OrdinaryITPostAd

পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে - বুক ধড়ফড় দূর করার ঘরোয়া উপায়

প্রিয় পাঠক, আমাদের জীবনে কখনো না কখনো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি এবং এর থেকে খুব সহজে সামান্য সতর্কতা অবলম্বন করার মাধ্যমে পরিত্রাণ পেয়েছি। তবে আমরা বেশ কিছু প্রশ্ন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন হলো পেটে গ্যাস হলে বুক ধরফর করে কিনা? গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয়? ইত্যাদি।
পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে
এই আর্টিকেলে আমরা এসব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। এছাড়াও বুকে লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই এসব কিছু জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পেটে গ্যাস হলে কি বুক ধরফর করে

আমাদের জীবনের সবারই কমবেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে। বর্তমান সময়ে এমন একজন মানুষের পাওয়া যাবে না যার জীবনে কখনো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়নি। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে বুকে ব্যথা সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি বুক ধরফরও করতে পারে। তবে বুক ধরফর করলেই তা যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এটি নিশ্চিত করে বলার কোন উপায় নেই।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন কারণে বুক ধরফর করতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হলো অনেক বেশি উত্তেজিত হওয়া। এ সময় হার্টবিট বেড়ে যায় বলে বুক ধরফর করতে পারে। তবে যদি আপনি বুঝতে পারেন যে গ্যাস্ট্রিকের কারণে বুক ধরফর করছে তবে তা হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

আবার অনেক সময় অতিরিক্ত চিন্তার কারণে হার্টবিট বেড়ে গিয়ে বুক ধরফর করতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার যদি ধূমপান ও চা, কফি পানের অভ্যাস থাকে তবে তা পরিহার করতে হবে এবং যতটা সম্ভব দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে। এর পাশাপাশি আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কমাতে হবে। কেননা ঘুম একজন মানুষকে শান্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

তবে আপনি যদি বুক ধরফর করার নির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে না পান তবে আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কেননা বুক ধরফর করা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণও হতে পারে। তাই আপনার কি কারণে বুক ধরফর করছে তার সঠিকভাবে জানার জন্য যত দ্রুত সম্ভব পরামর্শ নেওয়া উচিত।

এই পর্ব থেকে আমরা এটি নিশ্চিত হলাম যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে বুক ধরফর করতে পারে। তবে বুক ধরফর করলেই তা যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তা নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয়। কেননা বুক ধরফর করার আরো অনেক কারণ রয়েছে। তাই সঠিকভাবে বুক ধরফর করার কারণ নির্ণয় করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।

বুকে গ্যাস জমার লক্ষণ

বুকে গ্যাস জমার অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বুকে জ্বালাপোড়া হওয়া, পেট ফোলা ও ক্ষুধামন্দা। এছাড়াও বুকে গ্যাস জমলে বদহজম, পেটে ব্যথা, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ঢেকুর তোলা, বুকে চিনচিন অনুভূত হওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করা প্রয়োজন।

এছাড়াও বুকে গ্যাস জমলে প্রচন্ড মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে বুকে গ্যাস জমার কারণে মাথাব্যথার পাশাপাশি বমি বমি ভাব এমনকি বমিও হতে পারে। এসব লক্ষণ দেখলে বোঝা যাবে তার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই সাথে বুকে গ্যাস জমার অনেকগুলো কারণও রয়েছে। সেগুলো হলো-

অতিরিক্ত পরিমাণে তেলে ভাজা খাবার খাওয়াঃ বুকে গ্যাস জমার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো অতিরিক্ত পরিমাণ তেলেভাজা খাবার খাওয়া। বিশেষ করে ফাস্টফুড এর দোকানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পরিমাণ এসব খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত এসব খাবার খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস্টিক গ্ল্যান্ড এসিড মিশ্রণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় যার ফলে বুকে গ্যাস জমে। এর ফলে বুকে তীব্র জ্বালাপোড়া সহ ব্যথা অনুভব হয়।

অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার গ্রহণঃ আমরা কোন অনুষ্ঠানে গেলে বা কোথাও বেড়াতে গেলে অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার খেয়ে থাকি। এর ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে তা পাচনতন্ত্রকে চাপ প্রয়োগ করে হলে সেখান থেকে গ্যাসের উৎপত্তি হয় এবং তা আমাদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান না করাঃ একজন সুস্থ মানুষের দিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করা উচিত। এর কম পানি পান করলে শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দিবে। এর ফলে খাবার ঠিকমতো হজম হতে পারবে না। এর ফলশ্রুতিতে পেট ভার হয়ে থাকবে এবং পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিবে। তাই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা উচিত।

মানুষের সাধারণত উপরিউক্ত এই তিনটি কারণেই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে। যেমনঃ অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে, কোষ্ঠকাঠিন্য হলে, ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা হলে, পাচক রোগ হলে, খাদ্যে বিষক্রিয়া হলে, পিত্তথলি রোগ হলে ইত্যাদি।

গ্যাসের ব্যথা বুকের কোন পাশে হয় - গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কোথায় কোথায় হয়

আমাদের অনেক সময় পেটে গ্যাস হওয়ার কারণে বুকের বা পাশে ব্যথার অনুভব হতে পারে। কেননা যখন পেটে অনেক বেশি গ্যাস জমা হয় তখন সেটি ডায়াফ্রামে চাপ প্রয়োগ করে। এই চাপ প্রয়োগ করার কারণেই ব্যথা অনুভূত হয়। আমরা অনেক সময় একে হৃদরোগের লক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকি। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি হৃদরোগের কোন লক্ষণ নয় বরং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।

তবে সাধারণত গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বুকের মাঝখান থেকে শুরু হয়ে তা ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ বুকে বিস্তার লাভ করে। এ সময় মাঝেমাঝে বুক চিন চিন করে ওঠে। বিশেষ করে এই ব্যথা খাবার খাওয়ার পর দেখা দেয়। আবার একবার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় তবে খালি পেটে থাকলেও বুকে কিংবা পিঠের থেকে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। তবে সবার ক্ষেত্রে এই ব্যথা কি রকম হয় না।

এছাড়াও গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পেপটিক আলসার, গ্যাসট্রাইটিস, আইবিএস (ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম), ফুড পয়জনিং, অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাদ্য গ্রহণ, অতিরিক্ত পানীয় পান, অতিরিক্ত ফাইবারযুক্ত খাবার গ্রহণ ইত্যাদি। তাই যখন গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা অনুভব হবে তখনই গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সেবন করার প্রয়োজন।

এই আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা সাধারণত বুকের মাঝ থেকে শুরু হয়ে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ বুকে বিস্তার লাভ করে। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে এই ব্যথা বুকের বা পাশে, ডান পাশে বা পিঠে দেখা দিতে পারে। তাই বুকের বা পাশে ব্যথা হলেই যে সেটি হৃদরোগের লক্ষণ তা বলা যাবে না। এ সময় যদি গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সেবন করার পরও বুকের বা পাশের ব্যথা ভালো না হয় তবে খুব দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

গ্যাস্ট্রিক বুকে ব্যাথা দূর করার উপায়

আমাদের সকলেরই মাঝেমধ্যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। সাধারণত পেটে এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা শুরু হয়। এর সাথে যোগ হয় পেট ফোলা ভাব ও হজমজনিত সমস্যা। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণের সবচেয়ে কার্যকারী উপায় হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাস। কেননা সাধারণত অধিক তেল ও মসলা জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলেই আমাদের পেটে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা শুরু হয়।

প্রচুর পরিমাণ পানি পানঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সাধারণত পানি কম পান করার জন্যই হয়ে থাকে। তাই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা দূর করার জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।

উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণঃ আঁশ জাতীয় খাবার আমাদের পরিপাকতন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা দূর করার জন্য আমাদের বেশি বেশি আর জাতীয় খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন। আঁশ জাতীয় খাবারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বীজ, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি চাইলে সবজির পানীয় খেতে পারেন। যেমন আলুর রস, কুমড়োর রস ইত্যাদি। এক্ষেত্রে এগুলো আপনার গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।

ঘন ঘন খাবার গ্রহণঃ একবারে অধিক পরিমাণ খাবার গ্রহণ না করে অল্প অল্প করে ঘন ঘন খাবার খেতে পারেন। এতে করে আপনার বুকে গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা অনুভূত হচ্ছে তা ঠিক হয়ে যাবে।

খাদ্য তালিকা সমন্বয়ঃ সাধারণত কার্বনেটেড পানীয় পেটের মধ্যে গ্যাসের বুদবুদের সৃষ্টি করে। তাই এ সময় এসব পানীয় এড়িয়ে চলুন। সেইসাথে মটরশুঁটি, বাঁধাকপি, পেঁয়াজ ফেটে গ্যাস সৃষ্টি করে। তাই এসব খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ সেবনঃ যদি কারো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য বুকে ব্যথা শুরু হয় তবে দেরি না করে অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ সেবন করুন। এটি পেটে বিদ্যমান ড এসিড নিরপেক্ষ করতে এবং বদহজম থেকে মুক্তি দিতে কাজ করে থাকে।

গুড় খানঃ এসিডিটি বা বুক জ্বালাপোড়া থেকে দ্রুত পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে গুড়। এক্ষেত্রে আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয় তবে অল্প পরিমাণ গুড় মুখে দিয়ে চুষতে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি গলে যায়। এক্ষেত্রে কিছুক্ষণের মধ্যেই বুক জ্বালাপোড়া কমে যাবে। তবে এ সময় চিবিয়ে না খাওয়ায় ভালো। ডায়াবেটিস রোগীদের এই পদ্ধতি গ্রহণ না করাই উত্তম।

আদাঃ গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে আধা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এজন্য আপনি প্রতিবার খাবার ৩০ মিনিট পূর্বে সামান্য পরিমাণ আদা রস করে বা চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে করে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

ভেষজ চাঃ ভেষজ চা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যাদের নায়বিক সমস্যা বা আইবিএস এর কারণে গ্যাস্ট্রিক হয়ে থাকে তারা চাইলে রান্নাঘরে বিদ্যমান উপাদান যেমন মৌরি, আদা, লেবুর রস, পুদিনা পাতা, লবঙ্গ, এলাচ ইত্যাদি ব্যবহার করে একটি ভেষজ চা তৈরি করে সেবন করতে পারেন। এতে করে খুব দ্রুত আপনার বুক জ্বালাপোড়া, বদ হজম ও বুকে ব্যথা দূর হবে।

ইসবগুলের ভুষি ও দইঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে ইসবগুলের ভুষি ও দই দারুন কাজ করে থাকে। এর জন্য ইসবগুলের ভুষি দইয়ের সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। দুইয়ের সাথে মিশিয়ে ইসবগুলের ভুষি খেলে পেট খারাপ, বদহজম ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়।

পেঁপেঃ গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে পেঁপে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। পেতে বিদ্যমান পাপায়া নামক এনজাইম হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর ফলে নিয়মিত পেঁপে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হয়।

আপেল সিডার ভিনেগারঃ এটি অন্ত্রে অ্যাসিডিক মাইক্রোন পরিবেশ সৃষ্টি করার পাশাপাশি হজমের সহায়ক এনজাইম গুলোকে সক্রিয় করে তুলতে কাজ করে থাকে। এর ফলে খুব দ্রুত হজম হয় এবং গ্যাস্ট্রিক সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়।

বুক ধড়ফড় দূর করার ঘরোয়া উপায়

তোমাদের মধ্যে অনেকেই বুক ধরফর করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন। দুশ্চিন্তা করার ফলে বুক ধরফর আরও বেড়ে যেতে পারে। আমাদের অনেক সময় হঠাৎ করেই বুক ধরফর করতে শুরু করে। বিশেষ করে যখন কোন কিছু দেখে আমরা ভয় পাই তখন বুক ধরফর বেশি হয়। কেননা ভয় পাওয়ার কারণে হৃদ স্পন্দন বেড়ে যায় ফলে বুক ধরফর করে।

এছাড়াও বুক ধরফর করার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অ্যালকোহল পান করা, রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম থাকা, শরীরে পানি অভাব হলে, হৃদযন্ত্রের কোন সমস্যা দেখা দিলে। তবে সাধারণত কোন কারণ ছাড়াই বুক ধরফর করতে পারে। তাই বুক ধরফর দূর করার উপায় গুলো হলো-
  • অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করা। সব সময় শান্ত থাকা।
  • ধূমপান বা ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করা, সেই সাথে অ্যালকোহল জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকা।
  • নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করা। বিশেষ করে মেডিটেশন করা।
  • অতিরিক্ত পরিশ্রম পরিহার করা।
উপরোক্ত পরামর্শ গুলো মেনে চললে আপনি বুক ধরফর কমাতে পারবেন। তবে তা যদি কোন অসুখ জাতীয় কারণে হয়ে থাকে তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

বুক ভার হয়ে থাকে কেন

অনেক সময় আমাদের বুকে চাপ অনুভূত হয়। বিভিন্ন কারণে বুক ভার হয়ে থাকতে পারে। কারণগুলো জেনে রাখা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয়। কেননা যদি কখনো এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হই তবে তা মোকাবেলা করা সহজ হবে। তাহলে চলুন বুক ভার হওয়ার কারণগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

গ্যাস্ট্রিকের কারণেঃ বুক ভার হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। আমাদের মাঝেমধ্যেই এই সমস্যা দেখা দেয়। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার কারণে বুক ভার হয়ে থাকে।

হৃদযন্ত্রের কারণেঃ বুক ভার হওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ হলো হৃদযন্ত্রের সমস্যা। যদি কারো হৃদযন্ত্রের সমস্যা থেকে থাকে তবে অনেক ক্ষেত্রে বুক ভার হয়ে থাকে। তবে বুক ভার হলেই যে তা হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে হয়েছে তা বলা যাবে না। এছাড়াও অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, হৃদযন্ত্রের রক্তনালীর সংকোচন ইত্যাদির কারণে বুক ভার হয়ে থাকে।

খাদ্যনালীর সমস্যায়ঃ খাদ্যনালির বিভিন্ন সমস্যা যেমন খাদ্যনালী সংকুচিত হওয়া, খাদ্যনালীর নিচের অংশ চিকন হয়ে যাওয়া, খাদ্যনালীতে প্রদাহ বিভিন্ন কারণে বুকে চাপ ধরে থাকে বা বুক ভার হয়ে থাকে।

শ্বসনতন্ত্রের সমস্যায়ঃ শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার কারণে বুক ভার হয়ে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা, ফুসফুসে পানির আধিক্য, ফুসফুসের অত্যাচারে যাওয়া, শ্বাসনালীর প্রদাহ ইত্যাদি। এসব কারণেও বুক ভার হয়ে থাকতে পারে।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটিই প্রমান হয় যে বুক ভার হয়ে থাকার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা। তবে যে কারণেই বুক ভার লাগুক না কেন যাতে দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। নতুবা বড় কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে।

লেখক এর মন্তব্য

আমাদের সকলেরই কমবেশি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা দেখা দিলে আমাদের সামান্য সতর্কতা অবলম্বন করার মাধ্যমে তা থেকে পরিত্রান পাওয়া সম্ভব। তবে যদি অধিক পরিমাণে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ও বুকে ব্যথা শুরু করে তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনি এটি আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন। যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে। এতক্ষণ এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!!!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।

comment url