেখা দেয় রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ও ব্লকেজ দেখা দিলে। আর অর্জুন ছাল রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে ও ব্লকেজ দূর করতে সাহায্য করে। এর জন্য আপনাকে অর্জুন ছালের সমপরিমাণ বন্য পেঁয়াজ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এক গ্লাস উষ্ণ গরম দুধের সাথে আধা চা চামচ মিশ্রণটি মিশিয়ে সেবন করুন।

এভাবে নিয়মিত মিশ্রণটি সেবন করার ফলে এটি আপনার রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। সেই সাথে এটি হার্টের ব্লকেজও দূর করবে।

অর্জুন চা এর উপকারিতা

আমরা হয়তো অনেকেই সামান্য গন্ধের কারণে অর্জুন গাছের ছাল খেতে পারি না। এর কারণে এই ছালের উপকারিতা থেকে আমরা বঞ্চিত হই। যারা এই গাছের ছাল খেতে পারেন না তাদের জন্য একটি সমাধান হতে পারে অর্জুন চা। এর জন্য আপনাকে অর্জুন গাছের ছাল ও পাতা দিয়ে চা তৈরি করতে হবে। অর্জুন চায়ের উপকারিতা গুলো হলো-
  • এটি রক্তনালীতে জমে থাকা চর্বি অপসারণ করে রক্ত চলাচল কে স্বাভাবিক করে।
  • রক্তে বিদ্যমান খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। সেই সাথে হৃদরোগের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করে থাকে।
  • এই চায়ে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান থাকায় এটি শরীরে দুর্বলতা কে দূর করে পেশীকে শক্তিশালী করে তোলে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এই চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • অর্জুন চা নিয়মিত পান করার ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ ঝরে যায়।
  • যদি কারো মাড়ি দিয়ে রক্তপাতের সমস্যা থাকে তবে এই চা নিয়মিত খাওয়ার ফলে মাড়ি দিয়ে রক্তপাত বন্ধ হয়।
  • অর্জুন চা জ্বর নিরাময়ে কাজ করে থাকে।
তাই যাদের পক্ষে এই গাছের ছাল সরাসরি খাওয়া সম্ভব হয় না তারা চাইলে এই গাছের ছাল দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন। এতে করেও অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।

অর্জুন ছালের অপকারিতা

প্রত্যেক জিনিসেরই উপকারী দিকের পাশাপাশি কিছু অপকারী দিক রয়েছে। অর্জুন গাছের ছাল এর ক্ষেত্রেও কিছু অপকারিতা রয়েছে। সেগুলো হলো-
  • গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে অর্জুন গাছের ছাল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই গর্ভবতী মহিলাদের এটি না খাওয়াই ভালো। তবে যদি এটি ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে তবে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করে এটি ব্যবহার করতে হবে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অর্জুন গাছের ছাল উপকারী হলেও এই ছাল ব্যবহারে তাদের অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। নয়তো এটি খাওয়ার ফলে তাদের সুগার লেভেল অনেক কমে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।
  • অর্জুন গাছের ছালে টারমিনালিয়া নামক এক ধরনের উপাদান বিদ্যমান থাকে যা রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা প্রদান করে। তাই কোন অপারেশনের আগে ও পরে এটি থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • নিম্ন রক্তচাপ বিশিষ্ট লোক এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কেননা এটি খাওয়ার ফলে আপনার রক্তচাপ আরও কমে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
  • কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে অর্জুন গাছের ছালে এলার্জি দেখা দিতে পারে। তাই যাদের এই সমস্যা দেখা দেয় তারা এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • অনেক সময় দেখা যায় এই গাছের ছাল ব্যবহারে হজমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। যাদের এ সমস্যা দেখা দেয় তারা কিছুদিন এই গাছের ছাল খাবেন না।
অর্জুন গাছের অপকারিতা তুলনায় এর উপকারিতা অনেক বেশি। তবে এটি খাওয়ার ফলে যাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তারা এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকায় উত্তম। সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এটি খাওয়ার পূর্বে বিশেষজ্ঞ একজন ডাক্তারের কাছ থেকে এটি খাওয়ার নিয়ম পরিমাণ জেনে তারপর সেবন করা।

লেখকের মন্তব্য ॥ অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা ও অপকারিতা - অর্জুন ছালের গুড়া খাওয়ার নিয়ম

অর্জুন খুবই ঔষধি গুণসম্পন্ন একটি উদ্ভিদ। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হার্টের সমস্যা থেকে শুরু করে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এই গাছের ছাল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এই গাছের ছালের অনেক উপকারিতা থাকলেও এর কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। তার এটি খাওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।

পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থেকে ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তবে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করুন এবং এরকম আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url