ত্বীন ফল এর উপকারিতা - ত্বীন ফল কি ডুমুর? জেনে নিন বিস্তারিত
প্রিয় পাঠক, আপনি কি ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নন? এ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই আর্টিকেলে আমরা ত্বীন ফল খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাই এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এছাড়াও এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ত্বীন ফলের দাম সম্পর্কে জানতে পারবেন। তিন খুবই পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু ফল হয় আমাদের এর উপকারিতা ও দাম সম্পর্কে জানা উচিত। আর এজন্য আপনাকে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
ভূমিকা
প্রাচীনকাল থেকে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং মধ্যপ্রাচ্যে জন্ম নেয়া সুস্বাদু ও রসালো ফলটি হলো ত্বীন ফল। এটি হলো এক ধরনের ডুমুর জাতীয় ফল। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। বাংলাদেশেও এর বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে। এই ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই ফলে রয়েছে নানা রকম ঔষধি গুণাগুণ।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতা'লা এই ফলের নামে একটি সূরা অবতীর্ণ করেছেন। কুরআনের মোট ১১৪ টি সূরার মধ্যে ৯৫ তম সূরা হলো ত্বীন। এই সূরায় মহান আল্লাহতা'লা ত্বীন ফলের শপথ করেছেন। এজন্য ত্বীন ফলকে বরকতময় ফল বলা হয়ে থাকে। অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই ফল বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এই ফলের বাইরের রং সবুজ, কালো বা বেগুণী হতে পারে এবং ভেতরের রং লাল বা গোলাপি হয়ে থাকে।
এই ফল সাধারণত আকারে ছোট এবং পাকা অবস্থায় মিষ্টি হয়। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই ফল পাকা অবস্থায় গাছ থেকে পেরে সাথে সাথে খাওয়া যায় আবার শুকিয়ে সংরক্ষণ করে পরে খাওয়া যায়। এই ফলে ফ্যাট ও ক্যালোরি কম থাকার কারণে যে কেউ চাইলেই এই ফল খেতে পারেন।
ত্বীন ফল খাওয়ার নিয়ম
কোন কিছু খাওয়ার পর তা থেকে তখনই সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যায় যখন সেটি সঠিক নিয়মে খাওয়া হয়। নিয়ম মেনে না খেলে তা থেকে তেমন কোন উপকারই পাওয়া যায় না। তবে ত্বীন ফলসহ বিভিন্ন ধরনের ফল খাবার তেমন কোন নিয়ম নেই। এটি আপনি আপনার সুবিধামতো দিনের বেলা যে কোন সময় খেতে পারেন। এতে এর থেকে সম্পূর্ণ উপকারিতায় পাবেন।
সাধারণত আপেল, আঙ্গুর, পেয়ারা, লিচু যেভাবে খান সেভাবে এই ত্বীন ফল খেতে পারেন। এভাবে খেলেও ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়। এছাড়া অনেকেই রয়েছে যারা দুধের ভিতর সারা রাত ত্বীন ফল ভিজিয়ে রেখে সকালবেলা দুধ সহ সেই ফল খেয়ে থাকেন। এতেও দারুন উপকার পাওয়া যায়। কাঁচা অবস্থায় ত্বীন ফল বিভিন্ন ধরনের রান্নায় ব্যবহার করে খাওয়া যায়।
আমরা অনেকে রয়েছি যারা জুস খেতে পছন্দ করি। তারা চাইলে পাকা ত্বীন ফল জুস বানিয়ে খেতে পারেন। এতে করেও আপনি উপকৃত হবেন। বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের ফল মিক্স করে ড্রাই ফুড তৈরি করা হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে এই ত্বীন ফল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পাকা এবং কাঁচা দুই অবস্থায় ত্বীন ফল খাওয়া যায়। আবার অনেকেই দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য এটিকে শুকিয়ে খেয়ে থাকেন।
এছাড়াও ত্বীন ফল চামড়া ও বিচিসহ চিবিয়ে খেতে পারেন। আমরা অনেকেই সালাদ খেতে পছন্দ করি। আপনি চাইলে ত্বীন ফল সালাদ হিসেবেও ভাতের সাথে খেতে পারেন। মোটকথা আপনি এই ফল যেমন করেই খান না কেন এর থেকে আপনি উপকৃত হবেন।
ত্বীন ফল এর উপকারিতা - তিন ফল খাওয়ার উপকারিতা
ত্বীন ফল একদিকে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। নিয়মিত এই ফল খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। এই ফলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ও আন্টি-অক্সিডেন্ট। এই ফলের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। এই পর্বে আমরা এই ফল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। ত্বীন ফলের উপকারিতা গুলো হলো-
শারীরিক দুর্বলতা দূর করেঃ আমরা অনেকেই রয়েছি যারা অনেক দুর্বল। দুর্বল শরীর আমাদের কর্মক্ষম করে রাখে। দুর্বল শরীর নিয়ে আমাদের কোন কাজ করতে অনেক বেশি কষ্ট হয়। সেই সাথে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন মাথা ঘোরা, ঝিমঝিম ভাব ইত্যাদি হয়ে থাকে। নিয়মিত ত্বীন ফল খেলে শরীরের দুর্বলতা দূর হয় এবং শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কেননা এই ফলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ও ভিটামন।
পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়ঃ পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন ডায়রিয়া, আমাশয় ইত্যাদি রোগে ত্বীন ফলের রস দারুন উপকার করে। নিয়মিত এই ফলে রস খেলে ধীরে ধীরে সমস্যা দূর হয়ে যায়। এছাড়াও ত্বীন ফলে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার বিদ্যমান থাকায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ ত্বীন ফলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হার্ট ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হার্টকে সুস্থ রাখে। তাই নিয়মিত ত্বীন ফল খাওয়ার ফলে হার্ট ভালো থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে।
ওজন কমাতেঃ শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি কমাতে ত্বীন ফল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও এই ফলে প্রচুর পরিমান ফাইবার বিদ্যমান থাকায় এটি খেলে দীর্ঘক্ষন পেটে থাকে। ফলে ক্ষুধা কম পায়। এছাড়াও ত্বীন ফলে ক্যালরি অনেক কম থাকায় তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ত্বীন ফল খেলে তা ধীরে ধীরে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
হাড় মজবুত করতেঃ মানুষের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে হাড় ভঙ্গুর ও দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সাথে হাড়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত ত্বীন ফল খেলে হাড়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হবে এবং হাড় শক্ত ও মজবুত হবে। এছাড়াও ত্বীন ফলে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম বিদ্যমান থাকার কারণে এটি হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করবে।
রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীরা রক্তশূন্যতায় ভোগে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। ত্বীন ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান থাকার কারণে এটি রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। তাই কেউ যদি নিয়মিত এই ফল খেয়ে থাকেন তবে ধীরে ধীরে তার রক্তস্বল্পতার সমস্যা দূর হবে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখেঃ আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর ত্বীন ফলে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম বিদ্যমান। যার কারণে নিয়মিত ত্বীন ফল খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ মরণব্যাথি ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এই রোগের তেমন কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। কোন ব্যক্তির যদি প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগ ধরা পড়ে তবে যথাযথ চিকিৎসায় এই রোগ ভালো করা বা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। ক্যান্সার থেকে দূরে থাকতে বা প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি নিয়মিত ত্বীন ফল খেতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল নারীরা তাদের খাদ্য তালিকায় ত্বীন ফল রেখেছে তাদের স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে গিয়েছে। এছাড়াও কোলন ক্যান্সার রোধে এই ফল বেশ কার্যকরী। এতে বিদ্যমান ফাইবার ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতেঃ চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে ত্বীন ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের আন্টি-অক্সিডেন্ট চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেঃ ত্বীন ফল খাওয়ার পাশাপাশি মুখে ব্যবহার করা যায়। এই ফল ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে তা মুখে ব্যবহার করলে কিছুদিনের মধ্যে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পেয়ে মুখ সুন্দর ও লাবণ্যময়ী হয়ে উঠবে। এছাড়া এটি ব্যবহারের ফলে মেছতা, ব্রণ, ত্বকের কালো দাগ দূর হবে। এছাড়াও এটি নিয়মিত ব্যবহারে মুখে বয়সের ছাপ দূর হয়ে তারুণ্যতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
গলা ব্যথা দূর করেঃ আমাদের যাদের গলা ব্যথার সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ত্বীন ফল খেতে পারেন। ত্বীন ফল গলা ব্যথা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও যাদের টনসিলের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে।
যৌন শক্তি বৃদ্ধিতেঃ ত্বীন ফল যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে থাকে। এর জন্য নিয়মিত রাতের বেলা এক গ্লাস দুধে ত্বীন ফল ভিজিয়ে রেখে সকালে দুধ ও ত্বীন ফল খেলে যৌন শক্তি বৃদ্ধি পায়। কেননা এই দুটিতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি খনিজ পদার্থ যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ঋতুস্রাবের সমস্যায়ঃ অনেক সময় মহিলাদের ঋতুস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে ঋতুস্রাব অনিয়মিত হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ত্বীন ফল ভিজানো পানি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্ত স্রাব হলে কাঁচা ত্বীন ফলের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এছাড়া এটি ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত পেটব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণেঃ ত্বীন ফল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। এতে বিদ্যমান ফাইবার শরীরে দ্রুত দ্রবীভূত হয় ফলে এটি আমাদের শরীর থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ত্বীন ফলে বিদ্যমান পেকটিন নামক উপাদান কোলেস্টেরল কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ত্বীন ফলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা হলো এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে বিদ্যমান ডিকোসিন প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে ইনসুলিনের বিকল্প হিসেবে কাজ করে থাকে। এর ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে ত্বীন ফলের নির্যাস রক্তে ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন ই এর মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। যার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
চুলের যত্নেঃ চুল ভেতর থেকে মজবুত ও শক্তিশালী করতে ত্বীন ফলের নির্যাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি শ্যাম্পু তৈরিতে ত্বীন ফলের নির্যাস ব্যবহার করে থাকে। ফলে এসব শ্যাম্পু ব্যবহারে চুল ভেতর থেকে মজবুত ও মশ্চারাইজ হয়ে থাকে।
হজম শক্তি বৃদ্ধিতেঃ ত্বীন ফল হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে থাকে। এতে বিদ্যমান ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি সাধন করে। ফলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ ত্বীন ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান। এর ফলে এটি শরীরকে জীবাণুমুক্ত রাখতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।
তিন ফল দাম কত
ত্বীন ফল আমাদের কোন দেশীয় ফল নয়। এটি বিদেশ থেকে রপ্তানি করতে হয়। এই জন্য আমরা অনেকেই এই ফলের দাম সঠিকভাবে জানি না। বাইরে থেকে আমদানি করার কারণে এই ফলের দাম কিছুটা বেশি। সেক্ষেত্রে এর আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রতি কেজি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। সাধারণত এটি ড্রাই ফুড হিসেবে বাজারে পাওয়া যায়।
তবে এর দাম এর কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে। প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এক কেজি ত্বীন ফলের দাম ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে আমাদের দেশে যেসব ত্বীন ফলের চাষ করা হয় তাদের প্রতি কেজির দাম ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ৫০০ গ্রামের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা হয়ে থাকে।
ত্বীন ফল কি ডুমুর
আমরা অনেকেই ত্বীন ফলকে ডুমুর ফল বলে থাকি। আসলে ত্বীন ফল কি ডুমুর? চলুন এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাক। ত্বীন ফল হলো মধ্যপ্রাচ্য ও ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে উৎপাদিত একটি ফল। যা আমাদের দেশীয় ফল নয়। অন্যদিকে ডুমুর হলো আমাদের দেশীয় ফল। ত্বীন ফলের আকার ডুমুরের তুলনায় বড় হয়ে থাকে।
আবার ত্বীন ফল সুস্বাদু, মিষ্টি ও রসালো হয়ে থাকে। অন্যদিকে ডুমুর সুস্বাদু, মিষ্টি ও রসালো হয় না এবং এটি খাওয়ার অনুপযুক্ত। ত্বীন ফলের বৈজ্ঞানিক নাম ficus carica L. এবং ডুমুর ফলের বৈজ্ঞানিক নাম Ficus hispida. ত্বীন ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হলেও ডুমুর অবহেলায় অযত্নে যেখানে সেখানে বড় হয়।
এজন্য বলা যায় কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা যে ত্বীন ফলের শপথ করেছেন সেই ত্বীন ফল ও ডুমুর এক নয়। যদিও তারা উভয়ে ফাইকাস দলভুক্ত। এই দলের প্রায় ৮০০ প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে যার মধ্যে ত্বীন ফলের স্থান সবার উপরে। ত্বীন ফল দেখতে কিছুটা ডুমুরের মতো হওয়ায় আমাদের দেশের অনেকেই এটিকে ডুমুর ভেবে ভুল করে থাকে। তবে পুষ্টিগুনে ভরপুর সুস্বাদু এই ফল ডুমুর নয়।
তিন ফল গাছ
ত্বীন ফলের গাছ সাধারণত ৫ থেকে ১০ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। এটি ২৫ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এই গাছ সাধারণত ২৫ বছর পর্যন্ত ভালো ফলন দেয়। নিচে ত্বীন ফল গাছের কয়েকটি ছবি দেয়া হলো।
তিন ফল ছবি
নিচে ত্বীন ফলের কয়েকটি ছবি দেয়া হলো
ত্বীন ফল গাছ দাম
জায়গা ও ফলের গুণগত মানের উপর ভিত্তি করে ত্বীন ফলের গাছের দাম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন-
- মিশরীয় ত্বীন গাছের দাম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা
- মালেশিয়ান ত্বীন গাছের দাম ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা
- দেশীয় যেগুলো গাছ বিক্রি হয় তাদের দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা
তবে বর্তমানে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও নার্সারিতে ত্বীন ফলের গাছ পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলোর দাম অঞ্চল ভেদে আলাদা আলাদা হতে পারে।
লেখকের মন্তব্য
ত্বীন ফল হলো একটি বরকতময় ফল। আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং থেকে বরকতময় ফল বলে উল্লেখ করেছেন। এই ফলের মধ্যে আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত রয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ফল খেতে পছন্দ করতেন। এই ফলের পুষ্টিগণ ও স্বাদ অন্যান্য ফলের থেকে আলাদা। তাই ত্বীন ফলের উপকারিতার কথা চিন্তা করে আমাদের খাদ্য তালিকায় ত্বীন ফল রাখা উচিত।
প্রিয় পাঠক, আমার এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই আপনি এটি আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন। যাতে করে তারাও উপকৃত হতে পারে। এতক্ষণ এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!!!
আপনি আপনার মূল্যবান মন্তব্যটি এখানে লিখুন। প্রতিটি মন্তব্য গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়।
comment url